২০০৯ সালে পিলখানায় বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় বিস্ফোরক আইনে দায়ের করা মামলায় কারাগারে আটক ৪০ জন আসামিকে জামিন দিয়েছেন আদালত। গত ৮ মে ঢাকার বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক ইব্রাহিম মিয়া এই আদেশ দেন বলে নিশ্চিত করেন ট্রাইব্যুনালের বেঞ্চ সহকারী শাহাদাৎ হোসেন।
রাষ্ট্রপক্ষের প্রসিকিউটর মো. বোরহান উদ্দিন জানান, জামিন পাওয়া আসামিদের মধ্যে অনেকেই সাজাপ্রাপ্ত, এমনকি মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিও রয়েছেন। জামিন আবেদনকারীদের নথি যাচাই করে আদালত ৪০ জনের জামিন মঞ্জুর করেন, তবে বাকিদের আবেদন নামঞ্জুর করা হয়।
২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পিলখানায় বিডিআর সদর দপ্তরে সংঘটিত বিদ্রোহে ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন নিহত হন। এ ঘটনায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি পৃথক মামলা হয়।
হত্যা মামলায় ৮৫০ জনের বিচার শেষে ২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর রায় দেয় আদালত। রায়ে ১৫২ জনের মৃত্যুদণ্ড, ১৬০ জনের যাবজ্জীবন এবং ২৫৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। খালাস পান ২৭৮ জন।
পরে ২০১৭ সালের ২৭ নভেম্বর হাইকোর্টে ওই মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের রায়ে ১৩৯ জনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখা হয়, ১৮৫ জনকে দেওয়া হয় যাবজ্জীবন এবং ২২৮ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়। খালাস পান ২৮৩ জন।
এছাড়া হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে ২২৬ আসামি আপিল ও লিভ টু আপিল করেছেন। অপরদিকে, রাষ্ট্রপক্ষও খালাস পাওয়া ৮৩ জনের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেছে। এসব মামলাও বর্তমানে শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে।
বিস্ফোরক আইনে পৃথক মামলায় ২০১০ সালে ৮৩৪ জনের বিরুদ্ধে বিচার শুরু হয়।
অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের পর বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনার পুনঃতদন্তের দাবি নতুন করে জোরালো হয়েছে। শহীদ পরিবারের সদস্যরা গত ১৯ ডিসেম্বর এ বিষয়ে অভিযোগ নিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে যান। পরে সরকার ২৪ ডিসেম্বর অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল আ. ল. ম. ফজলুর রহমানকে প্রধান করে একটি কমিশন গঠন করে। কমিশনকে ৯০ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ