সোমবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৮:০৫ অপরাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ
নেপালে জেন জি আন্দোলনে পুলিশের গুলি, মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৪ মিঠামইন প্রকল্পসহ বেশকিছু ইউসলেস প্রকল্প নেওয়া হয়েছিল: নৌপরিবহন উপদেষ্টা এক দলীয় শাসন ব্যবস্থা থেকে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রবর্তন করেছে বিএনপি প্রয়োজন ৩০ বিলিয়ন ডলার, আইএমএফ থেকে ২ বিলিয়ন আনতেই জান বের হয় সারাদেশে ৩৩ হাজার মণ্ডপে হবে দুর্গাপূজা ‘রাহুল-প্রিয়াঙ্কা মডেলে’ দলের হাল ধরছেন শেখ হাসিনার ছেলেমেয়েও ঝটিকা মিছিলের বিষয়ে ‘মনিটরিং’ জোরদার করবে সরকার, নেবে কঠোর ব্যবস্থা রাশিয়ার ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞার হুমকি ট্রাম্পের ঢাবি প্রশাসনকে সর্বাত্মক সহযোগিতার নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার জাতীয় স্বার্থে বস্তুনিষ্ঠ ও জবাবদিহিমূলক গণমাধ্যম অপরিহার্য : রিজওয়ানা হাসান

বিক্ষোভকারীদের দখলে নেপালের পার্লামেন্ট, কারফিউ জারি

বাংলা৭১নিউজ,ডেস্ক:
  • আপডেট সময় সোমবার, ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
  • ১৩ বার পড়া হয়েছে

নেপালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম প্ল্যাটফর্মের ওপর থেকে সরকারের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার এবং দেশটির দুর্নীতির সংস্কৃতির অবসানের দাবিতে রাজধানী কাঠমান্ডুতে হাজারও তরুণ বিক্ষোভ করেছে। জেন-জি বিক্ষোভকারীরা দেশটির নিউ বানেশ্বরে অবস্থিত পার্লামেন্ট ভবনে ঢুকে পড়ে। তারা পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে এবং গেট টপকে সেখানে প্রবেশ করে।

সোমবার শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির কথা থাকলেও জেন-জিদের বিক্ষোভ সহিংস হয়ে ওঠে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ টিয়ার গ্যাস ও জলকামান ব্যবহার করে।

পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠায় দুপুর ১২টা ৩০ মিনিট থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত বানেশ্বর ও আশপাশের গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় কারফিউ জারি করেছে কাঠমান্ডুর জেলা প্রশাসন কার্যালয়।

প্রধান জেলা কর্মকর্তা ছবি রিজালের সই করা কারফিউ ঘোষণায় জানানো হয়, স্থানীয় প্রশাসন আইন ২০২৮-এর ৬(এ) ধারা অনুযায়ী এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

নিউ বানেশ্বর চৌক থেকে পশ্চিমে বিজুলিবাজার সেতু পর্যন্ত (এভারেস্ট হোটেল সংলগ্ন), পূর্বে টিঙ্কুনে চৌক পর্যন্ত (মিন ভবন ও শান্তিনগর হয়ে), উত্তরে আইপ্লেক্স মল সংলগ্ন রত্ন রাজ্য সেকেন্ডারি স্কুল পর্যন্ত এবং দক্ষিণে শঙ্খমূল সেতু পর্যন্ত এলাকা কারফিউয়ের অধীনে রাখা হয়েছে।

১৯৯৭ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে জন্ম নেওয়া জেনারেশন জেডের (জেন-জি) তরুণরা কাঠমান্ডু, পোখারা, বুটওয়াল, বিরাটনগরসহ বিভিন্ন শহরে দুর্নীতি ও সরকারের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করছে।

বানেশ্বর এলাকায় কিছু তরুণকে পুলিশের গার্ড হাউসে উঠতে দেখা যায়। এরপরই নিরাপত্তা বাহিনী টিয়ার গ্যাস ব্যাবহার করে। পার্লামেন্ট ভবনে প্রবেশের চেষ্টা করা বিক্ষোভকারীদের সরাতে কর্তৃপক্ষ অভিযান চালাচ্ছে।

সরকার ২৬টি অনিবন্ধিত প্ল্যাটফর্ম ব্লক করার পর শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) থেকে ফেসবুক, ইউটিউব ও এক্সসহ বেশ কয়েকটি সোশ্যাল মিডিয়া সাইট ব্যবহার করা যাচ্ছে না। যার ফলে নেপালের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারীরা ক্ষুব্ধ ও বিভ্রান্ত হয়েছেন।

ইনস্টাগ্রামের মতো জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে নেপালে লাখ লাখ ব্যবহারকারী রয়েছেন-যারা বিনোদন, সংবাদ ও ব্যবসার জন্য এই মাধ্যমগুলোর ওপর নির্ভর করে থাকে।

জাতীয় পতাকা উড়িয়ে, জেন-জি বিক্ষোভকারীরা জাতীয় সঙ্গীতের মাধ্যমে প্রতিবাদ শুরু করে এবং তারপরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ওপর নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে স্লোগান দেয়।

২৪ বছর বয়সী ছাত্রী যুজন রাজভান্ডারী বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো নিষেধাজ্ঞার কারণে আমরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছি। কিন্তু এটাই একমাত্র কারণ নয়, যে আমরা এখানে জড়ো হয়েছি।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমরা নেপালে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ নেওয়া দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছি।’

২০ বছর বয়সী আরেক ছাত্রী ইক্ষমা তুমরোক জানান, তিনি সরকারের ‘কর্তৃত্ববাদী মনোভাবের’ বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছেন।

তিনি বলেন,  ‘আমরা পরিবর্তন দেখতে চাই। অন্যরা এটা সহ্য করেছে, কিন্তু আমাদের প্রজন্মের সঙ্গেই এই ‘কতৃত্ববাদী মনোভাবের’ অবসান ঘটাতে হবে।’

নিষেধাজ্ঞার পর থেকে, সাধারণ নেপালিদের সংগ্রামের সঙ্গে রাজনীতিবিদদের সন্তানদের বিলাসবহুল জিনিসপত্র ও ব্যয়বহুল ছুটি কাটানোর তুলনামূলক ভিডিও টিকটকে ভাইরাল হয়েছে, যা এখনও চলছে।

গত মাসে মন্ত্রিসভা সিদ্ধান্ত নেয়, সংশ্লিষ্ট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম কোম্পানিগুলোকে সাত দিনের মধ্যে নেপালে নিবন্ধন করতে হবে, যোগাযোগের জন্য প্রতিনিধি রাখতে হবে এবং অভিযোগ ও নিয়ম মানা বিষয়ক কর্মকর্তাও নিয়োগ দিতে হবে।

গত বছরের সেপ্টেম্বরে সুপ্রিম কোর্টের আদেশের পরে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

রবিবার এক বিবৃতিতে সরকার বলেছে, তারা চিন্তা ও মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে সম্মান করে এবং ‘তাদের সুরক্ষা ও নিরবচ্ছিন্ন ব্যবহারের জন্য একটি পরিবেশ তৈরি করতে’ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

নেপাল অতীতে জনপ্রিয় অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলোতে অ্যাক্সেস সীমাবদ্ধ করেছে। অনলাইন জালিয়াতি ও অর্থ পাচার বৃদ্ধির কথা উল্লেখ করে সরকার জুলাই মাসে টেলিগ্রাম মেসেজিং অ্যাপটিতে অ্যাক্সেস বা ব্যবহার বন্ধ করে দেয়।

প্ল্যাটফর্মটি নেপালি নিয়ম মেনে চলতে সম্মত হওয়ার পর, গত বছরের আগস্টে টিকটকের ওপর থেকে নয় মাসের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়।

সূত্র : কাঠমান্ডু পোস্ট

বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2018-2025
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com