বিশ্বের অন্যতম ভূমিকম্পপ্রবণ দেশ জাপান। জাপানি শিল্পী রিয়ো তাতসুকি ১৯৯৯ সালে প্রকাশিত তার একটি মাঙ্গা (এক বিশেষ ধরনের জাপানি কমিক্স) সিরিজ় ‘দ্য ফিউচার আইস’-এ ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন যে, ২০২৫ সালের ৫ জুলাই ভয়ানক ভূমিকম্প হবে জাপানে। তাতসুকির ভবিষ্যদ্বাণী কি সত্যি প্রমাণিত হতে চলেছে? আশ্চর্যজনকভাবে তিনি যে জায়গার কথা বলেছিলেন, ঠিক সেখানেই গত ২ জুলাই মাউন্ট শিনমোয়েদাকি আগ্নেয়গিরিতে অগ্ন্যুৎপাত হয়েছে।
গত বুধবার জাপানের স্থানীয় সময় বিকেল সাড়ে তিনটে নাগাদ কিয়ুশু ভলক্যানিক রেঞ্জের শিনমোয়েদাকি আগ্নেয়গিরি থেকে ভয়ানক অগ্ন্যুৎপাত হয়। আগুনে মেঘের উচ্চতা পৌঁছয় ৬.৭ কিলোমিটার উচ্চতা পর্যন্ত। ২০১৮ সাল থেকে ৭ বছর নিষ্ক্রিয় থাকার পরে আবার অগ্ন্যুৎপাত হলো এই আগ্নেয়গিরি থেকে। এর ঠিক একদিন আগেই টোকারা দ্বীপপুঞ্জে ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছিল। রিখটার স্কেলে যার তীব্রতা ছিল ৫.৫।
জাপানের আবহাওয়া দপ্তরের তরফে সতর্কতা জারি করে বাসিন্দাদের বাড়ির মধ্যে থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, এত বড় অগ্ন্যুৎপাতের পর ভারী পাথর গড়িয়ে আসা বা লাভা স্রোত গড়িয়ে আসার মতো ঘটনা ঘটা অত্যন্ত স্বাভাবিক। যদিও এই অগ্ন্যুৎপাতের সম্ভাবনা একেবারে অজানা ছিল, এমনটা নয়।
বুধবারের ভূমিকম্পের পরে জাপানের আবহাওয়া দপ্তর এই অগ্ন্যুৎপাত নিয়ে সতর্কতা জারি করেছিল। অগ্ন্যুৎপাতের একদিন আগে সরকারি স্তরে আলোচনাও হয়। সেই আলোচনাতেও উঠে এসেছিল আগ্নেয়গিরি থেকে অগ্ন্যুৎপাতের সম্ভাবনার প্রসঙ্গ। জারি করা হয় সতর্কতাও। ছাইয়ের কারণে স্থানীয় কিছু বিমান চলাচল ব্যাহত হয়েছে। আরও অগ্ন্যুৎপাত বা আফটারশক প্রতিরোধে সতর্কতা হিসেবে জাপান আবহাওয়া সংস্থা বা জেএমএ সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ চালিয়ে যাচ্ছে। ২০১৮ সালে শেষবার এই আগ্নেয়গিরি থেকে অগ্ন্যুৎপাত হয়। তার আগে ২০১১ সালেও বিধ্বংসী অগ্ন্যুৎপাত হয় এই আগ্নেয়গিরি থেকে।
সাম্প্রতিক জাপানে সবচেয়ে বড় ভূমিকম্প হয়েছিল ২০১১ সালে। রিখটার স্কেলে ৯ মাত্রার ভূমিকম্পের ফলে সুনামির উৎপত্তি হয়েছিল। সেই বিপর্যয়ে প্রায় সাড়ে ১৮ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল বিপুল। ফুকুশিমা পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রের তিনটি রিঅ্যাক্টর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। ২০২৪ সালে ৭.১ মাত্রার ভূমিকম্পে ১৪ জনের মৃত্যুর পর প্রথম মহাকম্প নিয়ে সতর্কতা জারি করেছিল জাপান সরকার।
সূত্র: wionews
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ