উত্তরপশ্চিম বঙ্গোপসাগর এবং তৎসংলগ্ন এলাকায় সৃষ্টি হওয়া নিম্নচাপের কারণে বরিশাল নদী বন্দরে ২ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। সেইসঙ্গে সকাল ৯টা থেকে বরিশালের অভ্যন্তরীণ রুটের লঞ্চ চলাচল বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ।
বৃহস্পতিবার (২৯ মে) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিআইডব্লিউটিএ বরিশাল নদীর বন্দরের যুগ্ম পরিচালক (বন্দর ও পরিবহন বিভাগ) শেখ মোহাম্মদ সেলিম রেজা।
তিনি বলেন, নিম্নচাপের কারণে সৃষ্ট বৈরী আবহাওয়ায় বরিশাল নদী বন্দরে ২ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। এতে বরিশাল থেকে অভ্যন্তরীণ (৬০ ফুট দৈর্ঘ্য) রুটের লঞ্চ চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হলেও ঢাকা-বরিশাল রুটের লঞ্চ চলাচলের বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। আবহাওয়া পরিস্থিতি বুঝে ঢাকা-বরিশাল রুটের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়া হবে। এছাড়া পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত অভ্যন্তরীণ রুটের লঞ্চ চলাচল বন্ধ থাকবে।
এদিকে দক্ষিণাঞ্চলের ৯টি নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বরিশালের কীর্তনখোলা, বরগুনার আমতলীর বুড়িশ্বর, পায়রা নদী ও পটুয়াখালীর মীরগঞ্জের বুড়িশ্বর, পায়রা নদীর পানি বিপৎসীমার কাছাকাছি দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. তাজুল ইসলাম জানান, বর্ষা মৌসুমে বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ বেশ কয়টি নদীর পানিপ্রবাহ পর্যবেক্ষণ করা হয়। এর মধ্যে সবশেষ বুধবার রাত ৮টার রিপোর্ট অনুযায়ী দক্ষিণাঞ্চলের ৯টি নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে করে বিভাগের নিম্নাঞ্চলের অনেক এলাকা তলিয়ে গেছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ঝালকাঠির বিষখালী নদী বিপৎসীমার ১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বরগুনা জেলার বেতাগী উপজেলা পয়েন্টে বিষখালী নদী ৭ সেন্টিমিটার, ভোলা জেলার দৌলতখান উপজেলার সুরমা-মেঘনা নদী ১৪ সেন্টিমিটার, তজুমদ্দিন উপজেলার সুরমা-মেঘনা ১২ সেন্টিমিটার, ভোলা খেয়াঘাট এলাকার তেঁতুলিয়া নদী ৬ সেন্টিমিটার, বরগুনা সদর উপজেলার বিষখালী নদী ১১ সেন্টিমিটার, পাথরঘাটা উপজেলার বিষখালী নদী ২৫ সেন্টিমিটার, উমেদপুর পয়েন্টে কচা নদী ৭ সেন্টিমিটার ও পিরোজপুর জেলার বলেশ্বর নদীর পানি বিপৎসীমার ১৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
অপরদিকে বরিশাল জেলার কীর্তনখোলা নদীর পানি বিপৎসীমার ৯ সেন্টিমিটার, পটুয়াখালী জেলার মির্জাগঞ্জ উপজেলার পায়রা নদীর পানি ৩ সেন্টিমিটার ও বরগুনার আমতলী উপজেলা পয়েন্টে বলেশ্বর/পায়রা নদী ১২ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. তাজুল ইসলাম বলেন, উত্তরপশ্চিম বঙ্গোপসাগর এবং তৎসংলগ্ন এলাকায় সৃষ্টি হওয়া নিম্নচাপের প্রভাবে দক্ষিণাঞ্চলের ৯টি নদীর পানি বেড়েছে। তবে দক্ষিণাঞ্চলে এখন পর্যন্ত বন্যার কোনো প্রভাব নেই।
এছাড়া বৈরী আবহাওয়ার কারণে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে বরিশাল নগরীর বিভিন্ন এলাকা। বৃষ্টির কারণে অনেকেই প্রয়োজন ছাড়া বাসা থেকে বের হতে পারছেন না।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ