বাংলা৭১নিউজ, ঢাকা: সুন্দরবনের সুরক্ষার কথা মাথায় রেখেই রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে বলে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হলেও পরিবেশ ও বনমন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু জানিয়েছেন, এখনও ওই বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে পরিবেশগত ছাড়পত্র দেয়া হয়নি। পরিবেশমন্ত্রীর এমন বক্তব্য নিয়ে সরকার বিব্রত। তবে পরিবেশবাদিরা সরকারের তীব্র সমালোচনা করেছেন।
বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে এক প্রশ্নের জবাবে পরিবেশমন্ত্রী বলেন, “রামপালে নির্মিতব্য কয়লাভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের জন্য এখনও পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে কোনো পরিবেশগত ছাড়পত্র দেয়া হয় নাই।”
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের অধীন প্রকল্প হিসেবে ভারতের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে রামপালে নির্মিত হচ্ছে এই ১৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুত উৎপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন এ বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি।
সুন্দরবনের ইউনেস্কো ঘোষিত হেরিটেজ অংশ থেকে ৬৯ কিলোমিটার এবং সুন্দরবনের প্রান্তসীমা থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরে ‘মৈত্রী সুপার থারমাল’ নামের এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি নির্মাণ কাজ এগিয়ে চলছে।
এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপিত হলে বিশ্বের সর্ববৃহৎ ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবনের প্রাকৃতিক প্রতিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে- এমন দাবি করে এর বিরোধিতা করছে পরিবেশবাদী বিভিন্ন সংগঠন।
তবে, সে আশঙ্কা নাকচ করে সরকারের পক্ষ থেকে বার বারই বলা হচ্ছে, সুন্দরবনের সুরক্ষার কথা মাথায় রেখেই সেখানে বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের নেতা মহিদুল হক খান বলেন, পরিবেশগত ছাড়পত্র ছাড়া সরকার কেবল গায়ের জোরে জনমতের তোয়াক্কা না করে রামপাল বিদ্যূত কেন্দ্র নির্মাণের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এটা দেশবাসীর জন্য ভয়ানক পরিণতি নিয়ে আসতে বাধ্য।
এ প্রসঙ্গে পরিবেশবাদী সংগঠন সুন্দরবন ওয়াচ গ্রুপের আহবায়ক গৌরাঙ্গ নন্দী বলেন, পরিবেশগত ছাড়পত্র না নিয়ে সরকার রামপাল বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণ করতে গিয়ে বেআইনি কাজ করছে। তাছাড়া ছাড়পত্র পেলেও প্রকল্পটি নিয়ে পরিবেশবাদী ও জনমতকে অগ্রাহ্য করা অনুচিত।
আজ জাতীয় সংসদের অদিবেশনে জাতীয় পার্টির সদস্য এ কে এম মাঈদুল ইসলামের প্রশ্নের জবাবে পরিবেশমন্ত্রী বলেন, “রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য এনভায়রনমেন্টাল ইমপ্যাক্ট সেসমেন্ট (ইআইএ) প্রতিবেদনে প্রস্তাবিত প্রতিষেদক পরামর্শ যথাযথভাবে বাস্তবায়িত হলে সুন্দরবনের ক্ষতি হওয়ার কোনো আশঙ্কা নেই।”
রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে সুন্দরবনের কোনো ক্ষতি হবে না দাবি করে তিনি বলেন, “এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ হলে স্থানীয় জনগণের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে, মানুষের ক্রয় ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে এবং সুন্দরবনের ওপর স্থানীয় মানুষের নির্ভরশীলতা হ্রাস পাবে।”
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ