রবিবার, ২৭ জুলাই ২০২৫, ০৩:৪৫ পূর্বাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ
গ্রিন শিপইয়ার্ড না হলে জাহাজভাঙা কারখানা বন্ধ করে দিতে হবে মাইলস্টোন ট্র্যাজেডি: দগ্ধদের দেখতে বার্ন ইনস্টিটিউটে প্রধান উপদেষ্টা জুলাই গণঅভ্যুত্থান রুখে দাঁড়াবার এক মহাকাব্য : সংস্কৃতি উপদেষ্টা নির্বাচন ভণ্ডুল করার অপচেষ্টা রুখে দিতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা ক্ষমতা পরিবর্তনের ভয় না থাকলে সরকার দানবীয় হয়ে ওঠে : আসিফ নজরুল আমরা দুর্নীতিবিরোধী কার্যক্রমে সোচ্চার হয়েছি : বাণিজ্য উপদেষ্টা শুধু অভিযোজন নয়, দরকার বিশ্বব্যাপী নির্গমন হ্রাস: পরিবেশ উপদেষ্টা পুরোনো সিস্টেমে দেশকে আর চলতে দেব না: নাহিদ পুশইন কমে আসছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

রোগ প্রতিরোধী নতুন ধান উদ্ভাবন

গাজীপুর প্রতিনিধি:
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ২৯ মে, ২০২৫
  • ৫১ বার পড়া হয়েছে

সুগন্ধিযুক্ত ও জিঙ্ক সমৃদ্ধ নতুন ধানের জাত উদ্ভাবন করেছে গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (গাকৃবি)। গবেষণার মাধ্যমে উদ্ভাবিত এই ধানের জাতের নাম ‘জিএইউ ধান-৩’।

গবেষণায় নেতৃত্ব দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কৌলিতত্ত্ব ও উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগের প্রজননবিদ অধ্যাপক ড. নাসরীন আক্তার আইভী।

প্রিমিয়াম কোয়ালিটির এই নতুন জাতটি সুগন্ধিযুক্ত ও জিঙ্ক সমৃদ্ধ হওয়ায় পুষ্টি এবং মানের দিক থেকে একটি ব্যতিক্রমী সংযোজন হিসেবে পরিগণিত হচ্ছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ বিভাগের সহকারী রেজিস্টার মো. আব্বাসউদ্দীন জানান, এ জাত উদ্ভাবনের মাধ্যমে গাকৃবির মোট উদ্ভাবিত জাতের সংখ্যা ৯০টি পৌঁছালো। যা বাংলাদেশের কৃষিতে এক নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করলো।

দীর্ঘ চার বছর গবেষণা ও ফলন পরীক্ষার পর ২০২১ ও ২০২২ সালে দেশের বিভিন্ন এলাকায় কৃষকের এ জাতটি মাঠে পরীক্ষা করা হয়। পরবর্তীতে বীজ প্রত্যয়ন এজেন্সি কর্তৃক প্রস্তাবিত ফলন পরীক্ষায় সন্তোষজনক ফলাফলের সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে জাতীয় বীজ বোর্ড চলতি বছরের ২০ এপ্রিল জিএইউ ধান-৩ এর ছাড়পত্র দেয়।

গবেষণা সূত্রে জানা যায়, এ ধানে আধুনিক উফশী ধানের সব বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান। চালে অধিক জিঙ্ক এবং লৌহ রয়েছে যা মানুষের শরীরকে একদিকে যেমন রোগ প্রতিরোধী করে জীবাণু ও ভাইরাস থেকে রক্ষা করে তেমনি শরীরে হিমোগ্লোবিন তৈরির মাধ্যমে শক্তি উৎপাদনে সাহায্য করে।

এছাড়া দানা চিকন ও লম্বা এ জিএইউ ধান-৩ তুলনামূলক কম সময়ের মধ্যে পরিপক্ব হয়, আমন মৌসুমে প্রায় তিন মাস এবং বোরো মৌসুমে সাড়ে তিন মাস পর উৎপাদন পাওয়া যায়। ফলে অল্প সময়ে অধিক ফলন পেয়ে কৃষকরা লাভবান হতে পারেন।

অন্যদিকে এ ধানের গাছের আকার বড়, কাণ্ড মোটা ও কুশির সংখ্যা বেশি হওয়ায় এটি থেকে অধিক পরিমাণ খড় পাওয়া যায়। ফলে গবাদি পশুর খাদ্য চাহিদা পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। সাধারণ জাতের তুলনায় এটি গড়ে ১৫ শতাংশ বেশি ফলন দিতে সক্ষম, যা বাংলাদেশের মতো ধান নির্ভর কৃষিভিত্তিক দেশের উপযোগিতা অনেক। উৎকৃষ্টমানের এ জাতের ফলন হেক্টর প্রতি সাড়ে ৫ টন থেকে ৬ টন।

এতে উপস্থিত অ্যামাইলেজ নামক এনজাইমের পরিমাণ শতকরা ২৬ ভাগ, যা শরীরে শর্করা জাতীয় খাবারগুলোকে সহজে ভেঙে শরীরে শক্তি সরবরাহ ও হজম প্রক্রিয়ায় সাহায্য করে। আবার সাধারণ চালের তুলনায় এতে জিঙ্কের পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি, যা শিশু ও গর্ভবতী নারীদের জন্য বিশেষভাবে উপকারী। সুবাসযুক্ত ধানটি রান্নার সময় মনোহর সুবাস ছড়ায় ফলে ভোক্তাদের কাছে এর চাহিদা বাড়াবে। এছাড়া জলবায়ু সহনশীলতা ও রোগ-পোকা প্রতিরোধ ক্ষমতা থাকায় এটি দেশের বৈচিত্র্যময় পরিবেশে চাষের জন্য উপযোগী ও লাভজনক একটি জাত।

সার্বিক বিষয়ে জিএইউ ধান-৩ এর উদ্ভাবক ড. আইভী বলেন, আজকের বিশ্বে খাদ্যের পরিমাণের পাশাপাশি গুণগত মান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশের অপুষ্টি ও খনিজ ঘাটতি দূর করতে জিঙ্কসমৃদ্ধ ধান উদ্ভাবন একটি সময়োপযোগী পদক্ষেপ। জিএইউ ধান-৩ কেবল একটি নতুন জাত নয়, এটি পুষ্টি, উৎপাদন ও কৃষকের আর্থিক উন্নয়নের মাঝে একটি শক্ত সেতুবন্ধন।

গাকৃবির ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. জিকেএম মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, জিএইউ ধান-৩ শুধু একটি জাত নয়, এটি আমাদের কৃষি গবেষণার গৌরবময় প্রতীক। ভবিষ্যতের খাদ্যনিরাপত্তা ও পুষ্টির জন্য এটি অপরিসীম অবদান রাখবে।

বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2018-2025
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com