সোমবার, ০৭ জুলাই ২০২৫, ১২:২৩ পূর্বাহ্ন

‘কোনোভাবেই মব সন্ত্রাস গ্রহণযোগ্য নয়’

বাংলা৭১নিউজ ঢাকা:
  • আপডেট সময় শনিবার, ৫ জুলাই, ২০২৫
  • ২৩ বার পড়া হয়েছে

মব সন্ত্রাস বিগত ১৭ বছরে স্বজন হারানোর বেদনা এবং নানা অনিয়ম ও অবিচারের বিরুদ্ধে এক ধরনের ক্ষোভ বলে মন্তব্য করেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট মো. আসাদুজ্জামান। তিনি বলেছেন, তবে কোনোভাবেই মব সন্ত্রাস গ্রহণযোগ্য নয়। এটি জুলাই আন্দোলনের চেতনার পরিপন্থি। যে প্রক্রিয়ায় সাবেক সিইসি নুরুল হুদাকে মব সন্ত্রাস করা হয়েছে তা অব্যাহত থাকলে আমাদের অনেক অর্জন ব্যাহত হবে।

শনিবার (৫ জুলাই) রাজধানীর এফডিসিতে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি আয়োজিত ছায়া সংসদে এ কথা বলেন তিনি। ‘জুলাই আন্দোলনের চেতনা বাস্তবায়নে সরকার অপেক্ষা নাগরিক সমাজের ভূমিকা বেশি’ বিষয়ে এই ছায়া সংসদের আয়োজন করা হয়।

আসাদুজ্জামান বলেন, গত ফ্যাসিস্ট আমলে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক, আইনজীবী ও সাংবাদিকসহ যারা তথাকথিত সুশীল সমাজের নামে প্রতিনিধিত্ব করেছিল তাদের অনেকেই স্বৈরাচারের পদলেহন করেছে। এরা সরকারের সঙ্গে একাকার হয়ে বাংলাদেশকে একটি ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্রে পরিণত করার জন্য অনবদ্য ভূমিকা রেখেছে। জাতীয় ঐক্যমত গঠনের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যে মত পার্থক্য রয়েছে তা মতবিরোধ নয়, যা আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা সম্ভব। তবে ফ্যাসিস্টের বিরুদ্ধে সবদলই ঐক্যবদ্ধ।

অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দণ্ডিতরা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবে না। এই ট্রাইব্যুনালে মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে সম্পৃক্ত সংগঠনেরও বিচারের এখতিয়ার রয়েছে। আওয়ামী লীগ একটি নিষিদ্ধ সত্ত্বার নাম। এ নিষিদ্ধ সত্ত্বার সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে যদি কেউ ভূমিকা পালন করে তাহলে তাকেও অপরাধী হিসেবে আইনের আওতায় আনা হবে।

ছায়া সংসদে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, জুলাই হত্যাকাণ্ডের দায় আওয়ামী লীগ এড়াতে পারে না। এই হত্যাগুলো শেখ হাসিনার সম্মতি ছাড়া হয়নি এবং গত ১৫ বছরে আওয়ামী সরকার গুম, খুন, টর্চারসেল ও আয়নাঘর তৈরি করে যে নির্যাতন চালিয়েছে তা ক্ষমার অযোগ্য।

তিনি শেখ হাসিনাকে স্বৈরাচারের প্রতীক, ফ্যাসিস্টদের মুখপাত্র এবং উপমহাদেশের ইতিহাসে একজন কলঙ্কিত শাসক হিসেবে আখ্যা দেন, যিনি জনরোষে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে আওয়ামী লীগ জনগণের কাছে রাজনৈতিক ও সামাজিকভাবে গ্রহণযোগ্যতা হারিয়েছে এবং জুলাই হত্যাকাণ্ডে দণ্ডিত হলে তাদের অনেকেই নির্বাচনে অযোগ্য হয়ে পড়বেন।

তিনি বলেন, জুলাই অভ্যুত্থান প্রমাণ করেছে যে দেশের প্রকৃত মালিক জনগণ এবং তারা আর ফ্যাসিস্ট শাসন সহ্য করবে না। তাই আগামীতে যারা ক্ষমতায় আসবেন, তাদের উচিত হবে জনগণের পক্ষে কাজ করা, হত্যা-গুমের রাজনীতি থেকে বিরত থাকা এবং মানবিক, অন্তর্ভুক্তিমূলক রাষ্ট্র গঠনে কাজ করা। বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপির মধ্যে কিছু বিষয়ে মতপার্থক্য থাকলেও, আওয়ামী লীগ ব্যতীত সব শক্তির ঐক্য অপরিহার্য, যাতে দেশে আর কোনো ফ্যাসিস্টের আবির্ভাব না ঘটে। জুলাইয়ের চেতনা আমাদের ঐক্য ও অহংকারের প্রতীক হয়ে থাকবে।

ছায়া সংসদে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির বিতার্কিকদের পরাজিত করে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিতার্কিকপণ বিজয়ী হয়। প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন অধ্যাপক আবু মুহাম্মদ রইস, উপসচিব রোকেয়া পারভীন জুই, উন্নয়ন যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ ড. এস এম মোর্শেদ, সাংবাদিক হাসান জাবেদ, সংবাদিক আহমেদ সরওয়ার। প্রতিযোগিতা শেষে অংশগ্রহণকারী দলকে ট্রফি, ক্রেস্ট ও সনদপত্র দেওয়া হয়।

বাংলা৭১নিউজ/এসএম

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2018-2025
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com