সিন্ধু নদের প্রবাহ রোধে ভারত যদি কোনো বাধা বা অবকাঠামো নির্মাণে এগিয়ে আসে, তবে তা সামরিক আগ্রাসন হিসেবে বিবেচিত হবে এবং পাকিস্তান সেই উদ্যোগে সরাসরি হামলা চালাবে, এমন হুঁশিয়ারি দিয়েছেন দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা মুহাম্মদ আসিফ।
শুক্রবার জিও নিউজের ‘নয়া পাকিস্তান’ টেলিভিশন অনুষ্ঠানে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে খাজা আসিফ বলেন, “শুধু গুলি বা গোলা ছুড়লেই আগ্রাসন হয় না, জলসম্পদের প্রবাহ বন্ধ করাও একধরনের আগ্রাসন। সিন্ধু নদ বাধাগ্রস্ত হলে খাদ্য ও পানির সংকটে লাখো মানুষ মারা যেতে পারে। এটা মানবিক বিপর্যয়।”
তিনি আরও বলেন, “যদি নয়াদিল্লি সিন্ধু নদে পানি প্রতিরোধ বা সরানোর কোনো উদ্যোগ নেয়, তবে পাকিস্তান চুপ করে থাকবে না। আমরা সেই স্থাপনায় আঘাত করব এবং তা ধ্বংস করব।”
তবে এই মুহূর্তে পাকিস্তান বিষয়টি আন্তর্জাতিক ফোরামগুলোতে তুলে ধরার পাশাপাশি কূটনৈতিক ও পর্যবেক্ষণমূলক উদ্যোগ চালিয়ে যাচ্ছে বলেও জানান প্রতিরক্ষামন্ত্রী।
সাম্প্রতিক উত্তেজনার পেছনে রয়েছে ২২ এপ্রিল ভারতের জম্মু ও কাশ্মিরের পেহেলগাঁও এলাকায় লস্কর-ই-তৈয়বার উপশাখা ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’-এর ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলা। এতে ২৬ জন পর্যটক নিহত হন, যা ২০১৯ সালের পুলওয়ামা হামলার পর সবচেয়ে প্রাণঘাতী ঘটনা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
ঘটনার পরপরই নয়াদিল্লি পাকিস্তানকে দায়ী করে একাধিক কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ নেয়, যেমন সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিত, কূটনীতিক প্রত্যাহার, পাকিস্তানিদের ভিসা বাতিল ইত্যাদি।
জবাবে ইসলামাবাদও ভারতের জন্য আকাশ ও স্থলসীমা বন্ধ করে দেওয়া, ভিসা বাতিল এবং দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য স্থগিতসহ পাল্টা কড়া পদক্ষেপ নেয়।
উত্তেজনার মধ্যে গত মঙ্গলবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি শীর্ষ সেনা ও নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন। গোপন সূত্রের বরাতে জানা যায়, পাকিস্তানকে ‘উচিত জবাব’ দিতে সেনাবাহিনীকে সবুজ সংকেত দেওয়া হয়েছে।
যদিও এখনও সামরিক সংঘর্ষ শুরু হয়নি, তবে পাকিস্তানি প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ মনে করেন, সংঘাত এড়ানো গেছে, এমন আশ্বস্ত হওয়ার সময় এখনও আসেনি। “যুদ্ধের আশঙ্কা এখনও বিদ্যমান,” বলেন তিনি।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ