শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫, ০৫:২৯ পূর্বাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ
ভারতে বাংলাভাষীদের ‘বাংলাদেশি’ বলা বন্ধের হুঁশিয়ারি মমতার বিএনপির বিবেচনায় সব হতে দেওয়া যাবে না: হাসনাত আগের দিন আর নাই, জনাব- এই প্রজন্ম ছাড় দিতে পারে ছেড়ে দেবে না শুল্ক আলোচনায় বেশ কিছু বিষয়ে একমত বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র গাজায় ইসরায়েলি হামলায় আরও ৮২ ফিলিস্তিনি নিহত বেশ কিছু বিষয়ে দুই দেশ একমত, কিছু বিষয় অমীমাংসিত চীন সবসময় বাংলাদেশের বিশ্বস্ত বন্ধু হতে চায় : ওয়াং ই ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের প্রস্তুতির নির্দেশনা প্রশংসার দাবিদার জুলাই সনদের আগে কোনো নির্বাচন ছাত্র-জনতা মেনে নেবে না ফেনীতে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ প্রকল্প চূড়ান্তে প্রয়োজনীয়তা জানাল মন্ত্রণালয়

পটুয়াখালীতে ২১৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত, জলাবদ্ধতায় নাকাল জনজীবন

পটুয়াখালী প্রতিনিধি:
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ৮ জুলাই, ২০২৫
  • ২৩ বার পড়া হয়েছে

পটুয়াখালীতে গত ২৪ ঘণ্টায় রেকর্ড পরিমাণ ২১৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে, যা চলতি বছরের সর্বোচ্চ। টানা বর্ষণে পটুয়াখালী পৌর শহরসহ জেলার বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। দুর্ভোগে পড়েছেন হাজারো মানুষ।

মঙ্গলবার (৮ জুলাই) দুপুরে পটুয়াখালী আবহাওয়া কার্যালয়ের উচ্চ পর্যবেক্ষক মাহবুবা সূখী এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার অঞ্চলের উপর দিয়ে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫-৬০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার সঙ্গে বৃষ্টি ও বজ্রবৃষ্টি হতে পারে। এজন্য মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরগুলোকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

পটুয়াখালী আবহাওয়া কার্যালয়ের উচ্চ পর্যবেক্ষক মাহবুবা সূখী বলেন, রোববার (৬ জুলাই) বিকেল থেকে বৃষ্টিপাত শুরু হলেও ৭ জুলাই রাত থেকে শুরু হয় প্রবল বৃষ্টি, যা টানা ১৬ ঘণ্টা অব্যাহত থাকে। আজ জেলায় সর্বোনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২৫.১, তবে বৃষ্টির কারণে তাপমাত্রা আরও কমতে পারে। আগামী পাঁচ দিন এই বৃষ্টিপাতের ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকতে পারে।

মঙ্গলবার সকালে পৌর এলাকা ঘুরে দেখা যায়, শহরের বিভিন্ন সড়ক ও বাসাবাড়ি পানিতে তলিয়ে গেছে। বিশেষ করে শহরের ডিসি অফিস রোড, হাসপাতাল এলাকা, বাইপাস সড়ক, গোরস্থান রোড, সোনালী ব্যাংকের পেছনে, সার্কিট হাউস চত্বর, ঝাউতলা ও সরকারি কলেজ রোডসহ গুরুত্বপূর্ণ এলাকা জলাবদ্ধতায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে।

এ বিষয়ে পটুয়াখালী পৌর প্রশাসক জুয়েল রানা বলেন, আমরা জলাবদ্ধতা নিষ্কাশনে কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের ৫-৬টি মোবাইল টিমে ৫০- ৬০ জন স্টাফ কাজ করছে। পৌর এলাকার সব স্লুইস গেট খোলা রেখেছি, আশা করছি ভাটার সঙ্গে সঙ্গে জলাবদ্ধতা কমে যাবে।

প্রচণ্ড বৃষ্টি ও জলাবদ্ধতার কারণে স্কুল-কলেজেও উপস্থিতি কমেছে। পটুয়াখালী সরকারি বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পরীক্ষা পেছানোর পাশাপাশি অনেক প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিতে হয়েছে। ব্যবসা-বাণিজ্যেও পড়েছে নেতিবাচক প্রভাব। সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছে খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষের ওপর। দিনমজুর, রিকশাচালক, ভ্যানচালকসহ শ্রমজীবী মানুষজন বৃষ্টির কারণে কাজে যেতে পারছে না। ছোট ব্যবসায়ীরাও দোকান খুলে বসতে পারছেন না, ফলে আয় বন্ধ হয়ে গেছে।

এদিকে জেলার গলাচিপা, দশমিনা, বাউফল উপজেলার অন্তত অর্ধশত চর এলাকার নিম্নাঞ্চলও প্লাবিত হয়েছে। প্রতি দফা উচ্চ জোয়ারের পানি ঢুকে জনজীবন বিপর্যস্ত করে তুলেছে। বেড়িবাঁধের বাইরে বসবাস করা মানুষজন পড়েছে চরম দুর্ভোগে। চর মোন্তাজ, চর আন্ডা ও চালিতাবুনিয়া ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রাম পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। সড়কপথ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ায় অনেক এলাকায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করছেন, শহরের নালা-নর্দমা পরিষ্কার না থাকায় অল্প সময়ের বৃষ্টিতেই পানি নামতে পারে না। ফলে জলাবদ্ধতা দীর্ঘস্থায়ী হয়ে পড়ে।

পটুয়াখালী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাকিব বলেন, আমরা প্রতিটি উপজেলার খোঁজখবর রাখছি, এখন পর্যন্ত কোথাও বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্তের তথ্য পাইনি। বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হলে তা মেরামতে আমরা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

বর্তমানে আমাদের কাছে ৪২০০ জিও ব্যাগ মজুদ আছে। এ ছাড়া স্বাভাবিকের থেকে প্রায় দেড় মিটার পানির উচ্চতা বেড়েছে, তাই বেড়িবাঁধের বাইরে যারা ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাস করছিলেন তাদেরকে বেড়িবাঁধের ভেতরে আসার জন্য সচেতন করা হচ্ছে।

জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পরিস্থিতি নজরে রাখা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তার বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসন প্রস্তুত রয়েছে।

বাংলা৭১নিউজ/এসএম

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2018-2025
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com