রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ০৮:৪৬ অপরাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ
পাউবো’র নতুন মহাপরিচালক হলেন মোঃ এনায়েত উল্লাহ সেনা কর্মকর্তাদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেসির ক্ষমতা বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন ঐকমত্যে পৌঁছে ৩০ জুলাইয়ের মধ্যে জাতীয় সনদ : আলী রীয়াজ কিছু রাজনৈতিক দল শুধু ক্ষমতা চায়: নাহিদ ইসলাম অপরাধী ও সন্ত্রাসীদের ধরতে আজ থেকেই চিরুনি অভিযান শাপলা প্রতীক ছাড়া আমাদের কোনো অপশন নেই: নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারী ‘অগোছালো কথাবার্তাই ডোবাচ্ছে রাজনৈতিক দলগুলোকে’ ভূমি উন্নয়ন কর আদায়ে এসিল্যান্ডদের আরও উদ্যোগী হতে বললেন উপদেষ্টা এ সপ্তাহে বড় ধরনের অগ্রগতি ঘটাতে চায় কমিশন : আলী রীয়াজ আইনশৃঙ্খলা চ্যালেঞ্জিং হলেও নির্বাচন সম্ভব : বিবিসি বাংলাকে সিইসি

যুক্ত হচ্ছে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান’ কোটা, বাদ পড়ছে মুক্তিযোদ্ধা কোটা

বাংলা৭১নিউজ ঢাকা:
  • আপডেট সময় রবিবার, ১৩ জুলাই, ২০২৫
  • ১৩ বার পড়া হয়েছে

সদ্য প্রকাশিত এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি কার্যক্রম শুরু হচ্ছে শিগগির। প্রতি বছর ভর্তির আগে নীতিমালা প্রণয়ন করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। সেই নীতিমালা অনুযায়ী ভর্তি আবেদন, শিক্ষার্থী বাছাই, চূড়ান্ত ভর্তি, ক্লাস শুরুর তারিখ নির্ধারণ করে সব কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়।

চলতি ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির একটি খসড়া নীতিমালা এরই মধ্যে তৈরি করা হয়েছে। এ নীতিমালায় বেশ কিছু পরিবর্তন আসতে পারে। তবে সবচেয়ে বড় পরিবর্তন আনা হতে পারে কোটা বণ্টনের ক্ষেত্রে। এতে নতুন করে যুক্ত হতে পারে জুলাই গণঅভ্যুত্থান কোটা। যেখানে গণঅভ্যুত্থানে আহত বা তার পরিবারের সদস্যরা বিশেষ সুবিধা পেতে পারেন।

একই সঙ্গে নীতিমালা থেকে বাদ পড়তে পারে মুক্তিযোদ্ধা কোটা। স্বাধীনতাযুদ্ধের প্রায় ৫৫ বছর পর এসে ‘বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান কোটা’ রাখার প্রয়োজনীয়তা নেই বলে মনে করছেন শিক্ষা প্রশাসনের কর্মকর্তারা। এজন্য এ কোটায় কলেজে ভর্তিতে আসন ফাঁকা বা সংরক্ষিত রাখার যৌক্তিকতা দেখছেন না তারা। নীতিমালা চূড়ান্ত করা নিয়ে রোববার (১৩ জুলাই) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। বৈঠক থেকে একাদশে ভর্তির চূড়ান্ত নীতিমালা অনুমোদন করা হতে পারে।

২০২৪ সালে প্রণীত সবশেষ নীতিমালা অনুযায়ী—একাদশ শ্রেণিতে বর্তমানে মেধা কোটায় ৯৩ শতাংশ শিক্ষার্থীকে ভর্তি করানো হয়। অর্থাৎ, সবার জন্য ৯৩ শতাংশ আসন উন্মুক্ত। বাকি ৭ শতাংশ বিভিন্ন কোটায় ভর্তি করানো হয়। যার মধ্যে ৫ শতাংশ কোটা সংরক্ষিত থাকে বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য। বাকি ২ শতাংশ শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং এর অধীন ২৮টি দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সন্তানদের জন্য রাখা হয়।

ঢাকা বোর্ডের দুজন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, চলতি শিক্ষাবর্ষ থেকে কলেজে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির ক্ষেত্রে সব ধরনের কোটা প্রথা বাতিল করার পক্ষে মতামত দেবেন তারা। নাতি-নাতনি কোটা বাতিল হওয়ার পর মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য একাদশ শ্রেণিতে এখন আর কোটা রাখার প্রয়োজনীয়তা নেই। তাছাড়া পোষ্য কোটা নিয়েও দীর্ঘদিন সমালোচনা রয়েছে। মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সন্তানদের এ সুবিধা দেওয়ারও পক্ষে নয় শিক্ষা বোর্ডগুলো।

তবে ভিন্ন কথা বলছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। তারা বলছেন, নতুন করে কিছু কোটা যুক্ত হতে পারে। চব্বিশে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর এবারই প্রথম কলেজে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি শুরু হচ্ছে।

অনেক জুলাইযোদ্ধা এবার এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় পাস করেছেন। তাছাড়া অনেকের পরিবারের সদস্যও এবার একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হবেন। তাদের জন্য সীমিত হারে জুলাইযোদ্ধা বা জুলাই শহীদ পরিবারের সদস্য কোটা রাখা হতে পারে।

 

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে জাগো নিউজকে বলেন, জুলাইয়ে যারা সক্রিয়ভাবে আন্দোলনে অংশ নিয়ে আহত হয়েছে, তারা চিকিৎসাধীন অবস্থায় এসএসসি পরীক্ষায় নিয়েছে।

মেধাবী হওয়া সত্ত্বেও এ কারণে হয়তো ভালো ফল করতে পারেনি। যেহেতু ফলাফলের ভিত্তি একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি করানো হয়, সেক্ষেত্রে তারা বঞ্চিত হবে। এদিক থেকে গণঅভ্যুত্থান কোটা রাখাটা জরুরি। সেটা হয়তো সাময়িক সময়ের জন্য হবে। অর্থাৎ, আগামী দুই বা তিন বছরের জন্য এ কোটা থাকবে। পরে বিলুপ্ত করা হবে।

দেশের একটি শিক্ষা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক নাম-পরিচয় প্রকাশ না করে বলেন, বর্তমান প্রেক্ষাপটে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের কলেজপর্যায়ে ভর্তির বয়স নেই। ফলে এ কোটার প্রাসঙ্গিকতা কমে গেছে। উচ্চ আদালতের সর্বশেষ রায়ে (২০২৪ সাল) মুক্তিযোদ্ধাদের নাতি-নাতনিদের কোটা সুবিধা বাতিল হওয়ায় এ কোটার পরিবর্তন জরুরি।

তিনি বলেন, স্কুলে ভর্তিতে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহত ও শহীদ পরিবারের সদস্যদের জন্য প্রতিটি শ্রেণিতে একটি করে অতিরিক্ত আসন সংরক্ষিত রাখা হয়েছিল। কলেজ ভর্তির ক্ষেত্রেও একই ধরনের ধারা যুক্ত হবে নাকি সরাসরি কিছু রাখা হবে, তার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

ভর্তির পরও শূন্য থাকবে ২০ লাখ আসন

চলতি বছর এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় পাস করেছেন ১৩ লাখ ৩ হাজার ৪২৬ জন শিক্ষার্থী। তবে শিক্ষা বোর্ড এবং বাংলাদেশ শিক্ষা, তথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরোর (ব্যানবেইস) তথ্যমতে, সারাদেশে ৯ হাজার ১৮১টি কলেজ ও আলিম মাদরাসায় একাদশ শ্রেণিতে পাঠদানের অনুমতি রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানে ভর্তিযোগ্য আসন রয়েছে প্রায় ২২ লাখের মতো।

বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি পলিটেকনিকে আসন আছে প্রায় ২ লাখ ৪১ হাজার। এছাড়াও কারিগরি বোর্ডের অধীনে এইচএসসি পর্যায়ে প্রায় ৯ লাখ আসন রয়েছে। সবমিলিয়ে আসন রয়েছে প্রায় সাড়ে ৩৩ লাখ। বিপরীতে এবার পাস করেছে ১৩ লাখের কিছু বেশি। অর্থাৎ উত্তীর্ণ সব শিক্ষার্থীও যদি ভর্তি হয়, তারপরও আসন শূন্য থাকবে প্রায় সাড়ে ২০ লাখ।

ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. খন্দোকার এহসানুল কবির বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের জন্য কলেজ সংকট হবে না। তবে সবাই হাতেগোনা কয়েকটি কলেজে ভর্তির জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে। এটাই বিপজ্জনক। আবার অনেক কলেজ রয়েছে, যেখানে পড়াশোনার মান মোটেও ভালো না।

ফলে শিক্ষার্থীরা ভালো পড়ালেখা হয়, এমন কলেজের পেছনে দৌড়ায়। আমরা চেষ্টা করছি, সব কলেজে মানসম্মত পাঠদান নিশ্চিত করতে। যেসব কলেজ শিক্ষার্থী পাবে না বা ভালো পড়ায় না, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রয়োজনে সেগুলোর পাঠদান অনুমোদন বাতিল করা হবে।’

বাংলা৭১নিউজ/জেসি

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2018-2025
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com