রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে সম্ভাব্য শান্তিচুক্তি হলে দুই দেশের মাঝখানে একটি বাফার জোন গড়ে তোলার প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা চলছে। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সম্প্রচারমাধ্যম এনবিসি নিউজ জানিয়েছে, এই বাফার জোন পর্যবেক্ষণে নেতৃত্ব দিতে পারে যুক্তরাষ্ট্র, আর নিরাপত্তা নিশ্চিতে সৌদি আরব বা বাংলাদেশের মতো ন্যাটো-বহির্ভূত দেশগুলোর সেনা সদস্য মোতায়েন করা হতে পারে।
প্রস্তাব অনুযায়ী, বাফার জোনটি হবে একটি বড় নিরস্ত্রীকৃত এলাকা, যার সুনির্দিষ্ট সীমানা এখনো ঠিক হয়নি। জোনের ভেতরে যুক্তরাষ্ট্র উন্নত প্রযুক্তি—ড্রোন, স্যাটেলাইট ও গোয়েন্দা সক্ষমতা ব্যবহার করে নজরদারির দায়িত্ব পালন করবে। তবে সরাসরি মার্কিন সেনা ইউক্রেনে পাঠানো হবে না। নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবেন ন্যাটো-বহির্ভূত দেশগুলোর সেনারা।
এনবিসি নিউজ জানিয়েছে, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ন্যাটোর কোনো রূপ অংশগ্রহণকে ‘লাল রেখা’ (রেড লাইন) হিসেবে দেখছেন। এজন্যই পরিকল্পনায় ন্যাটোর পরিবর্তে বাংলাদেশ বা সৌদি আরবের মতো দেশকে অন্তর্ভুক্ত করার চিন্তাভাবনা চলছে। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নির্ভর করবে পুতিন, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এবং সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর নেতাদের সম্মতির ওপর।
গত ১৫ আগস্ট আলাস্কায় ডোনাল্ড ট্রাম্প ও পুতিনের বৈঠকের পর এই পরিকল্পনা নতুন করে গতি পায়। যদিও সরাসরি আলোচনায় প্রত্যাশিত অগ্রগতি হয়নি। তবুও যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্সসহ কয়েকটি দেশ ‘কোয়ালিশন অব দ্য উইলিং’ নামে আলোচনায় সক্রিয় রয়েছে।
এদিকে, শুক্রবার পুতিন বিদেশি সেনা মোতায়েনের প্রস্তাব সরাসরি প্রত্যাখ্যান করে বলেছেন, শান্তিচুক্তি হলে রাশিয়া তা পূর্ণভাবে মানবে। তাই অন্য দেশের সেনার উপস্থিতির কোনো যৌক্তিকতা নেই।
তিনি বলেন, ইউক্রেনে সম্ভাব্য সামরিক বাহিনী মোতায়েন- এটি দেশটিকে ন্যাটোতে টানার একটি প্রাথমিক কারণ।… এবং যদি এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যা শান্তির দিকে, দীর্ঘমেয়াদি শান্তির দিকে পরিচালিত করবে, তাহলে আমি ইউক্রেনের ভূখণ্ডে তাদের উপস্থিতির কোনো অর্থ দেখতে পাচ্ছি না।
এতটুকুই। কারণ যদি এই চুক্তিগুলো সম্পন্ন হয়, তাহলে কেউ সন্দেহ করবেন না যে রাশিয়া এগুলো সম্পূর্ণরূপে বাস্তবায়ন করবে। আমরা সেই নিরাপত্তা গ্যারান্টিগুলোকে সম্মান করবো, যা অবশ্যই রাশিয়া এবং ইউক্রেন উভয়ের জন্যই তৈরি করা উচিত। এবং আমি আবারও বলছি, অবশ্যই রাশিয়া চুক্তিটি পূরণ করবে।
এ প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে কৃষ্ণসাগরে বাণিজ্যিক প্রবাহ সচল রাখতে তুরস্ক দায়িত্ব পালন করবে বলে আলোচনায় এসেছে। পাশাপাশি, যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে প্রায় ১০০ বিলিয়ন ডলারের প্রতিরক্ষা সহযোগিতা দেওয়ার বিষয়েও আলোচনা চালাচ্ছে।
বর্তমানে এসব পরিকল্পনা একেবারেই প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। নিয়ম-কানুন, নিরাপত্তা নিশ্চয়তা ও সেনা মোতায়েনের ধরন নিয়ে এখনো চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ