বাংলা৭১নিউজ,ডেস্ক: সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের ফুটবলে বসুন্ধরা কিংসের নাম বেশ শোনা যাচ্ছে।গেল বছর চ্যাম্পিয়নশিপ লিগ অর্থ্যাৎ দ্বিতীয় সারির লিগ চ্যাম্পিয়ন দলটি এবার ফেডারেশন কাপের ফাইনালে।
কিন্তু কিভাবে? দলবদলের শুরু থেকে একের পর এক চমক দিতে শুরু করে এই দলটি।পাঁচ শতাধিক সমর্থক ফুটবলারদের নিয়ে উপস্থিত হয়েছিল মতিঝিলের বাফুফে ভবনে।তিন বিদেশিসহ ৩২ জন ফুটবলারকে সই করায় বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের নবাগত ক্লাবটি।
স্প্যানিশ কোচ অস্কান ব্রুজনকে নিয়োগ দেয়।২০১৮ বিশ্বকাপ খেলা কোস্টারিকার ড্যানিয়ের কলিন্ড্রেসকেও কেনে ক্লাবটি।
কিন্তু এর পেছনে মালিকপক্ষের লক্ষ্য কী?
ক্লাবটির সভাপতি ইমরুল হাসান বিবিসি বাংলার প্রতিবেদককে বলেন, দেশের ফুটবলে দর্শক নিয়ে আসা মূল লক্ষ্য তাদের।”মূলত আমরা যেটা চাই সেটা হলো ফুটবলের সামগ্রিক উন্নয়ন এবং দেশের ফুটবলে দর্শক নিয়ে আসা। আমরা অনেকবারই এবিষয়ে ভেবেছি।”
তবে ক্লাবের নিজস্ব উদ্দেশ্য নিয়েও কথা বলেন মি: ইমরুল।ক্লাবের প্রাথমিক লক্ষ্য বাংলাদেশে প্রভাব বিস্তার করে দক্ষিণ এশিয়ার ফুটবল ক্লাবগুলোর সাথে টক্কর দেয়া।
এটা দেশের ফুটবলে নতুন নয়, এর আগে শেখ জামাল, শেখ রাসেলের মতো ক্লাবগুলোও এমন হুট করে এসে আঞ্চলিক বা মহাদেশীয় ক্লাব পর্যায়ে খেলার চেষ্টা করেছে।
বসুন্ধরা কিংসের সভাপতি ইমরুল হাসান যোগ করেন, সামনের দিকে দুটো প্রকল্প আছে বসুন্ধরা কিংস কর্তৃপক্ষের। একটি একাডেমি ও একটি স্পোর্টস কমপ্লেক্স।
তবে অতীতে এমন প্রতিশ্রুতি শোনা গিয়েছিল অন্য ক্লাবগুলোরও যারা বেশ বড় পরিসরে জাতীয় ফুটবলে আসে এবং আর সামনের দিকে এগোয় না।
সাইফ স্পোর্টিং ক্লাব গেল মৌসুমে বেশ শোরগোল ফেলেছিল। এবারে বিনিয়োগে খুব একটা আগ্রহ ছিল না দলটির।
সাইফ স্পোর্টিং ক্লাবের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিবিসি বাংলাকে বলেন, বিনিয়োগে আসলে খুব পার্থক্য ছিল না। মূলত ঘরোয়া ফুটবলের মাঝারি মানের ফুটবলার দলে টানাই মূল লক্ষ্য ছিল দলটির।
তবু গত মৌসুমে যেসব লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে দলটি গড়ে তোলা হয় প্রথম সারির ফুটবলের জন্য সে লক্ষ্য অর্জন থেকে বেশ দূরেই আছে ক্লাবটি।
মি: চৌধুরী বলেন, “টোটাল সিস্টেমের পরিবর্তন না ঘটলে দু-চারটা ক্লাব এটা করতে পারবে না। এতো বিনিয়োগ করলেও উন্নতি আসবে না সেক্ষেত্রে। অন্যান্য সরকারি ও ফুটবল ফেডারেশনের সমর্থন পেলে বিনিয়োগটা সার্থক হতো।”
আবাহনী ও মোহামেডান, শুনলেই যেন বাংলাদেশের ফুটবলের জৌলুস ফুটে উঠতো একটা সময়।সময়ের বিবর্তনে যা ম্লান হতে চলেছে।
শেষবার আবাহনী – মোহামেডান জমজমাট লড়াই ছিল প্রায় ১০ বছর আগে।২০০৯ সালের বাংলাদেশ সুপার কাপের ফাইনাল দেখতে মাঠে জড়ো হয়েছিল প্রায় ৪০ হাজার মানুষ।
এরপর দেশের ফুটবলে বেশ সাড়া ফেলে দুটো দল, শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব ও শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র।২০১০-১১ মৌসুমে শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব শিরোপা জেতে।এরপর ২০১২ সালে আবাহনী শিরোপা পায়।
তবে ২০১২-১৩ মৌসুম থেকে ২০১৫ পর্যন্ত টানা তিন মৌসুমের দুটি শিরোপা পায় শেখ জামাল ও একটি শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র।স্পষ্টতই দু’দলের বিনিয়োগের ফলাফল পায় তারা।
কিন্তু ২০১৬ সালের পর থেকে আবারো মাঝারি মানের দল গড়া শুরু করে এই দুটি দল।ক্লাব চ্যাম্পিয়নশিপ ও নিয়মিত খেলা চালিয়ে যাওয়া বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের অভ্যন্তরীন রাজনীতিতে প্রভাব ফেলে।
কিন্তু হঠাৎ সাড়া ফেলে উধাও হয়ে যাওয়ার পেছনে কী থাকতে পারে? ২০১০ সালের পর ফুটবলে বিনিয়োগ করা বড় নামগুলোর একজন শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের চেয়ারম্যান মনজুর কাদের।তিনি পরবর্তীতে ২০১৬ সালে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন নির্বাচনে অংশ নেন।
কিন্তু কাজী সালাউদ্দিনের কাছে হেরে যান তিনি।এরপর শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব ফুটবলে বিনিয়োগ অনেক অংশেই কমিয়ে আনে।
ক্লাবটির ফুটবল কমিটির প্রধান আশরাফউদ্দিন চুন্নু বিবিসি বাংলাকে অবশ্য বলেন, বিনিয়োগ কমেছে ঠিক কিন্তু এর সাথে রাজনীতির কোনো সম্পর্ক নেই।
“প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্লাবগুলোতে পলিটিক্সের সুযোগ কম, এখানে কাউন্সিলরশিপ নিয়ে নাড়াচাড়া কম হয়। এখানে যে ১১-১২টি দল নিয়মিত খেলে তারা ফুটবলের উন্নয়নের জন্য লড়ছে এটা রাজনৈতিকভাবে কোনো প্রভাব বিস্তার করে না। সূত্র: বিবিসি বাংলা।
বাংলা৭১নিউজ/এসএম