বুধবার, ২১ মে ২০২৫, ০৩:১৪ পূর্বাহ্ন

ফ্রান্সে জরিমানা গুনলেন বাংলাদেশি অভিবাসী

বাংলা৭১নিউজ,ডেস্ক:
  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ২০ মে, ২০২৫
  • ১০ বার পড়া হয়েছে

ফ্রান্সে অনিয়মিতভাবে প্রবেশ করার দায়ে এক বাংলাদেশি আশ্রয়প্রার্থীকে অর্থদণ্ড দিয়েছে দেশটির ব্রেস্ট শহরের একটি আদালত। ৩১ বছর বয়সী ওই ব্যক্তি ধর্মীয় কারণে বাংলাদেশ ছেড়েছিলেন বলে জানিয়েছেন।

ফরাসি গণমাধ্যম ওয়েস্ট ফ্রন্সের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য বলা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশ পাড়ি দিয়ে রাজনৈতিক আশ্রয়ের খোঁজে ফ্রান্সে এসেছেন বলে সংবাদমাধ্যমটিকে জানিয়েছেন।

যদিও ব্যক্তিগত নিরাপত্তার কারণে সাক্ষাৎকারে তার নাম প্রকাশ করা হয়নি। বর্তমানে তার আশ্রয় আবেদন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

ওই বাংলাদেশি অভিবাসী ২০২৪ সালের ১২ জুলাই অন্য তিনজন অভিবাসীর সঙ্গে একটি ট্রাকের পেছনে লুকিয়ে ফ্রান্সে ঢোকার চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু ফ্রান্সের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের রোস্কফ শহরে সীমান্ত পুলিশের হাতে আটক হয়েছিলেন।

ট্রাকটি যুক্তরাজ্য থেকে আসছিলো। চালক ছিলেন রোমানিয়ার নাগরিক। তদন্তকারীদের চালক বলেছিলেন, এক পাচারকারীর চাপে পড়ে অভিবাসীদের ফ্রান্সে নিয়ে আসতে রাজি হয়েছিলেন তিনি। এজন্য তাকে আটশো ইউরো দেওয়া হয়েছিলো।

অনিয়মিত প্রবেশের দায়ে অভিযুক্ত বাংলাদেশি নাগরিক আদালতে বলেছেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের হওয়ার কারণে নিরাপত্তার অভাবে দেশ ছেড়েছেন।

তিনি বলেন, আমি আমার ধর্মের কারণে ঝুঁকিতে ছিলাম। আমি এখানে শান্তিতে বাঁচতে চাই। বর্তমানে ওই ব্যক্তি বৃহত্তর প্যারিসের সারসেল শহরে একটি এনজিওর সহায়তায় বসবাস করছেন। বর্তমানে তার ফ্রান্সের কাজের অনুমতি না থাকায় তিনি এখনও কোনো পেশায় যুক্ত হতে পারেননি।

ব্রেস্ট শহরের আদালত তার অনিয়মিত প্রবেশের বিষয়টি বিবেচনায় নিলেও আপাতত কঠোর শাস্তি আরোপ করেনি।

বরং মানবিক দিক বিবেচনায় রেখে শর্ত সাপেক্ষে ১৫০ ইউরো অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়েছে। অর্থাৎ, ভবিষ্যতে আর কোনো ফৌজদারি অপরাধে না জড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিলে তাকে এই জরিমানা পরিশোধ করতে হবে না।

কিন্তু শর্ত ভঙ্গ করলে পরবর্তীতে কঠিন জরিমানার মুখোমুখি করা হতে পারে।

ইতালি, ব্রিটেন ও স্পেনসহ বিভিন্ন দেশ থেকে অনিয়মিত উপায়ে ফ্রান্সে প্রবেশ করে পুলিশের হাতে ধরা পড়লে সাধারণত জরিমানা আরোপ করে থাকে ফরাসি কর্তৃপক্ষ।

এছাড়া ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ব্রুনো রোতাইয়ো অনিয়মিতভাবে ফ্রান্সে প্রবেশ ছাড়াও বসবাসকেও অপরাধ হিসেবে সাব্যস্ত করতে চান বলে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে উল্লেখ করেছেন।

২০১২ সাল পর্যন্ত ফ্রান্সে অনিয়মিত উপায়ে বসবাস করা আইনিভাবে সাজার আওতাধীন ছিল।

পরবর্তীতে সোশ্যালিস্ট পার্টি থেকে নির্বাচিত ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ফ্রঁসোয়া অলান্দ এ ব্যবস্থাটি বাতিল করে নতুন অভিবাসন আইনের অনুমোদন দিয়েছিলেন। এখনও সেই সিদ্ধান্তটি বহাল রয়েছে।

ডান এবং অতি ডানপন্থিরা অনুমোদনবিহীন বসবাসকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করার কথা বলে আসছে।

ফ্রান্সের ডানপন্থি সংসদ সদস্যরা ২০২৪ সালের জানুয়ারির অভিবাসন আইনে এই ব্যবস্থাটি অন্তর্ভুক্ত করার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু সাংবিধানিক কাউন্সিল তা বাতিল করে দিয়েছিল।

পরে ২০২৪ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি এ বিষয়ে একটি বিল উত্থাপন করা হয়।

এই প্রস্তাব কার্যকর হলে ফ্রান্সে অনিয়মিতভাবে বসবাসকারী অভিবাসীদের জরিমানা এবং ফরাসি ভূখণ্ড থেকে বিতাড়নের মতো শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে। তবে জরিমানা আরোপ নিয়ে দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তি পরে সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করতে পারবেন।

সূত্র: ইনফোমাইগ্রেন্টস

বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2018-2025
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com