ভারত-পাকিস্তান সংঘাত ইস্যুতে সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন দৈনিক মানবজমিনের প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী।
তিনি বলেন, রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে যেন কেউ কোনো সুযোগ নিতে না পারে এবং কোনো বক্তব্য যেন কোনো পক্ষকে উসকে না দেয়।
শনিবার (১০ মে) এফডিসিতে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি আয়োজিত ছায়া সংসদে এসব কথা বলেন তিনি।
ছায়া সংসদের বিষয় ছিল ‘ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের মূল কারণ রাজনৈতিক নয়, ঐতিহাসিক’।
মতিউর রহমান চৌধুরী বলেন, পাকিস্তানের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়তে গিয়ে ভূ-রাজনীতির খেলায় পা দেওয়া ঠিক হবে না। ভারতের সঙ্গে বর্তমান সরকারের সম্পর্কের টানাপোড়ন আছে। অতীতে তারা আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্য কারো সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখেনি। সম্পর্কের তিক্ততা থাকা সত্ত্বেও ভারত-পাকিস্তান সংঘাত পরিস্থিতি নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার প্রধান প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করা উচিত।
তিনি বলেন, কাশ্মীর হলো বিবদমান দুই দেশের রাজনীতিবিদদের দাবার গুটি। নরেন্দ্র মোদির সামনে বিহার ও পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচনে জয়ী হওয়ার বড় চ্যালেঞ্জ রয়েছে। জনসমর্থন আদায়ের লক্ষ্যে মোদি এই সংঘাতকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছেন। এবারের সংঘাত এর অন্যতম বৈশিষ্ট্য হচ্ছে ভুয়া সংবাদ, এআই এবং ড্রোনের ব্যবহার। ভূ-রাজনীতিতে এই সংঘাত এর প্রভাব বিশাল, যা হালকাভাবে নেওয়া যাবে না।
ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জনের মৃত্যু এবং পাকিস্তানে ভারতের অভিযানে ৩২ বেসামরিক নিহত-দুই ঘটনাই দুঃখজনক। পারমাণবিক শক্তিধর দুই দেশের এই সংঘাত বিশ্বশান্তির জন্য বড় হুমকি। সংঘাতকে ধর্মীয় বিরোধে পরিণত করা ঠিক নয়। বিজেপি সরকারকে ওয়াকফ সংশোধনী বিল দ্রুত নিষ্পত্তি করে ভারতীয় মুসলমানদের আশ্বস্ত করা উচিত।
তিনি বলেন, ভারত-পাকিস্তান সংঘাত দীর্ঘায়িত হলে বাংলাদেশের ওপর অর্থনৈতিক চাপ বাড়বে-আমদানি-রপ্তানি বিঘ্নিত হবে, পণ্যদাম বাড়বে, ফ্লাইটের সময় ও খরচ বৃদ্ধি পাবে, পুঁজিবাজারে অস্থিরতা দেখা দেবে। এছাড়া, বিএসএফ সীমান্ত দিয়ে ১৬৭ জন ভারতীয় নাগরিককে রোহিঙ্গা পরিচয়ে পুশইনের চেষ্টা করেছে, যা উদ্বেগজনক।
ছায়া সংসদে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটির বিতার্কিকদের পরাজিত করে বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজের বিতার্কিকরা বিজয়ী হয়। বিচারক ছিলেন, অধ্যাপক ড. তাজুল ইসলাম চৌধুরী তুহিন, সাংবাদিক মাঈনুল আলম, এ কে এম মঈনুদ্দিন, মিজানুর রহমান এবং কবি জাহানারা পারভীন। প্রতিযোগিতা শেষে বিজয়ীদের ট্রফি, ক্রেস্ট ও সনদপত্র প্রদান করা হয়।
বাংলা৭১নিউজ/এসএকে