বাংলা৭১নিউজ, ঢাকা: কথাসাহিত্যিক ও ‘লাল সালু’ ঔপন্যাসের জনক সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহর সম্পত্তি প্রতারণা ও জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে আত্মসাতের অভিযোগে ঢাকার একটি আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
রোববার ওয়ালীউল্লাহর একমাত্র ছেলে ফ্রান্স ও বাংলাদেশের দ্বৈত নাগরিক ইরাজ ওয়ালীউল্লাহ ঢাকর চিফ মেট্রোপলিন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ মামলাটি দায়ের করেন। ঢাকা মেট্রোপলিন ম্যাজিস্ট্রেট সত্যব্রত শিকদার বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে মামলাটি সিআইডিকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার আসামিরা হলেন- প্রয়াত সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহর আপন মামাতো ভাই কামাল জিয়াউল ইসলাম ওরফে কেজেড ইসলাম (৮২), জিয়াউল ইসলামের স্ত্রী খাদিজা ইসলাম (৬৯) ও ছেলে রায়হান কামাল (৩২)।
মামলায় বাদীপক্ষে যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর রানা দাস গুপ্ত ও ঢাকা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি কাজী মো. নজিবউল্ল্যাহ হিরু মামলাটি পরিচালনা করেন। মামলার শুনানির সময় ওয়ালীউল্লাহর মেয়ে সিমির ওয়ালীউল্লাহও আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, ১৯৬২ সালের ১১ এপ্রিল জনৈক মোহাম্মাদ আশরাফ আলী গুলশান আবাসিক মডেল টাউনের ৯৬ নং রোর্ডের, সিইএন (বি) ব্লাকের ১০নম্বর প্লটের ২২ কাঠা সম্পত্তি তৎকালীন ডিআইডি বর্তমান রাজউকের কাছ থেকে লিজ গ্রহণ করেন। যা ডিআইটির অনুমতি নিয়ে ১৯৭০ সালের ১২ মার্চ সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহর নামে রেজিস্ট্রি দলিল মূলে হস্তান্তর করা হয়। ১৯৭০ সালের ১০ অক্টোবর ৪৯ বছর বয়সে সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ মৃত্যুবরণ করেন।
এরপর ওয়ালীউল্লাহর স্ত্রী আন ম্যারি ওয়ালীউল্লাহ ওরফে আজিজা নাসরিন ও তার দুই সন্তানের নামে নাম জারি হয়। পরবর্তীতে আসামি উক্ত সম্পত্তি ব্যবস্থাপনার কথা বলে ছলচাতুরির আশ্রয় নিয়ে ১৯৮১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর বাদী, তার মা ও বোনের কাছ থেকে একটি সাধারণ আম-মোক্তারনামা গ্রহণ করেন।
কিন্তু আসামিরা ১৯৮১ সালের ৫ মে ওই আম-মোক্তারনামা দেখিয়ে সেখানে সম্পত্তি বিক্রয় এবং সাধারণ বিমা কর্পোরেশনের কাছে সম্পক্তি বন্ধক প্রদানের ক্ষমতা অর্পিত মর্মে উল্লেখ করে নেন। সে অনুযায়ী আসামি জিয়াউল ইসলাম সাধারণ বীমা কর্পোরেশনের কাছ থেকে বাদী ও তার পরিবারের অজ্ঞাতে ওই সম্পক্তি বন্ধক রেখে ঋণ গ্রহণ করেন।
আম-মোক্তারনামায় মালিকের স্বার্থ যথাযথভাবে সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনার কথা থাকলেও কামাল জিয়াউল ইসলাম, তার স্ত্রী ও ছেলের সঙ্গে যোগসাজশে প্রতারণার মাধ্যমে ওই ভবন ও জমির মালিক সেজে তা আত্মসাৎ করার জন্য তাদের নিজস্ব প্রতিষ্ঠান ‘নির্মাণ বিল্ডার্স’কে দিয়ে সেখানে বহুতল ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছেন। ওই আমমোক্তারনামা পাওয়ার আগে আসামিরা পরস্পর যোগসাজসে জালিয়াতির মাধ্যমে আরেকটি আম-মোক্তারনামা তৈরি করে ওই জমি ও ভবন বন্ধক দিয়ে ঋণ নেন এবং পরে আবার তা ফিরিয়ে দেন। অথচ জমি ও ভবনের প্রকৃত মালিকরা ওই ক্ষমতা দিয়ে কোনো আম-মোক্তারনামা তাদের দেননি।
বাংলা৭১নিউজ/জেএস