ভারী বর্ষা আর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ডালিয়া পয়েন্টে মৌসুমের সর্বোচ্চ পর্যায়ে বৃদ্ধি পেয়েছে তিস্তার পানি। এতে প্লাবিত হয়েছে নিম্নাঞ্চল। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ৪৫টি গ্রামের প্রায় ১৫ হাজার পরিবার। বিকেলের মধ্যে পানি না কমলে আরও কিছু এলাকা প্লাবিত হতে পারে।
তিস্তা ব্যারাজে নিয়োজিত পানি পরিমাপক নূরুল ইসলাম জানান, দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজে বিপৎসীমা ধরা হয় ৫২ দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার। সেখানে আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় পানিপ্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২ দশমিক ৩০ সেন্টিমিটার, অর্থাৎ বিপৎসীমার ১৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর আগে সকাল ৬টায় পানির প্রবাহ ছিল ৫২ দশমিক ২৬ সেন্টিমিটার।
বুধবার সকাল ৬টা থেকে টানা ২৪ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ওপরে দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় নীলফামারীর বিস্তীর্ণ নিম্নাঞ্চলে বন্যা দেখা দিয়েছে। এতে অন্তত ৪৫টি গ্রামের প্রায় ১৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। তলিয়ে গেছে রোপা আমনসহ নানা ফসলের ক্ষেত।
পানি উন্নয়ন বোর্ড ও স্থানীয় প্রশাসন বলছে, তিস্তা নদী সংলগ্ন এলাকাগুলোতে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। নদীপাড়ের বাসিন্দাদের নিরাপদে যেতে বলা হয়েছে।
তিস্তার দুই পাড়ের স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে নজরুল ইসলাম, টেপা মাহমুদ ও বিধান চন্দ্র রায় অভিযোগ করে বলেন, প্রতিবছরই বর্ষা মৌসুমে তিস্তার পানি নিয়ে তাদের আতঙ্কে দিন কাটাতে হয়। অথচ এর কোনো স্থায়ী সমাধান তারা পাচ্ছেন না। এ কারণে তারা ত্রাণের বদলে স্থায়ী সমাধান হিসেবে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছেন।
উপজেলার টেপাখড়িবাড়ী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম শাহিন বলেন, গত দুইদিনে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে তার ইউনিয়নের প্রায় দুইশ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। আজ বিকেলের মধ্যে পানি প্রবাহ না কমলে রাতে আরও বেশ কিছু গ্রাম প্লাবিত হতে পারে। প্লাবিত এলাকার পরিবারগুলোকে নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী বলেন, তিস্তার পানি গতকাল সকাল ৬টা থেকে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আজ তা মৌসুমের সর্বোচ্চ ৫২ দশমিক ৩০ সেন্টিমিটার রেকর্ড করা হয়। যা বিপৎসীমার ১৫ সেন্টিমিটার বেশি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ব্যারাজের সব কটি (৪৪টি) জলকপাট খুলে রাখা হয়েছে।
বাংলা৭১নিউজ/এসএস