বুধবার, ১৩ অগাস্ট ২০২৫, ০৭:২২ পূর্বাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ
তরুণদের সামরিক ট্রেনিং করাতে হবে : নাহিদ ইসলাম ভোট দিলে ধানের শীষে, দেশ গড়বো মিলেমিশে: তারেক রহমান নির্বাচনে প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিতে কাজ করছে সরকার: ড. ইউনূস মালয়েশিয়ানদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার ‘চলতি অর্থবছর শেষে জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জিত হবে ৫.৭ শতাংশ’ দুর্নীতিমুক্ত-বৈষম্যহীন নতুন বাংলাদেশ গড়ার পথপ্রদর্শক হবে তরুণরা: আসিফ নির্বাচন ঘিরে ষড়যন্ত্র হচ্ছে : তারেক রহমান মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক যুক্তরাষ্ট্রে দোকানে বন্দুক হামলা, নিহত ৩ বাংলাদেশ-মালয়েশিয়ার মধ্যে ৫ সমঝোতা স্মারক, তিনটি নোট বিনিময় সই

আজারবাইজান-আর্মেনিয়ায় মার্কিন করিডোরকে ‘কবরস্থান’ বানানোর হুমকি ইরানের

বাংলা৭১নিউজ,ডেস্ক:
  • আপডেট সময় রবিবার, ১০ আগস্ট, ২০২৫
  • ২৯ বার পড়া হয়েছে

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের মধ্যে একটি নতুন করিডোর নির্মাণের প্রস্তাব নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে ব্যাপক আলোচনা চলছে। ‘ট্রাম্প করিডোর’ নামে পরিচিত এই প্রকল্পটি একটি বিশেষ অর্থনৈতিক ও কৌশলগত করিডোর, যা এ দুই দেশের মধ্যে শান্তি ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক জোরদার করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে, এই করিডোরটি নিয়ে সবচেয়ে বড় আপত্তি তুলেছে ইরান। দেশটি বলেছে, নিজেদের নিরাপত্তার স্বার্থে প্রস্তাবিত ট্রাম্প করিডোরকে কবরস্থান বানাবে তারা।

‘ট্রাম্প করিডোর’ কী?

এই করিডোরটি মূলত আর্মেনিয়ার দক্ষিণ অংশের সিয়ুনিক প্রদেশের মধ্য দিয়ে আজারবাইজানকে তার নাখচিভান প্রদেশের সাথে সরাসরি যুক্ত করবে। এরপর নাখচিভান থেকে এটি তুরস্কের সাথে যুক্ত হবে। এর প্রধান উদ্দেশ্য হলো, আজারবাইজানের বিচ্ছিন্ন নাখচিভান প্রদেশের সাথে মূল ভূখণ্ডের যোগাযোগ স্থাপন করা এবং একই সাথে তুরস্কের সাথে বাণিজ্য ও যোগাযোগের নতুন পথ খুলে দেওয়া। এই করিডোরটি শুধু পণ্য পরিবহনের জন্য নয়, বরং তেল ও গ্যাস পাইপলাইন এবং ফাইবার অপটিক লাইনের মতো গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোগত উন্নয়নের জন্যও ব্যবহৃত হবে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের মধ্যে একটি শান্তি চুক্তির অংশ হিসেবে এই করিডোরের প্রস্তাবনাটি এসেছে। এর নামকরণ করা হয়েছে ‘ট্রাম্প রুট ফর ইন্টারন্যাশনাল পিস অ্যান্ড প্রসপারিটি’। এই প্রকল্পটিকে উভয় দেশের নেতারা স্বাগত জানিয়েছেন, কারণ এটি দীর্ঘদিনের বিরোধের অবসান ঘটিয়ে এ অঞ্চলে স্থিতিশীলতা আনতে পারে বলে তারা মনে করেন।

কেন আপত্তি জানাচ্ছে ইরান?

ট্রাম্প করিডোরকে ঘিরে ইরানের আপত্তির মূল কারণ ভূ-রাজনৈতিক এবং কৌশলগত। ইরান মনে করে, এই করিডোরটি সরাসরি তাদের সীমান্তের পাশ দিয়ে যাওয়ায় এটি তাদের জাতীয় নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি হতে পারে। ইরান ঐতিহ্যগতভাবে আর্মেনিয়ার সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রেখেছে, এবং এই নতুন করিডোরটি আর্মেনিয়া ও ইরানের মধ্যকার বাণিজ্যিক ও রাজনৈতিক সম্পর্ককে দুর্বল করতে পারে।

এছাড়াও, ইরান আশঙ্কা করছে, করিডোরটি মধ্য এশিয়া, ককেশাস এবং তুরস্কের মধ্যে একটি শক্তিশালী বাণিজ্যিক ও কৌশলগত জোট তৈরি করবে, যেখানে ইরানের ভূমিকা কমে যেতে পারে। এটি ইরানের ‘উত্তর-দক্ষিণ’ বাণিজ্য করিডোর প্রকল্পের জন্যও একটি বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে, যা রাশিয়া ও ভারতের সাথে ইরানের বাণিজ্যিক সম্পর্ককে আরও গভীর করার জন্য তৈরি করা হয়েছিল।

সব মিলিয়ে, ‘ট্রাম্প করিডোর’ মধ্যপ্রাচ্যের ভূ-রাজনৈতিক দৃশ্যপটে নতুন মেরুকরণ তৈরি করতে পারে। এটি যেমন কিছু দেশের জন্য অর্থনৈতিক সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিচ্ছে, তেমনি কিছু দেশের জন্য এটি নতুন চ্যালেঞ্জ ও উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই প্রকল্পটি শেষ পর্যন্ত এ অঞ্চলের স্থিতিশীলতা ও ক্ষমতার ভারসাম্যের ওপর কী প্রভাব ফেলে, তা দেখতে আরও কিছুটা সময় অপেক্ষা করতে হবে।

ইরানের সুপ্রিম নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির উপদেষ্টা আকবর ভেলায়েতি হুমকি দিয়েছেন, এখানে তারা কোনো করিডোর বানাতে দেবেন না। গতকাল শনিবার তিনি বলেন, “এই করিডোর ট্রাম্পের মালিকানাধীন কোনো পথ হবে না। এটি হবে ট্রাম্পের ভাড়াটে যোদ্ধাদের কবরস্থান।”

সূত্র: রয়টার্স

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2018-2025
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com