শুক্রবার, ১০ মে ২০২৪, ১০:৩৯ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
‘ইসরায়েলগামী’ ৩ জাহাজে হুথির ড্রোন-ক্ষেপণাস্ত্র হামলা সিআইপি হলেন প্রাণ-আরএফএলের তিনজনসহ ১৮৪ ব্যবসায়ী হবিগঞ্জে দুই পক্ষের সংঘর্ষে তিনজন নিহত, আহত ৫০ জুয়া ও হুন্ডির কারণে মুদ্রাপাচার বাড়ছে: অর্থমন্ত্রী একনেকে সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকার ১০ প্রকল্প অনুমোদন ডলারের দাম বাড়ায় আমদানিতে প্রভাব পড়বে না: সালমান এফ রহমান খোলাবাজারে ডলার ১২৫ টাকা মাটিরাঙ্গায় সেনাবাহিনীর উদ্যোগে ঝুলন্ত সেতু নির্মাণ খাদ্যমন্ত্রীর বড় ভাই ধীরেশ চন্দ্র মজুমদার মারা গেছেন হবিগঞ্জে দুই পক্ষের সংঘর্ষে নিহত ২, আহত ৪০ প্রধানমন্ত্রীর কাছে ‘বিএফডিসি রেডি টু কুক ফিশ’ হস্তান্তর বগুড়ায় স্বামী-স্ত্রীর রহস্যজনক মৃত্যু গরু পাচারে বাধা দেওয়ায় কৃষককে গুলি করে হত্যা পূবালী ব্যাংকের মুনাফা বেড়েছে ৩০.৮৩ শতাংশ রোহিঙ্গাদের সহায়তায় আরও ৩ কোটি ডলার দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র ইসলামী ব্যাংকের হজ বুথ উদ্বোধন অধিকাংশ অভিযোগই স্বীকার করেছে মিল্টন : ডিবি প্রধান উপজেলা নির্বাচনে ৩৬ শতাংশ ভোট পড়েছে: ইসি আলমগীর ভারত তিস্তা প্রকল্পে অর্থায়নে আগ্রহী: পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরায়েল হামাস সংঘাত রাফার হাসপাতালগুলোও বন্ধ হওয়ার পথে

হিমাগারের ভাড়ায় দিশাহারা তানোরের আলু চাষিরা

বাংলা ৭১ নিউজ
  • আপলোড সময় শনিবার, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৮
  • ৪৮৬ বার পড়া হয়েছে

বাংলা৭১নিউজ, মমিনুল ইসলাম মুন, তানোর (রাজশাহী) প্রতিনিধি: রাজশাহীর তানোরে বস্তাপ্রতি হিমাগার মালিকদের অতিরিক্ত ভাড়া এবং বেপরোয়া সুদের হারে চরম দিশেহারা হয়ে পড়েছেন হিমাগারে আলু রাখা এলাকার চাষিরা। হিমাগার মালিকদের বেপরোয়া সিন্ডিকেটের কাছে একপ্রকার এলাকার আলুচাষিরা জিম্মি হয়ে পড়েছেন। মালিকদের এমন সিন্ডিকেটে কারণে লাভের চেয়ে লোকসান গুনতে হচ্ছে চাষিদের।

তথ্য অনুসন্ধনে জানা গেছে, শ্রমিকদের কথা বিবেচনা করে উচ্চ আদালত থেকে ৫০ কেজি বস্তার নির্দেশনা দেয় । সেই মোতাবেক এবারই প্রথম বারের মত হিমাগার মালিকরা ৫০ কেজির বস্তায় আলু রাখেন। যে চাষিরা হিমাগারের বস্তায় ৫০ কেজি আলু রেখেছেন বের করার সময় সে আলু ২থেকে৩ কেজি করে কম হচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।

বিগত বছর গুলোতে হিমাগারে ৮৫ থেকে ৯০ কেজি করে আলু রাখা হত। ভাড়া ধরা হত ৩৬৫ টাকা করে বস্তাপ্রতি । কিন্তু এবারে ৫০ কেজির বস্তায় ভাড়া ধরা হয়েছে ২৬৫ টাকা করে প্রতি বস্তায় । অবশ্য প্রথম দিকে হিমাগার মালিকরা ভাড়া কমের কথা বলে আলু নেন হিমাগারে । কিন্তু আলু নেবার পর ২৬৫টাকা ভাড়া নির্ধারণ করে। এতেই বেকায়দায় পড়ে যান আলু রাখা চাষি, ব্যক্তি ও ব্যবসায়ীরা।

এলকার একাধিক আলু চাষিরা জানান, আলু নেবার সময় হিমাগার মালিকরা বলেছিল বিগত সময়ে যে ভাড়া নেয়া হত তার আনুপাতিক হারে ভাড়া নেয়া হবে । কিন্তু হিমাগার মালিকরা চাষিদের জিম্মি করে ৫০কেজির বস্তায় ভাড়া নিচ্ছে ২৬৫টাকা করে । আবার যারা হিমাগারের বস্তায় আলু রেখেছেন তাদের আলু ২থেকে ৩কেজি করে কম হচ্ছে। আবার অনেকের বেশির ভাগ পচা আলু বের হচ্ছে। অবস্থাটা এমন যে হিমাগারের কাছে আলু রাখা ব্যক্তিরা চরম ভাবে জিম্মি।

এদিকে অনেক চাষি নিজের নামে আলু রাখতে পারেনা অন্যের বুকিংয়ে আলু রাখেন । তাঁরা হিমাগারে দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিদের সাথে যোগ সাজস করে আলু বিক্রি করে দিলেও যার আলু সে বুঝতেই পারেনা এমন ঘটনা প্রতিনিয়তই ঘটছে। যেন সিন্ডিকেট ছাড়া আলু কেনা বেচাই হয়না। আবার ক্রেতাদের কাছে একপ্রকার জিম্মি চাষিরা।

আলু কিনে সুটিংক করার নামেই করছে প্রতারনা। হিমাগারের সেটে আলু ডেলে নানা অজুহাতে প্রতিবস্তায় মিটানো দামের চেয়ে কম দেয়া হচ্ছে বিক্রেতাদের। এতে হিমাগারের কর্মকর্তাদের অভিযোগ দিয়েও কোন লাভ হয়না। কেননা তারা কর্মকর্তাদেরকে মাসিক উৎকুচ দিয়ে থাকে। এভাবে হিমাগার মালিকদের অতিরিক্ত ভাড়া আলু ক্রেতারা বিক্রেতা চাষিদের সাথে প্রতারণা করে চলেছে। ফলে বিশে^দরবারে সম্ভাবনাময় তানোরে আলুচাষিদের স্বপ্নকে দিন দিন দূর্বল করে দিচ্ছে। প্রতিবছর হারিয়ে যাচ্ছে  চাসিদের আসল পুজি। লাভবান হচ্ছে হিমাগার মালিক ও ফড়িয়া মোৗসুমি ব্যবসায়ীরা।

অথচ যে চাষি শরীরের রক্ত ঘাম পায়ে ফেলে আলু উৎপাদন করল তার আলু নিয়েই ফড়িয়া বা মৌসুমি ব্যবসায়িরা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে লাখ টাকার মালিক বনে যাচ্ছেন। মৌসুমি আলু ব্যবসায়ীরা চাষাবাদ না করলেও হিমাগারের সাথে যোগসাজশে আগেই বুকিং কেটে নেয়। যার কারণে আসল কৃষকরা ফড়িয়াদের মাধ্যমে আলু রাখতে বাধ্য হন । বছরের পর বছর জুড়ে এমন সনাতন নিয়ম চলে আসলেও কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়না ।

আবার সরকারের নীতিমালা লঙ্ঘন করে অধিক সুদে হিমাগার মালিকরা দিয়ে থাকেন ঋণ । নীতিমালায় ৯% এর ঊর্ধ্বে সুদ নেয়া যাবেনা উল্লেখ থাকলেও হিমাগার মালিকরা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ১৮% থেকে ২২% পর্যন্ত সুদ আদায় করছেন ।

হিমাগারে আলু রাখা উপজেলার প্রাণপুর গ্রামের সুমন, আজিুজুল ইসলাম জানান রহমান-২ হিমাগারে ৬০০ বস্তার মত আলু রাখা হয়েছে । আলু রাখার সময় তাঁরা ভাড়া নির্ধারণ না করলেও বের করার সময় বস্তাপ্রতি ২৬৫টাকা করে ভাড়া আদায় করছেন ।

লছিরামপুরগ্রামের এনামুল রহমান ১-২ তে আলু রেখেছেন ২হাজার বস্তা । আকচা গ্রামের মিরাজ আমান হিমাগারে আলু রেখেছেন ২৫০ বস্তার মত। শুধু এরা না যারাই আলু রেখেছেন তানোর উপজেলার ৫টি হিমাগারে ভাড়া ও অতিরিক্ত সুদের হারে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেন আলু রাখা একাধিক চাষিরা।

তাঁরা আরো বলেন, এক বিঘা জমিতে আলু রোপন থেকে শুরু করে উত্তোলন পর্যন্ত ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা করে খরচ হয় । কৃষকের রক্তঘামের ফসল নিয়ে ছিনিমিনি হলেও কৃষি বিভাগের বা প্রশাসনের কোন ধরনের নজরদারি নেই। কৃষকের রক্তঘামের ফসল নিয়ে শিল্পপ্রতিরা হচ্ছেন কোটিপতি । আর যে কৃষক ঋণ মহাজন করে ফসল উৎপাদন করলেন তাদেরকে বসতে হচ্ছে পথে ।

এ নিয়ে রহমান হিমাগারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও হিমাগার এসোসিয়েশনের জেলা সাধারণ সম্পাদক ফজলুর রহমান বলেন সংগঠনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

এনিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার চৌধুরী মোঃ গোলাম রাব্বী বলেন, এসব বিষয়ে কৃষকরা লিখিত অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে ।

বাংলা৭১নিউজ/জেএস

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৩ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com