জাপানের প্রধান খাদ্যশস্য চালের দাম এখন আকাশছোঁয়া। গতবছরের একই সময়ের তুলনায় এই পণ্যটির দাম প্রায় দ্বিগুণ বেড়েছে। যা নিয়ে ক্ষুব্ধ দেশটির সাধারণ মানুষ। আর এই অবস্থায় চাল নিয়ে এক মন্তব্য করে ব্যাপক ক্ষোভের মুখে পড়েছেন দেশটির কৃষিমন্ত্রী তাকু এটো। সোশ্যাল মিডিয়ায় পদত্যাগের দাবি উঠেছে তার। পরে বাধ্য হয়ে ক্ষমা চাইতে হয়েছে তাকে।
রোববার একটি রাজনৈতিক তহবিল সংগ্রহের অনুষ্ঠানে গিয়ে চালের দাম নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে কৃষিমন্ত্রী মন্তব্য করেন, ‘বিক্রি করার জন্য পর্যাপ্ত চাল রয়েছে। তাছাড়া আমাকে কখনো সমর্থকদের উপহারের জন্য চাল কিনতে হয়নি।’ তার ওই মন্তব্যের পর থেকেই সামাজিক যোগাযোগামাধ্যমে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে।
এক্সে একজন লিখেছেন, ‘আপনার কাজ শেষ। তাড়াতাড়ি পদত্যাগ করুন।’ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কৃষিমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবি জোরাল হলে পরে চাপের মুখে সোমবার নিজের মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চান মন্ত্রী।
মন্ত্রী বলেন, তার মন্তব্যটি করা ঠিক হয়নি। জনতাকে খুশি করার জন্য অতিরঞ্জিত করা হয়েছে মন্তব্যটিকে। তবে পদত্যাগ করতে চান কিনা জানতে চাইলে সে প্রশ্ন এড়িয়ে যান তিনি।
চাল নিয়ে ওই মন্তব্যের পর নিজ পরিবারেও তিরস্কারের শিকার হতে হয়েছে জানিয়ে এটো বলেন, ‘এর জন্য ফোনে আমার স্ত্রী আমাকে তিরস্কার করেছেন। পরিবারে আমরা দুজনেই, তাই সাধারণত আমাদের যথেষ্ট চাল থাকে কিন্তু সে আমাকে বলেছে, যখন আমাদের চাল ফুরিয়ে যায়, তখন সে আসলে বাইরে গিয়ে চাল কিনে নেয়।’
এটোর মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া থেকে বোঝা যায়, আসন্ন জুলাই মাসে উচ্চকক্ষের গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনের আগে ভোটারদের কাছে চাল কতটা আলোচিত বিষয় হয়ে উঠেছে। তাছাড়া প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবার লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির জন্যও বিষয়টি অশুভ হতে চলেছে। যার প্রমাণ মিলে কিয়োডো নিউজের একটি মতামত জরিপে। যেখানে দেখা গেছে ইশিবার প্রতি সমর্থন দেখিয়েছেন রেকর্ড সর্বনিম্ন ২৭.৪%। যেখানে ১০ জনের মধ্যে প্রায় নয়জন ভোটার চালের দাম বৃদ্ধির বিষয়ে সরকারের প্রতিক্রিয়ায় অসন্তুষ্ট বলে মত দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, গত মার্চ মাস থেকে চালের দাম কমানোর চেষ্টা করলেও কার্যত ব্যর্থ হয়েছে দেশটির সরকার। চরম তাপপ্রবাহের ফলে ফসলের ক্ষতি ও পর্যটন চাহিদা বৃদ্ধির কারণে চালের ঘাটতি দেখা দিয়েছে দেশটির বাজারে। সরকারের জরুরি মজুদ থেকে চাল বাজারে ছেড়েও দামের লাগাম টানা যায়নি।
বাংলা৭১নিউজ/এসএস