বাংলা৭১নিউজ, সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি :
অসুস্থ গরুর মাংস খেয়ে সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার কালিয়াকৈড় ও মোহনপুর গ্রামে ৪ শিশু ও মহিলাসহ ২১ ব্যক্তি অ্যানথ্রাক্স রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একটি চিকিৎসক দল ওই গ্রামে রোগীদেরকে চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন।
গতকাল বুধবার (৭ জুন) ৮জন অ্যানথ্রাক্স রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। এর আগে গত মঙ্গলবার (৬ জুন) ১৩ জনের অ্যানথ্রাক্স শনাক্ত করা হয়।
আক্রান্ত রোগীরা হলেন- মোহনপুর গ্রামের রোকেয়া বেগম (৪৫) ও কামরুল ইসলাম (১৪) এবং কালিয়াকৈড় গ্রামের শাহ আলম (৪০), আকরাম হোসেন (৩০), সেরাজুল ইসলাম আরিফ (৩৫), মাসুদ রানা (২৭), আব্দুস সামাদ (৫০), লিমা খাতুন (৩), ফাতিমা বেগম (৭০), রাশিদা খাতুন (৩১), আব্দুল হান্নান (৪০), জাহানারা খাতুন (৩০), বাদশা মিয়া (১৪), সেতু (১০), সিয়াম (১০), আমানত আলী (৪০), বুলবুলি খাতুন (২৫), লিপি খাতুন (৩০), রাবেয়া (৫), হাবিব (৩) ও আব্দুল মান্নান (৫০)।
গরুর মালিক সেরাজুল ইসলাম আরিফকে অসুস্থ গরু জবাই করার অভিযোগে উপজেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও নির্বাহী কর্মকর্তা সন্দ্বীপ কুমার সরকার ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন।
স্থানীয় লোকজন এবং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, পার্শ্ববর্তী ফরিদপুর উপজেলা থেকে ২৫ মে মোহনপুর গ্রামের রোকেয়া বেগম (৪৫) ও কামরুল ইসলাম (১৪) অসুস্থ গরুর মাংস খেয়ে বাড়ীতে আসার ১ সপ্তাহ পর অ্যানথ্রাক্স রোগে আক্রান্ত হয়। পরে গত ২৯ মে কালিয়াকৈড় গ্রামের সেরাজুল ইসলাম আরিফ তার একটি অসুস্থ গরু জবাই করে কম মূল্যে গ্রামের লোকজনের মধ্যে বিক্রি করে।
এই মাংস যারা জবাই, কাটা, বণ্টন করেছেন এবং খেয়েছেন তাদের সকল পরিবারের লোকজন পর্যায়ক্রমে অ্যানথ্রাক্স রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রান্ত লোকজনের শরীরের বিভিন্ন স্থানে লালচে ফোসকা ও ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছে। সেই সাথে রয়েছে জ্বর ও ব্যথা।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. জাফরুল ইসলাম জানান, তার নেতৃত্বে একটি চিকিৎসক দল গত দুই দিনে মোহনপুর ও কালিয়াকৈড় গ্রামে মোট ২১ জন অ্যানথ্রাক্স রোগীকে শনাক্ত করেছেন। এদেরকে বাড়ি বাড়ি গিয়ে যথাযথ চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
ডা. জাফরুল আরও জানান, যারা অসুস্থ গরুর মাংস খেয়েছেন তারা প্রত্যেকেই অ্যানথ্রাক্স-এ আক্রান্ত হতে পারেন। ফলে বিশেষ করে কালিয়াকৈড় গ্রামে অ্যানথ্রাক্স রোগীর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশংকা করা হচ্ছে।
উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা হেলাল উদ্দিন খান জানান, অসুস্থ গরুর মালিক কালিয়াকৈড়ের সেরাজুল ইসলামকে ভ্রাম্যমাণ আদালতে হাজির করলে বিচারক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সন্দ্বীপ কুমার সরকার তাকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করেন।
এদিকে কালিয়াকৈড় ও মোহনপুর গ্রামে কৃষকদের গরুগুলোকে অ্যানথ্রাক্স রোগ প্রতিরোধে ইনজেকশন দেয়া হচ্ছে এবং এ বিষয়ে স্থানীয় লোকজনকে সচেতন করতে পুরো এলাকায় মাইকিং করা হচ্ছে।
বাংলা৭১নিউজ/জেএস