বাংলা৭১নিউজ ডেস্ক: তামিম ইকবালের অনুশীলনের শেষ বল। মেহেদী হাসান মিরাজের বলটা মাটিতে পড়ে লেগ স্টাম্পের বাইরের দিকে চলে গেল। লেগ সাইডেই মারতে চেয়েছিলেন তামিম। পারলেন না। দূর থেকে দেখে মনে হলো, বল লেগ স্টাম্পে বাতাস লাগিয়ে চলে গেছে।
কিন্তু কী দেখা গেল, তা নয়, মনে দাগ কাটল, যা শোনা গেল সেটি। বলটা ব্যাট এড়িয়ে যেতেই তামিমের কণ্ঠে তীব্র বিরক্তিসূচক ‘ওওওউফ’ ধ্বনি। ব্যাটিং অনেকক্ষণ ধরেই করছিলেন। ব্যাটে-বলেও ভালো হচ্ছিল। ওই একটা শট মনমতো হলো না দেখেই এত বিরক্তি।
তামিমের মতো অনুশীলনে ওভাবে কেউ বোঝাননি, তবে বাংলাদেশের পুরো দলই ভুগছে অতৃপ্তিতে। অতৃপ্তিটা অনেক দিন ধরে নিজেদের চেনাতে না পারার। ভারতের সঙ্গে আজ নিদাহাস ট্রফিতে নিজেদের প্রথম ম্যাচে নামার সময় মাহমুদউল্লাহর দলের সঙ্গী হবে পুরোনো ছন্দে ফেরার আকাঙ্ক্ষাও।
আরেকটা ইচ্ছেও নিশ্চয়ই থাকবে। বেঙ্গালুরু-দুঃস্বপ্নে প্রলেপ দিতে হবে যে! মাহমুদউল্লাহ যতই ‘বেঙ্গালুরুকে বেঙ্গালুরুতেই রেখে এসেছি’ বলুন, টি-টোয়েন্টিতে দুই দলের সর্বশেষ সেই ম্যাচের কথা তো আসেই। ২০১৬ বিশ্বকাপের যে ম্যাচে শেষ ৩ বলে ৩ উইকেট হারিয়ে ১ রানে হেরেছিল বাংলাদেশ!
চ্যালেঞ্জটা কঠিন। কাগজে-কলমে এই ভারত যদিও ভাঙাচোরা। কোহলি-ধোনিরা নেই, টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচে পরশু শ্রীলঙ্কার কাছেও হেরেছে। তবু টুর্নামেন্টের ফেবারিটের নাম ভাবলে ‘ভারত’ই প্রথমে মাথায় আসে। মাহমুদউল্লাহও চ্যালেঞ্জটাকে কোনোভাবেই সহজ মনে করছেন না। কাল ম্যাচ-পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে বললেন, ‘দেখুন, ভারত কিন্তু এখনো শক্তিশালী। ভারতের অভিজ্ঞ অনেক খেলোয়াড় এই সফরে না এলেও এই দলটাও শক্তিশালী। কারণ ওরা আইপিএল খেলছে, অনেক অভিজ্ঞ।’
ওদিকে পরশু হারের পর বাংলাদেশ ম্যাচ নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই ভারত ওপেনার শিখর ধাওয়ান যেভাবে চেয়ারে হেলান দিয়ে দুলতে দুলতে বললেন, ‘একটা ম্যাচ হেরেছি তো কী হয়েছে? বাংলাদেশের বিপক্ষে আত্মবিশ্বাসের কমতি থাকবে না’, চ্যালেঞ্জটা শক্ত মনে হতে বাধ্য।
ভারত কাল অনুশীলন করেনি। আর বাংলাদেশের অনুশীলন নিয়ে হলো নাটক। সেখানেও একটা ‘চ্যালেঞ্জ’ পেরিয়ে আসতে হয়েছে দলকে। পরশু পর্যন্ত খবর ছিল, ম্যাচের আগের দিন বিকেলে ফ্লাডলাইটের নিচে অনুশীলন করবে বাংলাদেশ দল। কিন্তু সেদিন রাতেই নাকি শ্রীলঙ্কান বোর্ড জানিয়ে দেয়, ম্যাচের আগের দিন সেন্টার উইকেটে অনুশীলন করা যাবে না। ব্যস, অনুশীলন তাই এগিয়ে আনা হলো সকাল ১০টায়। অবশ্য সেখানে আরেক নাটক। দলের বাইরে কাউকে জানানোই হয়নি সূচিবদলের কথা। শেষ পর্যন্ত শ্রীলঙ্কায় দলের লিয়াজোঁ অফিসারের কাছ থেকে খবর পেয়ে যখন গেলেন সাংবাদিকেরা, অনুশীলনের শেষ ভাগ চলছে!
বাংলাদেশের সামনে বড় হয়ে উঠছে অনেক দিন ধরে জমা হয়ে থাকা আরেকটা চ্যালেঞ্জ। তিনে কে খেলবেন? বাংলাদেশের যেকোনো ম্যাচের আগেই এটি বড় প্রশ্ন। এবার সেই প্রশ্নের উত্তরে আসছে তিনটি বিকল্প নাম। সাকিব চোটে না পড়লে হয়তো প্রশ্নটাই উঠত না। ত্রিদেশীয় সিরিজে তিনিই খেলেছিলেন তিনে। এরপর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি সিরিজে জায়গাটা বরাদ্দ ছিল মুশফিকের জন্য, আর পরশু প্রস্তুতি ম্যাচে খেললেন সাব্বির রহমান। ১০ বলে ১ রান করে আউট হয়ে গেছেন। ৩ নম্বরের জন্য তাই বিবেচনায় এসে পড়েছে লিটন দাসের নামও। প্রস্তুতি ম্যাচে ১৪ রানে ২ উইকেট পড়ে যাওয়ার পর তাঁর ১৮ বলে ৪০ রানের ইনিংসই পথ দেখায় বাংলাদেশকে।
বাংলা৭১নিউজ/জেএস