রাজধানীর বনানীতে ‘৩৬০ ডিগ্রি’ নামের একটি সিসা লাউঞ্জে রাহাত হোসেন রাব্বিকে (৩১) হত্যার ঘটনায় প্রধান দুই আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে এ হত্যাকাণ্ড বলছে র্যাব।
গ্রেফতার দুইজন হলো, মাকসুদুর রহমান হামজা (২৬) ও মুন্না (২৭)। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি সুইস গিয়ার চাকু উদ্ধার করা হয়।
র্যাব জানায়, সিসা লাউঞ্জের ভেতর আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দ্বন্দ্বে খুনের ঘটনা ঘটে। ঢাকায় অবৈধ সিসা বারে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সঙ্গে কথা বলে অভিযান চালানো হবে বলেও জানায় তারা।
শনিবার (১৬ আগস্ট) উত্তরা র্যাব-১ এর কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান, র্যাব-১ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল আশিকুর রহমান।
তিনি বলেন, ১৪ আগস্ট বনানী থানা এলাকার ইন্টারনেট ব্যবসায়ী রাহাত হোসেন রাব্বি তার বন্ধু নুরুল ইসলাম খোকনসহ ৩৬০ ডিগ্রি সিসা লাউঞ্জ নামক প্রতিষ্ঠানে যান। গত ১৪ আগস্ট ভোর ৫টা ২৮ মিনিটের দিকে সিসা লাউঞ্জ ভবনের চতুর্থ তলা থেকে সিঁড়ি দিয়ে নেমে দ্বিতীয় তলায় আসার সময় মুন্না এবং মাকসুদুর রহমান হামজা রাহাত হোসেন রাব্বির পথরোধ করে দাঁড়ান।
তখন রাহাত গ্রেফতার মুন্নাকে চিনতে পেরে বলেন যে, মুন্না তুই এই সময় এখানে কেন? কথা বলা মাত্রই রাব্বির সঙ্গে গ্রেফতার মুন্না এবং মাকসুদুর রহমান হামজার তর্কবিতর্ক শুরু হয়। তর্কবিতর্কের এক পর্যায়ে মুন্না তার পাঞ্জাবির পকেটে থাকা ধারালো চাকু বের করে রাব্বিকে উপর্যুপরি আঘাত করে এবং হামজা লাঠি দিয়ে আঘাত করে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। রাব্বির ডাক চিৎকারে আশেপাশে থাকা লোকজন তাকে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
র্যাব-১ এর অধিনায়ক বলেন, এ ঘটনা বিভিন্ন মিডিয়ায় ব্যাপক প্রচারিত হয় এবং এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। পরবর্তী সময় এই হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের গ্রেফতারের জন্য র্যাব-১ এর আভিযানিক দল ছায়া তদন্ত শুরু করে। ঘটনাস্থল এবং আশপাশের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহের পর বিশ্লেষণ করে আসামি শনাক্ত করতে সক্ষম হয়।
এরই ধারাবাহিকতায় ১৫ আগস্ট র্যাব-১ এর আভিযানিক দল তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় মাকসুদুর রহমান হামজাকে কুমিল্লার বরুড়া থানা এলাকায় আত্নগোপনে থাকা অবস্থায় গ্রেফতার করে। গ্রেফতার হামজাকে জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, ছুরিকাঘাতকারী আসামি মুন্না আশপাশ এলাকাতে অবস্থান করছে। হামজার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে কুমিল্লার বরুড়া থানাধীন গামরুয়া এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।
লে. কর্নেল আশিকুর রহমান আরও বলেন, গ্রেফতারদের জিজ্ঞাসাবাদ এবং তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-১ এর আভিযানিক দল অভিযান পরিচালনা করে ১৫ আগস্ট দিবাগত রাতে ঢাকার মোহাম্মদপুর থানাধীন রাজিয়া সুলতানা রোড এলাকা থেকে হত্যায় ব্যবহৃত একটি সুইস গিয়ার চাকু উদ্ধার করে।
গ্রেফতার মুন্না এবং হামজাকে জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে র্যাবের এই কর্মকর্তা জানান, নিহত রাব্বির সঙ্গে আসামিদের দীর্ঘদিন ধরে বনানী সিসা লাউঞ্জে আসা যাওয়া এবং লাউঞ্জের ভেতর আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দ্বন্দ্ব ছিল। ঘটনার দিন রাত ১টার দিকে নিহত রাব্বি গ্রেফতার মুন্নাকে সিসা লাউঞ্চ থেকে বের হয়ে যেতে বলেন। যার ফলে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে রাব্বিকে হত্যা করা হয় বলে স্বীকার করে গ্রেফতার দুজন।
ঢাকায় অবস্থিত অবৈধ সিসা বারের বিরুদ্ধে অভিযানের বিষয়ে জানতে চাইলে র্যাব-১ এর অধিনায়ক আশিকুর রহমান বলেন, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সঙ্গে কথা বলে অবৈধ সিসা বারে অভিযান চালাবে র্যাব।
বাংলা৭১নিউজ/এবি