দুর্ঘটনার জন্য আলোচিত চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের লোহাগাড়া উপজেলার জাঙ্গালিয়ায় এবার পিকআপের ধাক্কায় দুই বাইক আরোহী নিহত হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) রাত ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- কক্সবাজার জেলার ঈদগাঁও সদর ইউনিয়নের আব্দু শুক্কুরের ছেলে রাকিবুল ইসলাম এবং একই ইউনিয়নের শামসুল ইসলামের ছেলে জিহাদ (১৯)। তারা সম্পর্কে ফুফাতো-মামাতো ভাই।
স্থানীয়রা জানায়, ৩ মোটরসাইকেলযোগে বন্ধুরা মিলে রাঙ্গামাটির সাজেকে ভ্রমণের জন্য বের হয়। কক্সবাজারের ঈদগাঁও থেকে রওনা দিয়ে তারা চুনতির জাঙ্গালিয়া এলাকায় পৌঁছালে কক্সবাজারমুখী একটি পিকআপ তাদের বহরে থাকা একটি মোটরসাইকেলকে ধাক্কা দেয়। এতে গুরুতর আহত দুজনকে উদ্ধার করে স্থানীয় একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।
লোহাগাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরিফুর রহমান জানান, দুর্ঘটনার পর বান্দরবানের লামা থানার আজিজনগর ফাঁড়ির একটি টিম পিকআপ চালক ও হেলপারকে আটক করেছে। পিকআপটি দোহাজারী হাইওয়ে থানায় জব্দ থাকবে।
বন্দর নগরী চট্টগ্রাম এবং সমুদ্রের শহর কক্সবাজার যাতায়াতের পথে বিপজ্জনক এক এলাকা চুনতির জাঙ্গালিয়া। হরহামেশাই সেখানে ঘটে দুর্ঘটনা, প্রাণ যায় মানুষের। দুর্ঘটনার হটস্পট হিসেবে পরিচিতি পাওয়ার কারণ হিসেবে উঠে আসে— সড়কের অপ্রশস্ততা, চালকদের দীর্ঘ পথ পাড়ি দেওয়া, বিপজ্জনক বাঁক, লবণের পানি পড়ে সড়ক পিচ্ছিল হওয়ার মতো নানা বিষয়।
স্থানীয়দের কেউ কেউ আবার এখানে অতিপ্রাকৃতিক শক্তির হাতও দেখেন। তাদের মধ্যে কারও কারও ধারণা- এই এলাকায় পৌঁছালেই ‘অশুভ শক্তি’ ভর করে গাড়িচালকদের ওপর। এখানে পৌঁছাতেই চালকরা সড়ক দেখেন কয়েকটি। এরমধ্যে একটি ধরে এগুতেই নিয়ন্ত্রণ হারান গাড়িচালকেরা। আর তাতেই ঘটে দুর্ঘটনা।
সবশেষ গত ঈদুল ফিতরের সময় চুনতির জাঙ্গালিয়া এলাকায় তিন দিনের ব্যবধানে এ সড়কে মারা যান অন্তত ১৫ জন। ওইসময় চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কটি প্রশস্ত করার দাবি ওঠে। ঢাকা ও চট্টগ্রাম শহরের পাশাপাশি সাতকানিয়া ও লোহাগাড়া উপজেলায় আন্দোলন শুরু করে।
কয়েকদিন ধরে চলমান আন্দোলন প্রশাসনের আশ্বাসে থেমে যায়। এরপরও ছোটখাট একাধিক দুর্ঘটনার খবর পাওয়া গেছে। তারপরও সডকটি প্রশস্ত করার বিষয়ে সরকারের দৃশ্যমান উদ্যোগ দেখা যায়নি।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ