বাংলা৭১নিউজ, ঢাকা: বড় বোন সুরাইয়া আক্তার রিশার মত চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র রবি আর প্রথম শ্রেণির তিশাও পড়তো রাজধানীর উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুলের শিক্ষার্থী। বোনের মৃত্যুর পর তারা স্কুলে যাচ্ছে না। কারণ, ভয় আর আতঙ্ক ঘিরে ধরেছে তাদের অভিভাবকদেরকে। এক সন্তানকে হারিয়ে অন্য দুই সন্তানকে নিয়ে ঝুঁকি নিতে চাইছেন না বাবা মা।
মঙ্গলবার পুরান ঢাকার সিদ্দিকবাজারের বাসায় দুই ভাইবোন রবি আর তিশাকে দেখা গেলো। বাড়ির আঙ্গিনাতেই পাওয়া গেলো তাদের। জানতে চাইলে তিশা বলে, ‘আমরা আর স্কুলে যাব না। ওখানে কোন নিরাপত্তা নেই।’
গত ২৪ আগস্ট স্কুলে এসে আর বাড়ি ফেরা হয়নি রিশার। স্কুলের পাশের ফুটওভার ব্রিজে বখাটের ছুরিকাঘাতে আহত হওয়ার পর রবিবার হাসপাতালে প্রাণ হারায় রিশা। সেই থেকে এই হত্যার বিচার চেয়ে আন্দোলন চালিয়ে আসছে তার স্কুলের শিক্ষার্থীরা।
সন্তান হারানোর বেদনায় একেবারেই ভেঙে পড়েছেন রিশার বাবা-মা। ছোট বোন সাত বছরের তিশা আর ১০ বছরের ভাই রবিও কেবল কাঁদছে। সেই দিন থেকেই আর স্কুলে আসছে না কেউ।
রিশার স্বজনরা জানান, সন্দেহভাজন খুনি ওবায়দুল প্রায়ই উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুলের পাশাপাশি রিশাকে উত্ত্যক্ত করতে তাদের বাড়ি পর্যন্ত চলে যেতো।
রিশার মামা কামাল উদ্দিন মুন্না জানান, রিশাকে ওবায়দুল প্রথমে প্রেমের প্রস্তাব দিয়েছিল। ওই প্রস্তাব প্রত্যাখান করায় সে ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা মিলে রিশাকে ছুরিকাঘাত করেছে।
ওবায়দুলের সঙ্গে আরো কারা কারা ছিল জানতে চাইলে কামাল উদ্দিন বলেন, নাম জানি না। তবে আরও দুইজন ছিল বলে আমরা জানতে পেরেছি।
রিশা যখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তখন তার মা তানিয়া হোসেন রমনা মডেল থানায় ওবায়দুল খানকে একমাত্র অভিযুক্ত করে মামলা করেন। তবে ঘটনার সাতদিন পার হলেও পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি।
রবিবার রিশার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে এই হত্যার বিচারের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে আসছে উইলস লিটিল ফ্লাওয়ারের শিক্ষার্থীরা। আসামি ওবায়দুলকে গ্রেপ্তারে পুলিশের ৪৮ ঘণ্টার আশ্বাস শেষ হয়েছে এরই মধ্যে।
জানতে চাইলে রমনা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মশিউর রহমান বলেন, ‘আমরা এখনও পর্যন্ত অভিযুক্ত ওবায়দুলকে ধরতে পারিনি। তবে তার বোন দুলাভাইকে আটক করে ঠাকুরগাঁওয়ের স্থানীয় থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।’
তবে ওবায়দুলের বোন আর দুলাইভাকে আটক নিয়ে ভাবছে না রিশার স্বজনরা। তার মামা কামাল উদ্দিন মুন্না বলেন, ‘আমরা ওদের দিয়ে কি করব। ওবায়দুল আর তার সাঙ্গপাঙ্গদেরকে ধরতে হবে। যতদিন তারা গ্রেপ্তার না হবে ততদিন আন্দোলন চলবে।
বাংলা৭১নিউজ/সিএইস