পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতের জিরো পয়েন্ট থেকে পূর্বদিকে প্রায় দুই কিলোমিটার নির্মাণাধীন মেরিন ড্রাইভ উদ্বোধনের আগেই বিলীন হয়ে যাচ্ছে সমুদ্র গর্ভে। বুধবার (২৯ মে) সকাল ১০টায় শুরু হওয়া জোয়ারের তাণ্ডবে মেরিন ড্রাইভের কয়েক জায়গা সমুদ্রে বিলীন হয়ে যায়।
শুধু তাই নয়, মেরিন ড্রাইভ রক্ষায় গাইডওয়াল, ওয়াকওয়ে ভেঙে পড়েছে। স্থানীয়দের ভাষ্য, নিম্নমানের কাজ ও সঠিক তদারকি না থাকায় মেরিন ড্রাইভের এই হাল হয়েছে। আইলা, সিডর বা এই রকমের শক্তিশালী কোনো ঘূর্ণিঝড় উপকূলে আঘাত হানলে পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যেতে পারে নির্মাণাধীন সড়কটি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ২০২৪ সালে পর্যটকদের সুবিধা ও কুয়াকাটা সৈকতের সৌন্দর্য রক্ষায় মেরিন ড্রাইভের আদলে দুই কিলোমিটার সড়ক নির্মাণের কাজ হাতে নেয় কুয়াকাটা পৌরসভা। এতে ব্যয় ধরা হয় চার কোটি ৮৬ লাখ টাকা। তবে কাজের মান নিয়ে স্থানীয় অনেকের রয়েছে অনিয়মের অভিযোগ।
এ বিষয়ে কথা বলতে কুয়াকাটা পৌরসভার প্রশাসক ইয়াসীন সাদিকে ফোন দিলে তা বন্ধ পাওয়া যায়। সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীকে ফোন দিলে রিসিভ না করায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
স্থানীয় বাসিন্দা রিয়াজুল ইসলাম বলেন, ‘নির্মাণে অনিয়ম হওয়ায় মেরিন ড্রাইভ ভেঙে পড়েছে। অথচ সামনে বর্ষাকাল। বর্ষাকালে সমুদ্র আরও আগ্রাসী রূপ ধারণ করে। তখন মেরিন ড্রাইভের আরও বেহাল অবস্থা হবে।’
সরেজমিনে দেখা গেছে, পুলিশ বক্স এলাকা, সরদার মার্কেট, ফুচকা মার্কেটসহ বিভিন্ন স্থাপনার বেশিরভাগ ডেউয়ের তোড়ে ভেঙে পড়েছে। কুয়াকাটা সৈকতে বেড়াতে আসা পর্যটকদের মাইকিং করে সরিয়ে দিচ্ছেন পুলিশ ও স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকরা।
আবহাওয়া অফিস সূত্র জানায়, সন্ধ্যা থেকে উপকূলীয় এলাকায় মাঝারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। বাতাসের চাপ অনেকটা বেড়েছে। জোয়ারে নদ-নদীর পানির উচ্চতা ২ থেকে ৩ ফুট বেড়ে প্লাবিত হয়েছে নিম্নাঞ্চল। টানা বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতার পাশাপাশি পানিবন্দি হয়ে পড়েছে শত শত পরিবার। নিম্নচাপটি আরও ঘনীভূত হতে পারে এবং উপকূলীয় এলাকায় ঝোড়ো হাওয়া আকারে বয়ে যেতে পারে। তাই পটুয়াখালীর পায়রাসহ দেশের সব সমুদ বন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
ট্যুরিস্ট পুলিশ কুয়াকাটা রিজিয়নের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হাবিবুর রহমান বলেন, বৈরী আবহাওয়ায় যাতে কোনো দুর্ঘটনা না ঘটে, সেজন্য পর্যটক এবং উৎসাহিত জনসাধারণকে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আবহাওয়া পুরোপুরি অনুকূলে না আসা পর্যন্ত আমরা দায়িত্বে রয়েছি।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রবিউল ইসলাম বলেন, কুয়াকাটা পৌরসভায় প্রশাসক নিয়োগের পর শত তদবির হলেও রাস্তার বাকি বিল দেওয়া হয়নি। বিল ও জামানত জমা আছে। রাস্তার ক্ষতিপূরণ আদায় করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ