শুক্রবার, ১৮ জুলাই ২০২৫, ০৪:০৯ পূর্বাহ্ন

নারী পাচারকালে দুই চীনা নাগরিকসহ চক্রের ৩ সদস্য গ্রেফতার

বাংলা৭১নিউজ ঢাকা:
  • আপডেট সময় বুধবার, ২৮ মে, ২০২৫
  • ৪৯ বার পড়া হয়েছে

নারী পাচারকালে দুই চীনা নাগরিকসহ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন। গ্রেফতার চীনা নাগরিক দুইজন হলেন, হু জুনজুন (৩০) ও ঝাং লেইজি। অপরজন বাংলাদেশের মো. নয়ন আলি (৩০)।

বুধবার ( ২৮ মে) সকালে এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের পুলিশ সুপার মোজাম্মেল হক এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

মোজাম্মেল হক বলেন, গাইবান্ধা জেলার শ্রাবন্তি আক্তার (১৯) নামে এক ভুক্তভোগীর মৌখিক অভিযোগের ভিত্তিতে বিষয়টি প্রথমে এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের নজরে আসে।

গত সোমবার রাতে ভুক্তভোগীকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পাচারকালে তিনি বিমানবন্দরের মূল প্রবেশ পথ গোলচত্বর এলাকায় এয়ারপোর্ট এপিবিএন পুলিশের নিকট অভিযোগ করেন যে, হু জুনজুন (৩০) ও ঝাং লেইজি নামের দুইজন চীনা নাগরিক তাকে চীনে পাচারের চেষ্টা করছে।

অভিযোগকারীর তথ্যের ভিত্তিতে সেই চীনা নাগরিকদের এয়ারপোর্ট এপিবিএন অফিসে নিয়ে আসা হয়। অভিযুক্তদের কাছে জিজ্ঞাসাবাদে ও ভুক্তভোগীর দেওয়া তথ্য থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে, বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় একটি বাড়িতে আরও দেশি-বিদেশি পাচারকারী ও নারী ভুক্তভোগীরা অবস্থান করছেন।

তিনি বলেন, প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে এয়ারপোর্ট এপিবিএন এর একটি অভিযানিক দল বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার সেই বাড়িতে অভিযান পরিচালনা করে। সেখান থেকে তারা মো. নয়ন আলি (৩০) নামের আরও এক পাচারকারীকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে বাকিরা পালিয়ে যায়। এসময় পুলিশ পাচারকারী চক্রের গুরুত্বপূর্ণ আলামত উদ্ধার করে।

এই চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে মানবপাচারের সঙ্গে যুক্ত বলে প্রাথমিকভাবে প্রমাণ মিলেছে। চক্রের বাকি সদস্যদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলমান রয়েছে বলেও জানান সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

সূত্রের বরাত দিয়ে তিনি জানান, মানবপাচারকারী চীনা নাগরিকরা অনুমানিক একবছর পূর্বে বাংলাদেশে এসে বসুন্ধরা এলাকায় বসবাস করতে থাকেন এবং দেশের বিভিন্ন দালালদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলেন। পরবর্তী সময় বাংলাদেশি নাগরিক মো. নয়ন আলি (৩০) এর সহযোগিতায় ভুক্তভোগীকে বিবাহ করার জন্য বিভিন্নভাবে প্রলোভন দেখাতে থাকেন।

বিবাদীরা পরষ্পর যোগসাজসে ভিকটিমকে বিভিন্ন ভাবে ভয়ভীতি ও প্রলোভন দেখিয়ে তাকে বিয়ে করার জন্য রাজি করায়। পরবর্তী সময় ভিকটিমের নামে ভুয়া ঠিকানায় পাসপোর্টসহ অন্যান্য কাগজপত্র তৈরি করে। পরে গত মার্চ মাসে ১০ লাখ টাকা দেনমোহরে চীনা নাগরিক হু জুনজুনের (৩০) সঙ্গে বিয়ে সম্পন্ন হয়। সামগ্রিক কাজে গ্রেফতারকৃত অন্য দুই আসামি সহযোগিতা করে।

পরবর্তী সময় ভিকটিমকে না জানিয়ে চীনে নিয়ে যাওয়ার জন্য ঝাং লেইজি (৫৪) ভিকটিমের নামে বিমান টিকিট বুক করে এবং ভিকটিমকে চীনে পাচার করার জন্য জোর করে বাসা থেকে হযরত শাহ্জালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নিয়ে আসলে ভুক্তভোগীর মৌখিক অভিযোগের ভিত্তিতে বিষয়টি এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশের নজরে আসে।

তিনি জানান, গতকাল বুধবার ভুক্তভোগীর মা রাশিদা (৪৩) নিজে বাদী হয়ে বিমানবন্দর থানায় মানবপাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে মামলা করেছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের পুলিশ সুপার (অপারেশন্স) মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক এই তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে এপিবিএন হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মানবপাচারের অপরাধে চীনা নাগরিক আটকের এটি দ্বিতীয় ঘটনা।

আমরা লক্ষ্য করছি, বেশ কিছু মানবপাচারকারী চক্র স্থানীয় দালালদের সহযোগিতায় নারী পাচারের চেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। তারা মূলত গ্রামের সহজ-সরল ও দরিদ্র পরিবারের নারীদের টার্গেট করে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে চীনে পাচার করার চেষ্টা করে। গোপন তথ্য বা অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের চেষ্টা করি।

বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2018-2025
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com