ইউক্রেন যুদ্ধের ভবিষ্যৎ নির্ধারণে আগামী শুক্রবার (১৫ আগস্ট) যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন মুখোমুখি বৈঠকে বসবেন। আলাস্কায় অনুষ্ঠিতব্য এ বৈঠকের ঘোষণা শুক্রবার (৮ আগস্ট) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেন ট্রাম্প। পরে ক্রেমলিনও বিষয়টি নিশ্চিত করে জানায়, রাশিয়ার সান্নিধ্যের কারণে আলাস্কা ‘যৌক্তিক স্থান’।
ক্রেমলিন আরও জানিয়েছে, ট্রাম্পকে ভবিষ্যতে রাশিয়ায় দ্বিতীয় শীর্ষ বৈঠকের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তবে ইউক্রেনের পক্ষ থেকে এ নিয়ে এখনো কোনো প্রতিক্রিয়া আসেনি।
বৈঠকের ঘোষণার দিনই ট্রাম্প ইঙ্গিত দেন, ইউক্রেন যুদ্ধের অবসানে কিছু অঞ্চল রাশিয়ার হাতে ছেড়ে দেওয়া হতে পারে। হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “তিন বছরের বেশি সময় ধরে এসব অঞ্চলে লড়াই চলছে। অনেক রুশ ও ইউক্রেনীয় প্রাণ হারিয়েছে। কিছু জায়গা ফেরত আসবে, কিছু জায়গা অদলবদল হবে দুই পক্ষেরই মঙ্গলের জন্য।”
মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিবিএস নিউজ জানিয়েছে, সম্ভাব্য প্রস্তাবে রাশিয়া দনবাসের পুরো অঞ্চল ও ক্রিমিয়া ধরে রাখবে, আর খেরসন ও জাপোরিঝঝিয়া অঞ্চল ছেড়ে দেবে। ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের তথ্য অনুযায়ী, পুতিন সম্প্রতি মস্কোয় ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফকে একই ধরনের প্রস্তাব দিয়েছেন।
তবে ইউক্রেন ও ইউরোপীয় দেশগুলোর অবস্থান এ বিষয়ে স্পষ্ট নয়। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন, সীমান্ত ছাড়ের কোনো শর্ত তিনি মেনে নেবেন না।
মার্কিন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বৈঠকের পরিকল্পনা এখনো চূড়ান্ত নয় এবং কোনো পর্যায়ে জেলেনস্কিও এতে যুক্ত হতে পারেন। বর্তমানে রাশিয়া ইউক্রেনের প্রায় ২০ শতাংশ ভূখণ্ড দখলে রেখেছে। তিন দফা সরাসরি আলোচনা হলেও মস্কো ও কিয়েভ শান্তিচুক্তিতে পৌঁছাতে পারেনি।
রাশিয়ার শর্তগুলোর মধ্যে রয়েছে—ইউক্রেনকে নিরপেক্ষ রাষ্ট্রে পরিণত করা, সামরিক শক্তি কমানো, ন্যাটোতে যোগদানের আকাঙ্ক্ষা ত্যাগ, পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার এবং দক্ষিণ-পূর্বের চারটি অঞ্চল থেকে ইউক্রেনীয় সেনা প্রত্যাহার।
ট্রাম্প দাবি করেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সামনে এখনো ত্রিপক্ষীয় শান্তি চুক্তির সুযোগ রয়েছে। তার ভাষায়, “ইউরোপীয় নেতারা শান্তি চান, পুতিন চান, জেলেনস্কিও চান। সই করার জন্য জেলেনস্কির যা দরকার, তা তিনি পাচ্ছেন এবং প্রস্তুতি নিচ্ছেন।”
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়ার পূর্ণমাত্রার আগ্রাসনের পর এটিই হবে দুই নেতার প্রথম মুখোমুখি সাক্ষাৎ। সর্বশেষ কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন ২০২১ সালে, সুইজারল্যান্ডের জেনেভায়—তখন প্রেসিডেন্ট ছিলেন জো বাইডেন।
বাংলা৭১নিউজ/একেএম