কুমিল্লার গোমতী নদীর জায়গায় থাকা ৫০৮টি অবৈধ দখল-স্থাপনা আগামী ৬ মাসের মধ্যে উচ্ছেদ করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। কুমিল্লার জেলা প্রশাসকের প্রতি এ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
একই সঙ্গে কেউ যাতে গোমতী নদী দখল বা মাটি ভরাট না করতে পারে, সে জন্য কুমিল্লার পুলিশ সুপার ও সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে মনিটরিং (তদারকি) করতে বলা হয়েছে।
হাইকোর্ট পানি উন্নয়ন বোর্ডকে তিন মাসের মধ্যে নদী ড্রেজিংয়ের প্রস্তাবের বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানান জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। তিনি বলেন, অবৈধ দখল-স্থাপনা উচ্ছেদের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ বিষয়ে আগামী তিন মাসের মধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নিষ্পত্তি করতে বলা হয়েছে। এর আগে জেলা প্রশাসক অর্থ বরাদ্দের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে চিঠি লিখেছিলেন। এলআর (ল্যান্ড রেভিনিউ ট্যাক্স) ফান্ড দিয়ে কাজ শুরু করতে বলেছেন আদালত।
১৪ বছর আগে জনস্বার্থে করা এক রিটের চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে রোববার (৩ আগস্ট) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মো. বশির উল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ রায় দেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। তাকে সহায়তা করেন আইনজীবী সঞ্জয় মণ্ডল ও নাছরিন সুলতানা। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. মহসিন কবির।
কুমিল্লার গোমতী নদী দখল ও স্থাপনার বিষয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়। এই প্রেক্ষাপটে অবৈধ দখল বা স্থাপনা উচ্ছেদের নির্দেশনা চেয়ে মানবাধিকার ও পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) পক্ষে ২০১১ সালে রিটটি করা হয়।
রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে এর আগে ২০১১ সালের ২ মার্চ হাইকোর্ট রুল জারির আদেশ দেন। একই সঙ্গে জরিপ করে গোমতী নদীর সীমানা নির্ধারণ করে অবৈধ স্থাপনা ও দখলদারদের তালিকা আদালতে দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়।
পরবর্তী সময় জরিপ করে ৬২৩টি অবৈধ স্থাপনা চিহ্নিত করে এবং এর মধ্যে ২৬৫টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের বিষয়ে হলফনামা আকারে আদালতকে জানানো হয়। আগের ধারাবাহিকতায় শুনানি নিয়ে কয়েকটি নির্দেশনা দিয়ে এ সংক্রান্ত রুল নিষ্পত্তি করে এই রায় দেন আদালত।
বাংলা৭১নিউজ/এবি