ওপেন-সোর্স ফ্লাইট ট্র্যাকারদের তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের অত্যাধুনিক বি-২ স্টিলথ বোমারু বিমানগুলো প্রশান্ত মহাসাগরের গুয়ামের দিকে যাচ্ছে। এই বিমানগুলো বিশাল ‘বাঙ্কার বাস্টার’ বোমা বহনে সক্ষম, যা ইরানের ভূগর্ভস্থ ফোর্দো পারমাণবিক স্থাপনা ধ্বংস করতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্র ইরানের ওপর হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জল্পনা সৃষ্টি হয়েছে।
ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম হারেৎজ-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২ থেকে ৪টি বি-২ স্টিলথ বোমারু বিমান এবং ৬টি রিফুয়েলিং বিমান মিসৌরির জনসন কাউন্টির হুইটম্যান এয়ার ফোর্স বেস থেকে গুয়াম নৌঘাঁটির দিকে যাত্রা করেছে।
তবে বিমানগুলো দিয়াগো গার্সিয়ার দিকে যাবে কিনা তা এখনো স্পষ্ট নয়। দিয়াগো গার্সিয়া হলো চাগোস দ্বীপপুঞ্জের একটি দ্বীপ, যা ইরান থেকে প্রায় ৩,৫০০ কিলোমিটার (২,১৭৫ মাইল) দূরে অবস্থিত একটি মার্কিন-যুক্তরাজ্য যৌথ ঘাঁটি। মধ্যপ্রাচ্যে সামরিক অভিযানের জন্য ডিয়েগো গার্সিয়াকে একটি আদর্শ অবস্থান হিসেবে দেখা হয়।
গত মার্চ মাসে পেন্টাগন ছয়টি বি-২ বোমারু বিমান এই দ্বীপে মোতায়েন করেছিল। সেগুলো ইয়েমেনে এক মাসব্যাপী মার্কিন বোমা হামলায় ব্যবহৃত হয়েছিল এবং ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে আলোচনার সময় উত্তেজনা বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে ইরানকে প্রতিরোধের জন্যও মোতায়েন করা হয়েছিল।
গত মাসে বি-২ বোমারু বিমানগুলোর পরিবর্তে বি-৫২ বোমারু বিমান মোতায়েন করা হয়, যা কর্মকর্তাদের মতে একটি ‘ডাউনগ্রেড’ হিসেবে বিবেচিত।
বি-২ বিমানকে একমাত্র যুদ্ধবিমান হিসেবে গণ্য করা হয় যা ইরানের ফোর্দো পারমাণবিক স্থাপনা ধ্বংস করার জন্য প্রয়োজনীয় বিশাল ‘বাঙ্কার বাস্টার’ বোমা বহন করতে সক্ষম। এই স্থাপনাটি কোম শহর থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার উত্তরে একটি পাহাড়ের গভীরে নির্মিত।
দ্য টাইমস-এর তথ্য অনুযায়ী, যদি যুক্তরাষ্ট্র ডিয়েগো গার্সিয়া থেকে হামলা চালায়, তবে ব্রিটিশ অনুমতির প্রয়োজন হবে, কারণ দ্বীপটি ব্রিটিশ সার্বভৌমত্বের অধীনে। তবে গুয়াম থেকে হামলা চালালে এই অনুমতির প্রয়োজন হবে না, যদিও গুয়াম ফোর্দো থেকে প্রায় ১২,৮০০ কিলোমিটার (৭,৯০০ মাইল) দূরে অবস্থিত।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বৃহস্পতিবার বলেছেন যে তিনি আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে ইরান আক্রমণ করবেন কিনা সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন। গত সপ্তাহে ট্রাম্পের শান্তি আলোচনার পক্ষে এবং আয়াতুল্লাহ আলি খামেনিকে হত্যার হুমকির মধ্যে তীব্র দোলাচল দেখা গেছে, যার ফলে প্রশাসন ইরানের সবচেয়ে সুরক্ষিত পারমাণবিক স্থাপনা ধ্বংসের জন্য প্রয়োজনীয় আমেরিকান বাহিনী মোতায়েন করবে কিনা তা নিয়ে মিশ্র বার্তা দিয়েছে।
বুধবার তিনি বলেছিলেন যে তিনি কী করবেন তা কেউ জানে না। ট্রাম্প এক বিবৃতিতে বলেন, অদূর ভবিষ্যতে ইরানের সাথে উল্লেখযোগ্য আলোচনার একটি সুযোগ রয়েছে, যা হতেও পারে বা নাও হতে পারে। এই তথ্যের ভিত্তিতে আমি আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে সিদ্ধান্ত নেব যে যাব কি যাব না।
সূত্র: টাইমস অব ইসরায়েল
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ