মুন্সীগঞ্জের মাওয়া-শিমুলিয়া ঘাটকে আধুনিক ও পরিবেশবান্ধব রূপ দেওয়ার লক্ষ্যে এক উচ্চপর্যায়ের পরিকল্পনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার বিকাল সাড়ে ৪টায় বিআইডব্লিউটিএ ড্রেজার ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের ড্রেজার বেইজ সম্মেলন কক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় উপস্থিত ছিলেন সরকার কর্তৃক বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত পাঁচজন উপদেষ্টা।
তারা হলেন- স্বরাষ্ট্র ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকা লে. জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, নৌপরিবহণ এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন, শিল্প ও গৃহায়ণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মো. শেখ বশিরউদ্দিন এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন মুন্সীগঞ্জের জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
সভায় জানানো হয়, মাওয়া-শিমুলিয়া ঘাটকে দেশের অন্যতম কার্যকর নৌবন্দরে রূপান্তরের অংশ হিসেবে প্রস্তাবিত প্রকল্পটি প্রায় ২৯.১৩ একর জায়গাজুড়ে নির্মাণ করা হবে। এই ‘আইসিটি পোর্ট প্রকল্প’-এর প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ৭৫৬ কোটি ৭১ লাখ টাকা, যেখানে বার্ষিক রক্ষণাবেক্ষণ খরচ হবে ৩০ কোটি ৮৯ লাখ টাকা। তিন বছরে বাস্তবায়নযোগ্য এ প্রকল্পে থাকবে ২১৫ মিটার দৈর্ঘ্য ও ৩৫ মিটার প্রস্থের জেটি, যেখানে ১০০ মিটার দৈর্ঘ্যের দুটি কন্টেইনার জাহাজ একসঙ্গে ভিড়তে পারবে।
এছাড়া থাকবে ৪৩০০ বর্গমিটার লোডিং-আনলোডিং এরিয়া, ৩০০০ টিইইউস ধারণক্ষম স্ট্যাক ইয়ার্ড (৩২২৬০ বর্গমিটার), ৬০০ বর্গমিটারের কন্টেইনার মাল স্টেশন (CFS), ১৫,০০০ লিটার ক্ষমতার রিফুয়েলিং স্টেশন, ট্রাক পার্কিং ইয়ার্ড ও ফেরিঘাট। বার্ষিক কন্টেইনার পরিচালনার সক্ষমতা ধরা হয়েছে ২ লাখ ৪ হাজার টিইইউস। সম্ভাব্য বার্ষিক রাজস্ব আয় ধরা হয়েছে ১৪৫ কোটি ২৫ লাখ টাকা।
এছাড়াও সভায় আরও একটি বিকল্প প্রকল্প—‘ইকো রিভার পোর্ট (অপশন-২)’—উপস্থাপন করা হয়। ২৭.৮ একর জায়গাজুড়ে নির্মিতব্য এ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৪ হাজার ৫৬০ কোটি ১২ লাখ টাকা। এতে থাকবে ১৫.৪১ একরের ইকো পোর্ট, ৫৫০ বর্গমিটার জেটি এবং আধুনিক পরিবেশসম্মত অবকাঠামো।
সভায় উপদেষ্টারা বলেন, এই এলাকায় যখন একটি পোর্ট হবে সেটি মুন্সীগঞ্জবাসীর জন্য একটি বড় যজ্ঞ হবে। শুধু পোর্ট নয়, এর বাইরেও সমন্বিত উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হবে।
প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে পদ্মা সেতুর দক্ষিণ প্রান্তে মাওয়া শিমুলিয়া ঘাটকে একটি গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক নদীবন্দর হিসেবে গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
বাংলা৭১নিউজ/এসএকে