বুধবার, ২০ অগাস্ট ২০২৫, ০২:৪২ পূর্বাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ
নির্বাচিত হলে পাঁচ বছরে ২৫ কোটি গাছ লাগাবে বিএনপি: তারেক রহমান মাইলস্টোনের তিন শিক্ষক সাহসিকতার জন্য চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশি অংশে জরিপে নামছে নরওয়ের গবেষণা জাহাজ ট্রাম্পের সঙ্গে জেলেনস্কি ও ইউরোপীয় নেতাদের বৈঠকে যা হলো জাতীয় নির্বাচন পেছানোর সুযোগ নেই : আইন উপদেষ্টা বৃহস্পতিবার ঢাকা আসছেন পাকিস্তানের বাণিজ্যমন্ত্রী ইসরায়েলি হামলা ও ক্ষুধা-অনাহারে গাজায় নিহত ছাড়াল ৬২ হাজার ঢাকার বাইরে এখনো মব জাস্টিস চলছে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সব ক্ষেত্রে চিকিৎসকদের দোষারোপ করে লাভ নেই: স্বাস্থ্য উপদেষ্টা মৎস্য খাতের অবদানে প্রকৃতি ও পানির প্রতি সদয় হতে হবে : প্রধান উপদেষ্টা

ডাকসুতে ফিরছে নারী নেতৃত্ব : ভিপি-জিএস-এজিএস পদে পাঁচ সাহসী মুখ

বাংলা৭১নিউজ ঢাকা:
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ১৯ আগস্ট, ২০২৫
  • ১৪ বার পড়া হয়েছে

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে শিক্ষার্থী প্রতিনিধি হিসেবে নারী নেতৃত্বের নজির হাতেগোনা। ডাকসু নির্বাচনের ইতিহাসে মাত্র দুজন নারী ভিপি (সহ-সভাপতি) পদে নির্বাচিত হয়েছিলেন। প্রথম নারী ভিপি হিসেবে ১৯৬০-৬১ শিক্ষাবর্ষে নির্বাচিত হন বেগম জাহানারা আক্তার। এরপর ১৯৬৬-৬৭ শিক্ষাবর্ষে ছাত্র ইউনিয়ন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে দ্বিতীয় নারী হিসেবে ভিপি নির্বাচিত হন মাহফুজা খানম। এরপর ডাকসুতে আর কোনো নারী ভিপি নির্বাচিত হননি।

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর ছয় বছরের দীর্ঘ বিরতি ভেঙে আবারও অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ডাকসু নির্বাচন। এবারের নির্বাচনে শীর্ষ তিন পদ সহ-সভাপতি (ভিপি), সাধারণ সম্পাদক (জিএস) ও সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) হিসেবে ছেলে শিক্ষার্থীদের বিপরীতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন পাঁচ নারী শিক্ষার্থী।

নারী নেতৃত্বের গৌরব ফিরিয়ে আনতে ভিপি পদে স্বতন্ত্র প্যানেল থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন জুলাই অভ্যুত্থানের পরিচিত মুখ উমামা ফাতিমা। ক্যাম্পাস ও জাতীয় নানা ইস্যুতে সরব এই শিক্ষার্থী সবচেয়ে বেশি পরিচিতি পান জুলাই অভ্যুত্থানে তার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কারণে। ওই সময় দলের পরিচয়ের বাইরে এসে যে কয়েকজন নারী শিক্ষার্থী পুরুষ সহপাঠীদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে আন্দোলনে অংশ নেন এবং অন্য নারী শিক্ষার্থীদের অনুপ্রাণিত করেন, তাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন তিনি।

কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় উমামা ফাতিমা সমন্বয়কের দায়িত্বে ছিলেন। অভ্যুত্থানের পরপরই তিনি ছাত্র ফেডারেশন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সদস্য সচিব পদ থেকে পদত্যাগ করেন। তখন গুঞ্জন উঠেছিল, তিনি হয়তো নতুন কোনো রাজনৈতিক দলে যোগ দেবেন।

তবে, সব ধারণা ভেঙে দিয়ে তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সব দায়িত্ব থেকেও সরে দাঁড়ান। এমন সময়ে যখন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নাম ব্যবহার করে কেউ কেউ বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়াচ্ছিল, তখন উমামার এই সিদ্ধান্ত সর্বমহলে প্রশংসিত হয়।

অভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়েও নানা ইস্যুতে তিনি সংবাদ শিরোনামে আসেন। সর্বশেষ ডাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর তিনি সর্বপ্রথম স্বতন্ত্র প্যানেল গঠনের ঘোষণা দেন। একইসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮টি হলে ছাত্রদলের কমিটি গঠনের প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের নিয়ে আন্দোলন গড়ে তোলেন।

যার মধ্য দিয়ে তিনি আবারও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসেন। তার প্যানেলে জিএস পদে লড়বেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সাবেক সভাপতি আল সাদী ভূইয়া এবং এজিএস পদে লড়বেন সমিতির বর্তমান সভাপতি মহিউদ্দিন মুজাহিদ মাহি।

উমামার মতোই এবারের নির্বাচনে ভিপি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আরেক নারী শিক্ষার্থী তাসনিম আফরোজ ইমি। তিনি বামপন্থী সংগঠনগুলোর সমন্বয়ে গঠিত জোট ‘প্রতিরোধ পর্ষদ’ প্যানেল থেকে নির্বাচন করবেন। এই প্যানেলে তার সঙ্গে জিএস পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন ছাত্র ইউনিয়নের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মেঘমল্লার বসু।

ইমি সর্বশেষ ডাকসু নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে শামসুন্নাহার হল সংসদের ভিপি নির্বাচিত হয়েছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের এই শিক্ষার্থী জাতীয় নাগরিক কমিটির সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। যদিও পরবর্তীতে সেই সংগঠন থেকে পদত্যাগ করেন।

জিএস পদেও আছেন এক নারী

ভিপি পদে দুজন নারী প্রার্থীর নাম শোনা গেলেও এবারের ডাকসু নির্বাচনে জিএস পদে মাত্র একজন নারী প্রার্থী রয়েছেন। তিনি হলেন সাবিনা ইয়াসমিন। বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের প্যানেল থেকে জিএস পদে একমাত্র নারী প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে লড়বেন তিনি।

এজিএস পদে দুই নারী প্রার্থী

ডাকসুর শীর্ষ তিন পদের মধ্যে সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদেও এবার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন দুজন নারী শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে স্বতন্ত্র প্যানেল থেকে লড়বেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষার্থী ফাতেহা শারমিন এ্যানি। মিডিয়ায় তিনি তেমন পরিচিত নন। তবে সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও নারীর অধিকার নিয়ে কাজের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট মহলে তার পরিচিতি রয়েছে।

শিক্ষাজীবনে বিভিন্ন সংগঠন ও প্ল্যাটফর্মে সক্রিয় এ্যানি লক্ষ্মীপুর জেলা ছাত্র-ছাত্রী কল্যাণ সমিতির প্রথম নির্বাচিত সভাপতি ছিলেন। এছাড়াও তিনি বেশকিছু সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন।

যেমন- বহ্নিশিখা নারী ও শিশু অধিকারভিত্তিক সংগঠনের কেন্দ্রীয় সংগঠক, রোকেয়া হল সাহিত্য সংসদের এইচআর, ক্যাম্পাসভিত্তিক সামাজিক সংগঠন ‘সজ্জা’-এর উপপ্রধান সমন্বয়ক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ইসলামিক স্টাডিজ ডিবেটিং ক্লাবের সাংগঠনিক সম্পাদক।

তিনি ‘গ্রিন ভয়েস’-এর কেন্দ্রীয় সংগঠক হিসেবেও কাজ করেছেন। করোনার সময়ে বিভিন্ন ব্লাড ব্যাংকের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন। উপস্থাপনা ও বাকপটুতার কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষ্ঠান, বিতর্ক ও আবৃত্তিতে তিনি একজন সুপরিচিত মুখ।

একই পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের প্যানেলের প্রার্থী আশরেফা খাতুন। ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের এই শিক্ষার্থী বর্তমানে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের কেন্দ্রীয় কমিটির মুখপাত্র হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

আশরেফার প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের শুরু থেকেই পরিচিত। তার রাজনৈতিক যাত্রা শুরু হয় নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের সময় শাহবাগের উত্তপ্ত রাজপথে স্লোগান দেওয়ার মাধ্যমে। পরবর্তীতে সাত কলেজ বাতিল আন্দোলনেও তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।

তিনি ছাত্র অধিকার পরিষদের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ করতে গিয়ে বেশ কয়েকবার হামলার শিকার হয়েছেন আশরেফা খাতুন। সর্বশেষ জুলাই অভ্যুত্থানের প্রথম দিন থেকে তিনি সামনের সারিতে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন।

বাংলা৭১নিউজ/এবি

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2018-2025
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com