দেশের কৃষি খাতে বৈচিত্র্য ও উৎপাদন বাড়াতে কৃষকদের জন্য নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। চলতি (২০২৫-২৬) অর্থবছরের কৃষি ও পল্লী ঋণ নীতিমালায় খিরা, কচুর লতি, কাঁঠাল, বিটরুট, কালোজিরা, বস্তায় আদা, রসুন, হলুদ এবং খেজুরের গুড় উৎপাদনকে প্রথমবারের মতো কৃষি ঋণের আওতায় আনা হয়েছে।
আজ (মঙ্গলবার) নতুন অর্থবছরের জন্য এ নীতিমালা ও কর্মসূচি আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। এসময় উপস্থিত ছিলেন কৃষি ঋণ বিভাগের পরিচালকসহ বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকরা।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, এসব ফসল চাষে ঋণ সুবিধা চালু হলে কৃষকের আয় বাড়বে, কৃষি খাতে কর্মসংস্থান ও রপ্তানির সুযোগ তৈরি হবে। পাশাপাশি দেশীয় চাহিদা পূরণের মাধ্যমে আমদানি নির্ভরতা কমবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল রাখতে হলে কৃষকদের সহায়তা বাড়াতে হবে। তাদের ঋণপ্রাপ্তি সহজ করতে হবে, কারণ অনেক কৃষকেরই ব্যাংক ঋণে প্রবেশাধিকার নেই।
তিনি বলেন, কৃষি ঋণ প্রকৃত কৃষকদের হাতে পৌঁছাচ্ছে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ আছে, বিষয়টি পর্যবেক্ষণে রয়েছে। দালালদের মাধ্যমে ঋণ বিতরণ ঠেকাতে নজরদারি জোরদারেরও তাগিদ দেন তিনি।
গভর্নর বলেন, কৃষি ঋণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণে আরও উচ্চাভিলাষী হওয়া দরকার। কম লক্ষ্য নিয়ে শতভাগ অর্জনের চেয়ে বড় লক্ষ্য ধরে ঋণপ্রবাহ বাড়ানো বেশি কার্যকর। তিনি বলেন, ছোট ছোট কৃষি উদ্যোক্তাদের কন্ট্রাক্ট ফার্মিংয়ে উদ্বুদ্ধ করতে হবে, এতে সবাই লাভবান হবে এবং দেশও উপকৃত হবে।
তবে বড় উদ্যোক্তাদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা পিছিয়ে পড়ে। এ জন্য প্রয়োজনে ব্যাংকগুলো মাইক্রোফাইন্যান্স প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতা নিতে পারে। মূল লক্ষ্য হলো কৃষি ঋণের পরিধি ও কার্যকারিতা বাড়ানো।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানায়, কৃষি উৎপাদন বাড়াতে চলতি (২০২৫-২৬) অর্থবছরে কৃষকদের জন্য ৩৯ হাজার কোটি টাকা ঋণ দেওয়ার বরাদ্দ ঠিক করেছে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো।
এ অংক অর্থবছরের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২ দশমিক ৬৩ শতাংশ বেশি। গত অর্থবছরে কৃষি ঋণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা ছিল ৩৮ হাজার কোটি টাকা। যদিও গত অর্থবছরে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা পুরোপুরি অর্জন করতে পারেনি ব্যাংকগুলো।
বাংলা৭১নিউজ/এবি