সোমবার, ১৩ মে ২০২৪, ০২:৫১ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
অন্তর্বাসে থাকতো ডিভাইস, ১০ মিনিটে শেষ হতো চাকরির নিয়োগ পরীক্ষা ‘ডোনাল্ড লুকে নিয়ে উদ্ভট চিন্তা করছে বিএনপি’ শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংক পরিচালিত হজ্জ বুথ ও ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প উদ্বোধন ঈদের পর থেকে শনিবারও বন্ধ রাখা হতে পারে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বিকাশ সেন্ডমানিতে অভিনন্দন কার্ড বিএনপি হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছে : হাছান মাহমুদ চাকরির প্রলোভনে ভারতে নিয়ে কেটে নেওয়া হচ্ছে কিডনি: পুলিশ অনিচ্ছা সত্ত্বেও একীভূত হতে সোনালীর সঙ্গে বিডিবিএলের সমঝোতা সংসদীয় গণতন্ত্রকে গতিশীল করতে ভূমিকা রাখবে বিআইপিএস অ্যাম্বুলেন্সে মিললো ৬০ হাজার ইয়াবা, কারবারি গ্রেফতার আফগানিস্তানে বন্যায় নিহত বেড়ে ৩১৫ এমন উন্নত বাংলাদেশ চাই যে দেশকে নিয়ে সারাবিশ্ব গর্ববোধ করবে পাঁচ তারকা মা রোববার ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনার কথা জানালেন বাইডেন আইএলওর সঙ্গে সন্তোষজনক আলোচনা হচ্ছে : আইনমন্ত্রী সর্বজনীন পেনশন ‘বৈষম্যমূলক’ প্রজ্ঞাপন বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন চাকরিতে ৩৫ প্রত্যাশী ৫০০ আন্দোলনকারীর বিরুদ্ধে পুলিশের মামলা কুমিল্লায় যুবলীগ নেতা হত্যা: ৯ জনের মৃত্যুদণ্ড, ৯ জনের যাবজ্জীবন দলগতভাবে নির্বাচন হলে ভোটার উপস্থিতি সহজ হতো: নানক নির্বাচনের পর সংকট আরও বেড়েছে: ফখরুল

১৩৫ কিমি বেগে টেকনাফে আঘাত হেনেছে ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’

বাংলা ৭১ নিউজ
  • আপলোড সময় মঙ্গলবার, ৩০ মে, ২০১৭
  • ১১০ বার পড়া হয়েছে

বাংলা৭১নিউজ, কক্সবাজার: কক্সবাজারের টেকনাফে ১৩৫ কিমি বেগে আঘাত হেনেছে ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’। আজ সকাল পৌনে ৬টার দিকে এ আঘাত হানে সুপার সাইক্লোন।

উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকা দিয়ে ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’ সামান্য উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে এ আঘাত হানে।

কক্সবাজার সমুদ্র উপকূল এখন উত্তাল। এছাড়াও সেন্টমার্টিন ও কুয়াকাটায় ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে এখন হালকা ‍বৃষ্টি ও শীতল হাওয়া বইছে।

আবহাওয়া অধিদফতরের সর্বশেষ (১৫ নম্বর) বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’ চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ২৩০ কিলোমিটার দক্ষিণে, কক্সবাজার থেকে ১৫০ কিলোমিটার দক্ষিণে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৩২০ কিলোমিটার দক্ষিণ, দক্ষিণ-পূর্ব ও পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ২৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণ, দক্ষিণ-পূর্ব দিকে অবস্থান করছিল।

ঘূর্ণিঝড়ের অগ্রবর্তী অংশের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং সমুদ্রবন্দরগুলোর ওপর দিয়ে ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রবৃষ্টি অব্যাহত থাকতে পারে। এটি উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে আজ সকালে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার উপকূল অতিক্রম করতে পারে। এই পরিস্থিতিতে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর ও কক্সবাজার উপকূলকে ১০ নম্বর মহা বিপদসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেয়া ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’ সকাল নাগাদ চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার উপকূলে আঘাত হানতে পারে। এজন্য চট্টগ্রাম ও কক্সাবাজার সমুদ্রবন্দরসহ কয়েকটি উপকূলীয় জেলাকে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। সোমবার মধ্যরাতে চট্টগ্রাম থেকে ৩০৫ কিলোমিটার দক্ষিণে, কক্সবাজার থেকে ২৩০ কিলোমিটার দক্ষিণে, মোংলা থেকে ৩৮০ কিলেমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপূর্ব এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৩০০ দক্ষিণ-দক্ষিণপূর্বে অবস্থান করছিল মোরা।

ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৬৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৯ কিলোমিটার, যা দমকা বা ঝড়োহাওয়ার আকারে ১১৭ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঝড়ের প্রভাবে সাগর রয়েছে উত্তাল।

সোমবার মধ্যরাতে আবহাওয়া অধিদফতরের ১৪ নম্বর বিশেষ বুলেটিনে উল্লেখ করা হয়, উত্তর বঙ্গোপসাগর এবং তৎসংলগ্ন পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত প্রবল ঘূর্ণিঝড় ’মোরা’ আরও সামান্য উত্তরদিকে অগ্রসর হয়ে একই এলাকায় (১৯.০ ডিগ্রি উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯১.৩ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমাংশ) অবস্থান করছিল।

সোমবার সন্ধ্যা ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৮৫ কিলোমিটার দক্ষিণে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৩০৫ কিলোমিটার দক্ষিণে, মংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৫০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপূর্ব এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৭০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপূর্ব দিকে অবস্থান করছিল।

ঘূর্ণিঝড়টি আরও ঘণীভূত ও উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে আজ সকাল নাগাদ চট্টগ্রাম-কক্সবাজার উপকূল অতিক্রম করতে পারে।

ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’ এর অগ্রবর্তী অংশের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় এবং সমুদ্র বন্দরসমূহের ওপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি অব্যাহত থাকতে পারে।

প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৬২ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৯ কিলোমিটার যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১১৭ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর বিক্ষুব্ধ রয়েছে।

চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৭ (সাত) নম্বর বিপদ সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ১০ (দশ) নম্বর পুনঃ ১০ (দশ) নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ১০ (দশ) নম্বর পুনঃ ১০ (দশ) নম্বর মহাবিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।

মংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৫ (পাঁচ) নম্বর বিপদ সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ৮ (আট) নম্বর পুনঃ ৮ (আট) নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

উপকূলীয় জেলা ভোলা, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ৮ (আট) নম্বর পুনঃ ৮ (আট) নম্বর মহাবিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।

প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’র প্রভাবে উপকূলীয় জেলা কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, বরগুনা, ভোলা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৪-৫ ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।

প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’ অতিক্রমকালে কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, পিরোজপুর জেলা সমূহ এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহে ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণসহ ঘন্টায় ৮৯-১১৭ কিলোমিটার বেগে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।

উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলার সমূহকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব গোলাম মোস্তফা জানান, সোমবার রাত ৯টা পর্যন্ত কয়েক লাখ মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে সরিয়ে নেয়া সম্ভব হয়েছে। এর মধ্যে চট্টগ্রামের ৭টি উপকূলীয় উপজেলার বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রে প্রায় ৭০ হাজার দুর্গত মানুষ আশ্রয় পেয়েছেন।

চট্টগ্রামের শাহ আমানত বিমানবন্দরে সোমবার রাত ১২টা থেকে সব ধরনের বিমান উঠানামা বন্ধ ঘোষণা করা হয়। আজ দুপুর ২টা পর্যন্ত এ পরিস্থিতি বহাল থাকবে। অপরদিকে চট্টগ্রাম নৌঘাঁটি থেকে ১০টি যুদ্ধজাহাজ ও চট্টগ্রাম কোস্টগার্ডের দুটি জাহাজ নিরাপদ আশ্রয়ে রাখতে মংলায় সরিয়ে নেয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) চেয়ারম্যান কমোডর এম মোজাম্মেল হক জানান, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সোমবার রাতে স্থানীয় এবং দূরপাল্লার সব ধরনের নৌযান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। বেলা আড়াইটার পর ঢাকার সদরঘাটসহ সব ধরনের টার্মিনাল থেকে নৌযান চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়। পরিস্থিতি উত্তরণের পর এসব যান চলাচল করতে পারবে। চট্টগ্রাম ও মংলাসহ অন্য বন্দরে জাহাজ চলাচলও বন্ধ করে দেয়া হয়। বন্ধ থাকে দুই বন্দরে পণ্য খালাস। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি সক্রিয় করা হয়। এসব কমিটি সকাল থেকে দফায় দফায় বিভিন্ন বৈঠক করে।

দুর্যোগের ব্যাপারে সতর্ক করতে মাইকিং করা হয়। মাইকিংয়ে মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিতে বলা হয়। এছাড়া উদ্ধার তৎপরতা চালাতে নৌকাসহ অন্য যানবাহন প্রস্তুত ছিল। উল্লেখিত কমিটির তত্ত্বাবধানে উদ্ধার, আশ্রয় ও খাদ্য সহায়তা কার্যক্রম চলছে। স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয় চট্টগ্রাম বিভাগের নিন্মাঞ্চলের ডাক্তার ও নার্সসহ সব স্বাস্থ্যকর্মীর ছুটি বাতিল করে জনগণের সেবার জন্য প্রস্তুত রাখে।

দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় জানায়, দুর্যোগকালীন নিরাপত্তায় ব্যাপক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। মেডিকেল টিম ও স্বেচ্ছাসেবক দল গঠন করা হয়েছে। পাশাপাশি আশ্রয়কেন্দ্রের লোকজনের জন্য খাদ্য সরবরাহের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

বাংলা৭১নিউজ/সিএইস

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৩ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com