
জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেছেন, নভেম্বরেই গণভোট হতে হবে। বিএনপি শুরু থেকে গণভোটে দ্বিমত পোষণ করেছিল। তবে শেষ পর্যন্ত তারা একমত হয়েছে। এ জন্য জামায়াতের পক্ষ থেকে বিএনপিকে ধন্যবাদ। নির্বাচনের আগেই জনগণের থেকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসতে হবে।
বুধবার (১৫ অক্টোবর) জুলাই সনদের বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের জরুরি বৈঠক শেষে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।
নির্বাচনের দিন গণভোটের বিরোধিতা করে আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, নির্বাচনের দিনে গণভোট হলে, আবার কি উচ্চকক্ষের জন্য ভোট হবে? এটা সন্তান জন্মের আগেই কাপড়চোপড় কেনার মতো অবস্থা। উচ্চকক্ষের জন্য আগে ভোট কীভাবে হবে? এতে সাংবিধানিক সংকট হতে পারে।
গণভোট নিয়ে শঙ্কা জানিয়ে জামায়াত নেতা তাহের বলেন, গণভোট একইদিন হলে বিএনপি মরিয়া হয়ে চাইবে ভোট বাড়াতে। নির্বাচনের দিন প্রার্থী এবং ভোটারদের মাথা ঠিক থাকে না। সে সময় গণভোটে ভোট কম পড়বে।
জুলাই সনদে স্বাক্ষর বিষয়ে জামায়াতের এই নেতা বলেন, একদিন বাকি আছে, ওইদিনই দেখা যাবে স্বাক্ষর করবো কি না। তবে স্বাক্ষর নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখি না। স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে দাওয়াত পেয়েছি। আশাকরি আমরা উপস্থিত হবো।
এর আগে কমিশনের সদস্যরা রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
গত মঙ্গলবার বহুল আকাঙ্ক্ষিত ‘জুলাই জাতীয় সনদ, ২০২৫’ এর চূড়ান্ত অনুলিপি রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে পাঠিয়েছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। তবে সনদে সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে কোনো সুপারিশ নেই। পরে অন্তর্বর্তী সরকার ও দলগুলোর কাছে এ সংক্রান্ত সুপারিশ দেবে কমিশন।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নিয়ে রাষ্ট্রের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কারের উদ্যোগ নেয়। প্রথম ধাপে গঠন করা ৬টি সংস্কার কমিশনের (সংবিধান, নির্বাচনব্যবস্থা, জনপ্রশাসন, দুর্নীতি দমন কমিশন, পুলিশ ও বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন) সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে ঐকমত্য কমিশন।
প্রথম পর্বে ৩৩টি ও দ্বিতীয় পর্বে ৩০টি দলের সঙ্গে আলোচনা করে ঐকমত্য কমিশন। গত ফেব্রুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত সময়ে দুই পর্বের আলোচনায় ৮৪টি সংস্কার প্রস্তাবে ঐকমত্য ও সিদ্ধান্ত হয়। এগুলো নিয়ে তৈরি করা হচ্ছে জুলাই জাতীয় সনদ।
জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় আগামী শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠান হবে। প্রায় তিন হাজার অতিথিকে এই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হবে। সনদে সই করার জন্য ৩০টি রাজনৈতিক দল ও জোটকে আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে।
জুলাই জাতীয় সনদের তিনটি ভাগ রয়েছে। প্রথম ভাগে সনদের পটভূমি, দ্বিতীয় ভাগে ৮৪টি সংস্কার প্রস্তাব এবং তৃতীয় ভাগে সনদ বাস্তবায়নের সাত দফা অঙ্গীকারনামা রয়েছে।
বাংলা৭১নিউজ/জেএস