মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫, ০৪:৪২ পূর্বাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ
যুক্তরাষ্ট্র যৌক্তিক শুল্ক নির্ধারণ করবে: বাণিজ্য উপদেষ্টা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও জোরদারে কাজ করতে চান সৌদির নতুন রাষ্ট্রদূত বর্তমান সরকারের আমলেই জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিচার হবে: আসিফ নজরুল দূর্নীতিতে ডুবতে বসেছে পাউবো, কোটি টাকার তেল আত্মসাত জুলাই গণঅভ্যুত্থানের স্মরণে রাজধানীতে রিকশা র‌্যালি বিএনপি এখন চাঁদাবাজদের দলে পরিণত হয়েছে: নাহিদ ইসলাম বাহক নয়, মাদকের সঙ্গে জড়িত গডফাদারদের ধরতে হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ৬৪ জেলায় শুরু হচ্ছে ‘জুলাই শহিদ স্মৃতিস্তম্ভের’ কাজ: সংস্কৃতি উপদেষ্টা সাংবিধানিকভাবে সমতার মর্যাদায় নারীকে অধিষ্ঠিত করা দরকার বিএনপি নেতৃত্বের চরিত্রহননের চেষ্টা হচ্ছে : ফখরুল

‘তুমি কে আমি কে রাজাকার রাজাকার’ স্লোগানে ফের উত্তাল ঢাবি

ঢাবি প্রতিনিধি:
  • আপডেট সময় সোমবার, ১৪ জুলাই, ২০২৫
  • ২২ বার পড়া হয়েছে

তুমি কে আমি কে রাজাকার রাজাকার’ স্লোগানে ফের উত্তাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। গত বছরের এই দিনে কোটা সংস্কার আন্দোলনে অংশ নেওয়া সাধারণ শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্য করে রাজাকার মন্তব্য করে বসেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেদিন বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে তার সে মন্তব্যের পর রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল থেকে শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে রাজপথে নেমে আসেন। তাদের মুখে ছিল এই স্লোগান।

দিনটিকে স্মরণ করে আজও রাতের দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতশত শিক্ষার্থী রাজপথে নেমে সেই স্লোগান দিয়েছেন।

২০২৪ সালের ১৪ জুলাই হাসিনার সংবাদ সম্মেলনে একজন টিভি সংবাদিক প্রশ্ন না করে তার মতামত তুলে ধরে বলেন, ‘আমাদের তরুণ প্রজন্মকে ভুল বুঝিয়ে যুক্তিযুদ্ধের মুখোমুখি করা হয়েছে। এটি খুবই দুর্ভাগ্যজনক। আরেকটা খুবই ভুল ধারা তৈরি করা হয়েছে যে, কোটা ও মেধা। মনে হতে পারে যারা কোটায় চাকরি করেন, তাদের কোনো মেধা নেই। কিন্তু আবেদন করার ক্ষেত্রে কোটা লাগে না, প্রিলিমিনারিতে কোটা লাগে না। লিখিত পরীক্ষায় কোটা লাগে না।

একদম শেষ মুহূর্তে গিয়ে কোটা লাগে। তখন আসলে মেধায় সবাই সমান। তখন আমার সামনে যদি দুইটি অপশন থাকে, দুজনই সমান মেধাবী। একজন যুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও আরেকজন রাজাকারের সন্তান। আমি অবশ্যই যুক্তিযুদ্ধের সন্তানকে চাকরি দেব।’ ওই সংবাদিক এ কথা শেষ না করতেই প্রধানমন্ত্রী জোরের সঙ্গে বলেন, ‘অবশ্যই’। এরপর প্রধানমন্ত্রী থেমে যান। তিনি ওই সংবাদিককে আরও কথা বলার সুযোগ করে দেন। তখন ওই সাংবাদিক আরও বলেন, ‘তবে মেধা ও কোটা দিয়ে খুব সহজে মানুষকে বিভ্রান্ত করা যাচ্ছে।

সব মেধাবীর চাকরিতে না নিয়ে কোটাতে নিচ্ছে। আপনাকে (প্রধানমন্ত্রী) খুবই ধন্যবাদ যে, গত ১০-১২ দিন ধরে আন্দোলন হচ্ছে, আপনারা অসীম ধৈর্যের সঙ্গে আন্দোলন মোকাবিলা করছেন। যারা আন্দোলন করছেন, তারা সংক্ষুব্ধ, চাকরি না পেয়ে বঞ্চিত। তাদের ক্ষোভের সঙ্গে আমরা খুবই একমত।

তাদের পেছনে কেউ ইন্ধন জুগিয়ে, ভুল বুঝিয়ে মুক্তিযুদ্ধের মুখোমুখি করছে কি না?’ এরপর তিনি আরও কিছু কথা বলেন। তার কথা শেষ হলে প্রধানমন্ত্রী জবাবে কোটা নিয়ে কিছু কথা বলেন। একপর্যায়ে তিনি বলে ওঠেন, ‘যুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি এত ক্ষোভ কেন? তার মানে মুক্তিযোদ্ধাদের নাতি-পুতিরা মেধাবী না। যত রাজাকারের বাচ্চারা, নাতি-পুতিরা হলো মেধাবী।’

বিকালে সংবাদ সম্মেলনে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী এমন মন্তব্য করেন। এরপর থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সাংবাদিকের প্রশ্ন ও প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্য ভাইরাল হয়। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীসহ সচেতন মহল প্রধানমন্ত্রীর ওই মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেন। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোয় নানা ধরনের কার্টুনও প্রকাশ পেতে থাকে। সমালোচনা চলতে থাকে সর্বত্র।

এমনকি সরকারি মহলেও এ বক্তব্য সমালোচিত হয়। সন্ধ্যার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে হলে কোটাবিরোধী আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা একত্রিত হতে থাকেন। বিষয়টি আঁচ করতে পেরে ছাত্রলীগও হলে হলে অবস্থান নিয়ে কোটাবিরোধীদের ধাওয়া করে। একপর্যায়ে কোটাবিরোধীরা হল এলাকা ছেড়ে সংগঠিত হয়ে টিএসসিতে সমবেত হয়।

শুরু হয় স্লোগান, ‘তুমি কে আমি কে রাজাকার-রাজাকার, কে বলেছে কে বলেছে, স্বৈরাচার-স্বৈরাচার’। ‘চাইতে এলাম অধিকার, হয়ে গেলাম রাজাকার’ প্রভৃতি স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে পুরো ক্যাম্পাস। বিভিন্ন হল ও আশপাশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরাও আন্দোলনে যোগ দেন। ছাত্রীরাও হল গেটের তালা ভেঙে আন্দোলনে যোগ দেন। সঙ্গে সঙ্গে আন্দোলন সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে। সেদিন থেকে কোটাবিরোধী আন্দোলন জ্বলে ওঠে।

যে আন্দোলন আদালতের মাধ্যমে বা সরকারের নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে নিষ্পত্তি হওয়ার প্রক্রিয়ায় ছিল, আন্দোলনের তীব্রতাও কমে আসছিল; কিন্তু তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর ওই মন্তব্যে আন্দোলন আবার দানা বেঁধে ওঠে। ছড়িয়ে পড়ে সারা দেশে। এটিই ছিল কোটাবিরোধী আন্দোলনের টার্নিং পয়েন্ট। এরপর থেকে সরকার ও আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগও দমন-পীড়নে নামে। ছাত্ররাও প্রতিরোধ গড়ে তোলেন, যা ধীরে ধীরে তীব্র হতে থাকে।

বাংলা৭১নিউজ/এসএম

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2018-2025
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com