সোমবার, ২১ জুলাই ২০২৫, ০৭:৪৯ অপরাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ
চীনা বিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে কোনো পানি প্রত্যাহার হবে না : চীনা রাষ্ট্রদূত বিমান বিধ্বস্তের ঘটনা খতিয়ে দেখা হবে: আইন উপদেষ্টা প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত এক দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা বিমান দুর্ঘটনায় নিহত বেড়ে ১৯, আহত অন্তত ৫০ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় প্রধান উপদেষ্টার শোক ইশরাকের বক্তব্য নাসীরুদ্দীনের চেয়ে কয়েকগুণ নিচু লেভেলের: সারজিস প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তে নিহত ১, হেলিকপ্টারে সিএমএইচে নেওয়া হয়েছে ৪ জনকে ইলিশের দাম বেশি হওয়ার কারণ সরবরাহ কম ও চাঁদাবাজি : উপদেষ্টা জুলাই যোদ্ধাদের জন্য সরকারি চাকরিতে কোটা থাকছে না: মুক্তিযুদ্ধ উপদেষ্টা সারের লাইসেন্স দেয়ার ক্ষেত্রে যোগ্যদের বিবেচনায় নেয়া হবে : কৃষি উপদেষ্টা

১৮ বছর জেল খাটার পর ১২ মুসলিমকে বেকসুর খালাস দিলো ভারতীয় আদালত

বাংলা৭১নিউজ,ডেস্ক:
  • আপডেট সময় সোমবার, ২১ জুলাই, ২০২৫
  • ১২ বার পড়া হয়েছে

ভারতের মুম্বাইয়ে ২০০৬ সালের ট্রেন বিস্ফোরণ মামলায় দণ্ডিত ১২ মুসলিম ব্যক্তিকে ১৮ বছর পর বেকসুর খালাস দিয়েছে বম্বে হাই কোর্ট। আদালত রায়ে জানিয়েছে, তদন্তকারী সংস্থা অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অপরাধ প্রমাণে ব্যর্থ হয়েছে।

সোমবার (২১ জুলাই) ভারতের সংবাদমাধ্যম মুসলিম মিরর জানায়, ২০০৬ সালের ১১ জুলাই মুম্বাইয়ের পশ্চিম রেলপথের লোকাল ট্রেনে ধারাবাহিক বিস্ফোরণে ১৮৯ জন নিহত হন এবং আহত হন আরও আট শতাধিক মানুষ। ভয়াবহ এ ঘটনায় দেশজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

ঘটনার প্রায় ৯ বছর পর ২০১৫ সালে বিশেষ আদালত পাঁচজনকে মৃত্যুদণ্ড এবং সাতজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়। তবে সোমবার বম্বে হাই কোর্টের দুই বিচারপতি—আনিল কিলোর ও শ্যাম চাঁদক—রায় বাতিল করে বলেন, “যথাযথ প্রমাণের ঘাটতির কারণে সাজা বাতিল করা হলো।” যদিও এখনো পূর্ণাঙ্গ রায়ের অনুলিপি প্রকাশ করা হয়নি।

দণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে যাদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল, তারা হলেন কামাল আনসারি, মোহাম্মদ ফয়সাল আতাউর রহমান শেখ, এহতেশাম কুতুবউদ্দিন সিদ্দিকি, নাভিদ হুসেন খান ও আসিফ খান।

আর যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত সাতজন হলেন  তানভীর আহমেদ মোহাম্মদ ইব্রাহিম আনসারি, মোহাম্মদ মাজিদ মোহাম্মদ শফি, শেখ মোহাম্মদ আলি আলম শেখ, মোহাম্মদ সাজিদ মারগুব আনসারি, মুজাম্মিল আতাউর রহমান শেখ, সোহেল মাহমুদ শেখ ও জমীর আহমেদ লতিফুর রহমান শেখ।

এই মামলায় ওহিদ শেখ নামের আরও একজন ৯ বছর কারাভোগের পর আগেই খালাস পেয়েছিলেন।

২০১৫ সালের বিশেষ আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আসামি ও রাজ্য সরকার—উভয় পক্ষই উচ্চ আদালতে আপিল করলেও শুনানি বছরের পর বছর ঝুলে ছিল। শেষ পর্যন্ত ২০২৪ সালে দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য গঠিত হয় বিশেষ বেঞ্চ।

আসামিদের পক্ষে আদালতে দাঁড়ান সুপ্রিম কোর্টের প্রবীণ আইনজীবী ও ওড়িশা হাই কোর্টের সাবেক প্রধান বিচারপতি ড. এস. মুরলিধর। তিনি বলেন, “এই মামলা প্রমাণের ভিত্তিতে নয়, বরং জনচাপ ও মিডিয়ার প্রচারে পরিচালিত হয়েছে। মিডিয়া ট্রায়ালের কারণে শুরু থেকেই অভিযুক্তদের ‘জঙ্গি’ হিসেবে সমাজ চিহ্নিত করে।”

তিনি আরও বলেন, “১৮৯ জনের প্রাণহানির ঘটনায় সন্দেহ নেই এটি মর্মান্তিক। কিন্তু বিনা অপরাধে ১২ জন মানুষ ১৭-১৮ বছর ধরে জেল খেটেছে, তারাও তো আরেক ধরনের শিকার। এখন তারা নির্দোষ প্রমাণিত হলেও তাদের জীবন আর স্বাভাবিক নয়। পরিবার, সমাজ, কর্মজীবন—সবকিছু ধ্বংস হয়ে গেছে।”

ড. মুরলিধর আদালতে বলেন, “একবার কাউকে ‘জঙ্গি’ তকমা দিলে সমাজ আর সম্মান দেয় না। খালাস পেলেও কেউ আর তার জীবনে ফিরতে পারে না। এই মানুষগুলোর জন্য পুনর্বাসনের কোনো রাষ্ট্রীয় নীতি নেই—এটাই সবচেয়ে বড় ট্র্যাজেডি।”

বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2018-2025
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com