শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫, ১১:১২ অপরাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ
নির্বাচনের আগে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নতির বিকল্প নেই পুলিশকে রাজনৈতিক প্রভাববলয়ের বাইরে রাখতে হবে: হাসনাত টেকসই উন্নয়নের জন্য বিপুল পরিমাণে গাছ লাগাতে হবে: রিজওয়ানা হাসান ‘জবাবদিহিতার একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে দেখছি’ ব্যবসায়ীকে হত্যার ঘটনায় ব্যবস্থা নিচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ফেনীতে বন্যা দুর্গত এলাকা পরিদর্শনে উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম পাশবিক এই হত্যাকাণ্ডের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা নেয়া হবে : আসিফ নজরুল পুতুলকে বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠালো বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ভারতে বাংলাভাষীদের ‘বাংলাদেশি’ বলা বন্ধের হুঁশিয়ারি মমতার বিএনপির বিবেচনায় সব হতে দেওয়া যাবে না: হাসনাত

ঘরে বসেই যেভাবে দেওয়া যাবে হোল্ডিং ট্যাক্স

বাংলা৭১নিউজ ঢাকা:
  • আপডেট সময় শনিবার, ১২ জুলাই, ২০২৫
  • ১১ বার পড়া হয়েছে

হোল্ডিং ট্যাক্স বা গৃহকর পরিশোধে করদাতাদের দীর্ঘদিনের অনীহা ও অসন্তোষের পেছনে ছিল নানা অনিয়ম ও ভোগান্তির অভিযোগ। তবে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এখন অনলাইনে হোল্ডিং ট্যাক্স আদায়ে জোর দেওয়ায় বদল আসছে চিত্রে। একদিকে যেমন নাগরিক ভোগান্তি কমেছে, অন্যদিকে বাড়ছে রাজস্ব আদায়।

সিটি করপোরেশনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারাও স্বীকার করছেন, এক সময় হোল্ডিং ট্যাক্স পরিশোধ করতে গিয়ে নিয়মিত হয়রানির মুখে পড়তেন সাধারণ মানুষ। তবে এখন অনলাইন সিস্টেম চালু হওয়ায় সেই ভোগান্তি অনেকটাই কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হয়েছে।

তবে কিছু গ্রাহক জানিয়েছেন, ম্যানুয়াল পদ্ধতির তুলনায় অনলাইন পেমেন্ট প্রক্রিয়া অনেক সহজ ও সময়সাশ্রয়ী হলেও মাঝে মাঝে পেমেন্ট সময়মতো আপডেট না হওয়ায় বিভ্রান্তি তৈরি হয়।

হোল্ডিং ট্যাক্স দেওয়ার পদ্ধতি

ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে বর্তমানে অনলাইন ও অফলাইন, দুই মাধ্যমেই হোল্ডিং ট্যাক্স প্রদান করা যায়। ঘরে বসেই মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে খুব সহজে এই ট্যাক্স দেওয়া যায়। এ ছাড়া ব্যাংকে গিয়েও হোল্ডিং ট্যাক্স দেওয়া যায়।

অনলাইনে হোল্ডিং ট্যাক্স পরিশোধ করতে হলে প্রথমে এলাকা অনুযায়ী ঢাকা উত্তর অথবা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে হবে। প্রবেশের পর গ্রাহকের জন্য একটি নিবন্ধন ফরম থাকবে। গ্রাহকের মোবাইল নম্বর, ই-মেইলসহ প্রয়োজনীয় সব তথ্য দিয়ে ফরম পূরণ করতে হবে। এই কার্যক্রম শেষ হওয়ার পর হোল্ডিং নম্বর সম্পর্কিত আরেকটি ফরম আসবে। সেখানে হোল্ডিংয়ের যাবতীয় তথ্য যুক্ত করার পরে জানা যাবে হোল্ডিং ট্যাক্সে বকেয়া কত আছে।

বকেয়া টাকা পরিশোধ করতে চাইলে পরিশোধ অপশনে গিয়ে গ্রাহক তার ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ডের তথ্য যুক্ত করতে পারবেন। এরপরই মোবাইলে মেসেজ চলে আসবে কার্ড থেকে তার কত টাকা হোল্ডিং ট্যাক্স বাবদ কাটা হয়েছে। পাশাপাশি অন্যান্য মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমেও নির্ধারিত ফি পরিশোধ করা যাবে।

কেন দিতে হয় হোল্ডিং ট্যাক্স

ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের ক্ষেত্রে অঞ্চলের কাঠামোগত যেমন- আবাসিক এলাকা, বাণিজ্যিক এলাকা ও শিল্পের ধরন এবং প্রধান সড়কে (গলির ৩০০ ফুটের ভেতরে বাড়ি বা ৩০০ ফুটের বাইরে) বাড়ি মূল্যায়নের মাধ্যমে কর ধার্য করা হয়। করপোরেশনের মূল্যায়নের অঙ্কের ওপর ১২ শতাংশ হারে বার্ষিক কর ধার্য করা হয়। এর মধ্যে ৭ শতাংশ হোল্ডিং কর, ২ শতাংশ পরিচ্ছন্নতা কর এবং ৩ শতাংশ বাতি বা লাইটের কর।

হোল্ডিং ট্যাক্স হচ্ছে এক ধরনের কর যা স্থানীয় সরকারকে প্রদান করা হয়। ঢাকায় এটি দুই সিটি করপোরেশনের মাধ্যমে আদায় করা হয়। মূলত হোল্ডিং ট্যাক্স হলো ঘরবাড়ির ওপর নির্ধারিত একটি মূল্য যা বার্ষিক কর হিসেবে নিজ এলাকার করপোরেশনকে প্রদান করতে হয়। এটি এলাকার মৌলিক অবকাঠামোগত উন্নয়ন, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, পয়ঃনিষ্কাশন, আলো ও অন্যান্য রক্ষণাবেক্ষণের কাজে ব্যবহৃত হয়। হোল্ডিং ট্যাক্স রাজস্ব আয়ের একটি বড় উৎস। হোল্ডিং ট্যাক্সের হার বাড়ি বা ভবনের অবস্থান, আকার, ধরন, মালিকের বয়স, পেশা এবং বিভিন্ন ব্যক্তির জন্য ভিন্ন হতে পারে।

জমি ও ইমারতের (বাড়িসহ) বার্ষিক মূল্যের ওপর হোল্ডিং ট্যাক্স ধার্য করা হয়। সিটি করপোরেশন এই কর আরোপ ও আদায়ের বিষয়টি পরিচালনা করে থাকে, যা সিটি করপোরেশনের রাজস্ব আয়ের গুরুত্বপূর্ণ উৎস।

হোল্ডিং ট্যাক্স নম্বর

হোল্ডিং ট্যাক্স দিতে হলে প্রথমে থাকতে হবে একটি হোল্ডিং ট্যাক্স নম্বর। প্রত্যেকটা বাসাবাড়িতেই নম্বর প্লেটে একটা নম্বর উল্লেখ করা থাকে। এটিই হচ্ছে হোল্ডিং নম্বর। যখন ট্যাক্স দিতে যাবেন তখন অবশ্যই এই হোল্ডিং নম্বরটি উল্লেখ করতে হয়।

হোল্ডিং নম্বর না থাকলে সিটি করপোরেশনের আঞ্চলিক অফিসে গিয়ে হোল্ডিং নম্বরের জন্য আবেদন করতে হয়। সিটি করপোরেশনে নির্দিষ্ট ফি প্রদান করার পর নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তা প্রদান করা হয়।

এই আবেদনের জন্য আবেদনপত্র, জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি, বাসাবাড়ির মালিকানার দলিল এবং প্রযোজ্য ক্ষেত্রে ভূমির খাজনা রসিদ প্রয়োজন হতে পারে। এ ছাড়া রাজউকের ক্ষেত্রে রাজউক অফিসের নামজারিপত্র লাগবে।

হোল্ডিং ট্যাক্সের হিসেব যেভাবে 

শহরে বাসাবাড়ির প্রতি বর্গফুটের জন্য ৬.৫০ টাকা হারে কর প্রদান করতে হয়। করপোরেশনের মূল্যায়নের অঙ্কের ওপর ১২ শতাংশ হারে বার্ষিক কর ধার্য করা হয়। এর মধ্যে ৭ শতাংশ হোল্ডিং কর, ২ শতাংশ পরিচ্ছন্নতা কর এবং ৩ শতাংশ বাতি বা লাইটের কর। শহরাঞ্চলের ক্ষেত্রে হোল্ডিং ট্যাক্স সাধারণত ফুট আকারে হিসেব করা হয়। সাধারণত প্রতি বর্গফুটের জন্য ৬.৫০ টাকা হারে হোল্ডিং ট্যাক্স প্রদান করতে হয়।

ঢাকা শহরে কারও ৫০০ বর্গফুটের বাড়ি থাকলে তার (৫০০ x ৬.৫০)= ৩২৫০ টাকা মাসিক কর আসে।

এখানে সরকারকে ১০ মাসের হিসেবে এক বছরের ট্যাক্স দেওয়া হয়। তাহলে সেই ব্যক্তিকে (৩২৫০ x ১০)= ৩২৫০০ টাকা কর প্রদান করতে হবে। সাধারণত পুরো বছরে তিন মাস পরপর মোট চারবারে এই ট্যাক্স দেওয়া হয়, ফলে প্রতি তিন মাসে তাকে (৩২৫০০/৪)= ৮১২৫ টাকা সরকারকে দিতে হয়।

তবে, যদি কেউ নিজ ফ্ল্যাটে শুধুই বসবাসরত থাকেন, সেখানে ভাড়া বা অন্যান্য আনুষঙ্গিক বিষয় একেবারেই না থাকে, তবে হিসেব করা ট্যাক্স থেকে প্রায় ৪০ শতাংশ কমে যায়।

হোল্ডিং ট্যাক্স প্রদান না করলে যে শাস্তি

অধিকাংশ সিটি করপোরেশন ব্যাংকের মাধ্যমে হোল্ডিং ট্যাক্স প্রদানের ব্যবস্থা চালু করেছে। এ ছাড়া অনলাইনেও দেওয়া যায় হোল্ডিং ট্যাক্স। হোল্ডিং ট্যাক্স বিল পাওয়ার পর করদাতা সহজভাবে ব্যাংকিং পদ্ধতিতে প্রয়োজনীয় অর্থ স্থানান্তর করতে পারেন। ব্যাংকগুলো সিটি করপোরেশনসমূহকে প্রত্যেক করদাতার পরিশোধিত বিল নিয়মিত হালনাগাদ করে থাকে।

যদি অর্থবছরের মধ্যে প্রদেয় হোল্ডিং ট্যাক্স পরিশোধ না করা হয়, তাহলে সিটি করপোরেশন বকেয়া হোল্ডিং ট্যাক্সের ওপর ১৫ শতাংশ সারচার্জ ধার্য করে। সিটি করপোরেশন (করারোপণ) বিধিমালা, ১৯৮৬-তে সারচার্জের বর্ণিত শতকরা হার ৫ শতাংশ, কিন্তু পরবর্তীতে ১৯৯০ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর গেজেট নোটিফিকেশনের মাধ্যমে সারচার্জের হার পরিবর্তন করে ১৫ শতাংশ ধার্য করা হয়েছে।

নির্ধারিত অর্থবছরের মধ্যে যদি বছরের নির্ধারিত হোল্ডিং ট্যাক্স পূর্ণ বা আংশিক অপরিশোধিত থাকে, তবে তাকে বকেয়া হোল্ডিং ট্যাক্স পরিশোধের সময় সারচার্জ হিসেবে অতিরিক্ত অর্থ পরিশোধ করতে হবে, যার পরিমাণ বকেয়া হোল্ডিং ট্যাক্সের ১৫ শতাংশ।

বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2018-2025
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com