বাংলাদেশের ৫৫ লাখ দরিদ্র ও নিম্ন আয়ের পরিবার আগামী আগস্ট মাস থেকে সরকারের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় মাসে ৩০ কেজি করে চাল পাবেন ১৫ টাকা কেজি দরে।
মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) সচিবালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানিয়েছেন খাদ্য উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার।
তিনি জানান, আগস্টে শুরু হয়ে এ কর্মসূচি চলবে ছয় মাস। এর উদ্দেশ্য—দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং সম্ভাব্য বন্যা পরিস্থিতির প্রভাব মোকাবিলায় আগাম প্রস্তুতি নেওয়া। সরকার মনে করছে, দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য স্বল্পমূল্যে খাদ্য সহায়তা তাদের জীবনমান রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
সরকারি পরিকল্পনা অনুযায়ী, খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি আগস্ট থেকে নভেম্বর পর্যন্ত টানা চার মাস এবং পরবর্তী ফেব্রুয়ারি ও মার্চ— এই দুই মাস চালু থাকবে। ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে কর্মসূচি সাময়িকভাবে স্থগিত থাকবে, তবে, ওই সময়ে ভিন্ন ধরনের খাদ্য সহায়তা কার্যক্রম চালুর সম্ভাবনাও উন্মুক্ত রাখা হয়েছে।
খাদ্য উপদেষ্টা বলেন, এটি শুধু সামাজিক দায়বদ্ধতা নয়, বরং একটি প্রাতিষ্ঠানিক খাদ্য সুরক্ষা নীতির অংশ। আমরা আগেভাগেই প্রস্তুতি নিচ্ছি, যাতে দুর্যোগ বা মূল্যস্ফীতি সৃষ্টিকারী পরিস্থিতিতে হতদরিদ্ররা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত না হন।
উপদেষ্টা জানান, কর্মসূচি নির্বিঘ্ন রাখতে সরকারি পর্যায়ে ৪ লাখ মেট্রিক টন চাল সংগ্রহ করা হবে। পাশাপাশি, বেসরকারিভাবে ৫ লাখ মেট্রিক টন চাল আমদানির উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। এতে দেশের বাজারে হঠাৎ করে সংকট বা মূল্যবৃদ্ধির সম্ভাবনা কমে যাবে।
চাল সংগ্রহ ও আমদানি কার্যক্রম ইতোমধ্যেই শুরু হয়েছে, জানিয়ে তিনি বলেন, সরকার এই মুহূর্তে স্থানীয় বাজারকে চাপমুক্ত রাখতে এবং অভ্যন্তরীণ খাদ্য মজুতকে সুদৃঢ় করতে চায়। একইসঙ্গে খাদ্য অধিদপ্তর এবং জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে মনিটরিং জোরদার করা হবে।
খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় দেশের প্রত্যন্ত ও আর্থ-সামাজিকভাবে পিছিয়ে পড়া এলাকার পরিবারগুলোকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। উপকারভোগীদের তালিকা স্থানীয় প্রশাসন, ইউনিয়ন পরিষদ ও ওয়ার্ড পর্যায়ের প্রতিনিধিদের মাধ্যমে হালনাগাদ করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
খাদ্য উপদেষ্টা বলেন, যারা প্রকৃত অর্থে এ সুবিধা পাওয়ার উপযুক্ত, তাদের কাছে চাল পৌঁছাতে সরকার কঠোর নজরদারি করবে। দুর্নীতি বা অনিয়ম প্রতিরোধে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সুশীল সমাজের অংশগ্রহণও নিশ্চিত করা হবে।
বাংলা৭১নিউজ/এবি