এক সপ্তাহ টানা ভারী বর্ষণে কক্সবাজারের টেকনাফে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে দুই হাজার মানুষ। প্লাবিত হয়েছে প্রায় ৬০ গ্রাম। এরই মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ি এলাকায় বসবাসকারীদের সরে যেতে মাইকিং করা হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, টেকনাফ, সেন্টমার্টিন, হোয়াইক্যং, হ্নীলা ও সাবরাং ইউনিয়নের দুই হাজার মানুষ পানিবন্দি। মানুষের বসতঘরে পানি ঢুকে পড়েছে। রান্না করতে পারছে না অনেক পরিবার।
এছাড়া পাহাড়ি এলাকায় ধসের ঝুঁকি দেখা দিয়েছে। ফলে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং করে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে মানুষজনকে সরে যাওয়ার জন্য বলা হয়েছে।
অপরদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ২৪ ঘণ্টায় কক্সবাজারে ১৪৬ মিলিমিটার এবং টেকনাফে ১৪৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে, যা দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ।
হ্নীলা রঙ্গীখালী গ্রামের মো. হোসাইন বলেন, ভারী বৃষ্টিতে রঙ্গীখালী এলাকায় শতশত পরিবার এখন পানিবন্দি। প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে একই অবস্থা হয়। বৃষ্টিপাত ও জলাবদ্ধতার কারণে এ এলাকায় জীবন-জীবিকা, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা ও স্বাভাবিক চলাচল ব্যাহত হয়।
সেন্টমার্টিনের বাসিন্দা তৌহিদ হোসেন বলেন, সাগর উত্তাল ও জোয়ারের কারণে দ্বীপের কয়েকটি গ্রামে পানি ঢুকে পড়ছে। এছাড়া টানা বৃষ্টিতে দ্বীপের ভেতর চলাচলের রাস্তার পাশে বা বিভিন্ন জায়গা থেকে দ্রুত পানি চলে যাওয়ার ব্যবস্থা না থাকায় এ সমস্যা দেখা দিয়েছে।
সাবরাংয়ের বাসিন্দা আবুল কালাম বলেন, আমাদের এলাকায় অনেকেই দুদিন ধরে না খেয়ে আছে, জরুরি সহায়তা প্রয়োজন।
হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ আলী বলেন, রঙ্গীখালী এলাকায় অন্তত ৩০০ -৪০০ পরিবার পানিবন্দি। সেখানে পানি নিষ্কাশনে ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে কাজ চলছে।
হোয়াইক্যং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুর আহমেদ আনোয়ারী বলেন, পাহাড়ি এলাকায় ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসকারীদের সরে যেতে মাইকিং করা হয়েছে। হোয়াইক্যং ইউনিয়নে যেসব গ্রামে পানিবন্দি পরিবার রয়েছে, সেখানে ত্রাণ সহায়তা দেওয়া হবে।
এ বিষয়ে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহেসান উদ্দিন বলেন, সেন্টমার্টিন ও টেকনাফসহ যেসব গ্রাম প্লাবিত হয়েছে সেখানের জন্য ১৫ টন ত্রাণ সহায়তা বরাদ্দ করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ি এলাকার বাসিন্দাদের মাইকিং করে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যাওয়ার জন্য বলা হয়েছে।
বাংলা৭১নিউজ/জেসি