সোমবার, ২৭ মে ২০২৪, ০৫:৩২ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
শ্রেষ্ঠ উদ্ভাবনী উদ্যোগের জন্য নির্বাচিত দপ্তর-সংস্থার মাঝে শিল্পমন্ত্রীর সনদ বিতরণ নিবন্ধিত সব সোনার দোকানে ইএফডি যন্ত্র বসাতে চিঠি কৃষির উন্নয়নে খাল খননের সুপারিশ ফায়ার সার্ভিসের চলমান সাফল্য ধরে রাখতে হবে: ডিজি ‘রিমাল’ মোকাবিলায় প্রস্তুতি নিয়ে যা জানালেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ক্যান্সারে আক্রান্ত জবি অধ্যাপকের মৃত্যু সোমবার চট্টগ্রাম শহরের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা ঘূর্ণিঝড় রেমাল: ঢেউয়ের তোড়ে প্রাণ গেলো যুবকের তেল আবিবে বড় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হামাসের ঘূর্ণিঝড়ে স্কুল বন্ধের সিদ্ধান্ত নেবে জেলার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি: শিক্ষামন্ত্রী পরিবারসহ বেনজীরের আরও ১১৩ স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি ক্রোকের নির্দেশ ‘পর্যটন কর্মীদের প্রশিক্ষণ দিতে মালয়েশিয়াকে স্বাগত জানানো হবে’ বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হচ্ছে তিনদিনের পর্যটন মেলা ঝুঁকিপূর্ণ ঈদযাত্রা বন্ধে কঠোর থাকবে হাইওয়ে পুলিশ : শাহাবুদ্দিন রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বিএসএমএমইউ ও আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির সাক্ষাৎ শপথ নিলেন ঝিনাইদহ-১ আসনের এমপি নায়েব আলী জোয়াদ্দার ঘূর্ণিঝড় রিমাল জলোচ্ছ্বাসে তলিয়ে গেছে সুন্দরবন এমপি আনারের আসন শূন্য ঘোষণা নিয়ে জটিলতা! ভাড়াটিয়ার রুমে তাস খেলা ও মাদক সেবনের জেরে বাড়িওয়ালাকে কুপিয়ে খুন সন্ধ্যা ৬টা থেকে উপকূল অতিক্রম করতে পারে রিমাল

হালতি বিলের বোরো ঘরে তোলা নিয়ে দুশচিন্তায় কৃষক

বাংলা ৭১ নিউজ
  • আপলোড সময় রবিবার, ৬ মে, ২০১৮
  • ৫৬৭ বার পড়া হয়েছে
Exif_JPEG_420

বাংলা৭১নিউজ, মোঃ মনজুর-ই-মওলা সাব্বির, নাটোর প্রতিনিধি: গত বছর বন্যায় ৯৩০ হেক্টর আমন ধান ডুবে নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলার হালতি বিলের কৃষকের ১১ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছিল। এবছর বোরো ধান রোপনের সময় হালতি বিলে সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় ২ হাজার বিঘা জমির ধানের চারা রোপন অনিশ্চিতা দেখা দিয়েছিল। এনিয়ে গনমাধ্যমে সচিত্র সংবাদ প্রচার হলে উপজেলা প্রশাসন খালের বাঁধ কেটে জলাবদ্ধতার পানি নিঙ্কাশনের ব্যবস্থা করলে কৃষকরা দেড় মাস দেরিতে হলেও ধান লাগানোর সুযোগ পেয়েছিল।

এবার আবার বোরো ধান কাটা মাড়াই মৌসুমে বৈশাখের ভারী বর্ষণে হালতি বিলের অধিকাংশ এলাকার নি¤œাঞ্চল পানি জমে আবার জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। হালতি বিলের কৃষকদের ধান চাষের সুবিদার্থে ৩৭ বছর আগে খনন করা একমাত্র সরকারী খাল দখল করে ভরাট করায় পানি নিঙ্কাশনের সব পথ বন্ধ থাকায় দফায় দফায় ভারী বর্ষণের পানি জমে নি¤œাঞ্চলে জলাবদ্ধতার স্থায়ী রুপ নিচ্ছে।

ফলে দফায় দফায় প্রবল বর্ষণের পানি জমে বিলের নি¤œাঞ্চলের লুটে পড়া শত শত বিঘা বোরো ধান জমে থাকা বৃষ্টির পানিতে হাবুডুবু খাওয়াসহ কিছু কিছু এলাকার বোরো ধান ডুবে গেছে এবং এক সপ্তাহে আগে কেটে রাখা ডুবে যাওয়া ধানের শীষে জমিতেই গাছ বেরিয়ে ক্ষতির মুখে পড়েছে অনেক কৃষক। একদিন পর পর দফায় দফায় বৃষ্টির কারনে বোরো ধান কাটা মাড়াই করে ঘরে তুলা নিয়ে মহা দুশচিন্তায় দিশেহারা হয়ে পড়েছে এ এলাকার হাজার হাজার কৃষক।

Exif_JPEG_420

এ দুর্ভোগ দুর্দশার মধ্যে অতিরিক্ত মজুরী দিয়েও মিলছে না ধান কাটা শ্রমিক। এবার বোরো ধানের বাম্পার ফলনের আশা করেছিল স্থানীয় কৃষক ও কৃষি বিভাগ। গত সোমবার থেকে প্রায় প্রতিদিনই দফায় দফায় ভারী বর্ষণে এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে এবং গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে বারনই নদীর পানি ১৪০ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে। শনিবার ও রবিবার সরেজমিন হালতি বিলসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে কৃষকদের সাথে কথা বলে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

সরেজমিনে গিয়ে আরোও দেখা যায়, ভারী বর্ষণে হালতি বিলসহ উপজেলার বিভিন্ন বিলের নি¤œাঞ্চল তলিয়ে যাওয়া বোরো ধান পানির নিচ থেকে কেটে পাড়ে তুললেও বহন করতে পারছে না কৃষকরা। ফলে এসব ধান গাছ পচে জমিতে ধানের শীষে গাছ বেরিয়ে নষ্ট হচ্ছে। খাজুরা ইউপি চেয়ারম্যান খলিলুর রহমান জানান, হালতি বিলের খাজুরা এলাকায় বৃষ্টির পানি জমে ভাটোপাড়া,মহিষডাঙ্গা,গৌড়িপুর,ধুলাউরি কয়েক শত কৃষকের প্রায় ৩০০ বিঘা জমির ধান হাবুডুবু খাচ্ছে।

মাধনগর ইউপি চেয়ারম্যামন আমজাদ হোসেন জানান, মাধনগরের জোয়ানপুর,ভট্রোপাড়া হালতি বিলে কয়েকশত বিঘা ধান জমে থাকা পানিতে ভাসছে।শনিবার থেকে আমরা হালতি খোলাবাড়িয়া এলাকার খালের বাঁধ কেটে পানি নিঙ্কাশনের ব্যবস্থা করার কাজ শুরু করেছি। হালতি বিলের বাঁশিলা গ্রামের কৃষক সালাম জানান, আমার ৭ বিঘা জমির ধান বৃষ্টির জমে থাকা পানিতে ভাসছে। পাটুল গ্রামের কৃষক শাজাহান জানান, আমার দেড় বিঘা জমির ধান ক্ষেতে পানি জমে আধা পাকা ধান কাটা শুরু করেছি।

হালতি বিলের আরেক কৃষক আব্দুস সালাম জানান, এক সপ্তাহে আগে ৩ বিঘা জমির ধান কেটে বহন করার সুযোগ না থাকায় বৃষ্টির পানিতে ডুবে ধানের শীষে গাছ বেরিয়ে যাচ্ছে। খাজুরার ভাটো পাড়া গ্রামের কৃষক আশরাফুল ইসলাম জানান, আমাদের এলাকার শতভাগ ধান পেকে গেছে এবং ধান গুলো ঝড়ে নুয়ে পড়া ক্ষেতে বৃষ্টির পানি জমে শীষ ভাসছে।

তবে পানির মধ্যে ভেসে থাকা ধান কাটতে অতিরিক্ত মুজুরী দিয়েও শ্রমিক মিলছে না। ফলে সময়মত ধানগুলো কাটতে না পারলে ক্ষেতেই নষ্ট হচ্ছে বলে তিনি দাবী করেন। তেঘরিয়া গ্রামের কৃষক আতিকুল ইসলাম বলেন, হালতি বিলের ২০ কিলোমিটার এলাকা জুরে একটি সরকারী খাল আছে সেই খাল দীর্ঘদিন থেকে সংস্কার না করায় প্রতিবছরের  জলাবদ্ধতার সমস্যা থেকে মুক্তি মিলছে না।

তেঘরিয়া গ্রামের আরেক কৃষক নছির আলী জানান, আমার কেটে রাখা বোরো ধান বৃষ্টির কারনে বহন করে আনতে না পারায় ১৩ বিঘা ধানের শীষে গাছ বেরিয়ে গেছে। উপজেলা কৃষি অফিসার আমিরুল ইসলাম জানান, এবার উপজেলায় মোট ৮ হাজার ৬৫৬ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে শুধু হালতি বিলে ৫ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে।

এবার সঠিক পরিচর্যায় বোরো ধানে রোগবালাই ছিল না এবং বাম্পার ফলন হওয়ার আশা ছিল। কিন্ত ভারী বর্ষণে নিচু জমিতে পানি জমে গেছে এতে ধান কাটতে কৃষকদের ব্যাপক সমস্যা হচ্ছে। তবে কৃষকদের যত দ্রুত সম্ভব পাকা ধান কেটে ঘরে তোলার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার রেজা হাসান জানান, হালতি বিলে ভারী বর্ষণে সৃষ্ট জলাবদ্ধতার পানি নিঙ্কাশনের জন্য ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নাটোর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ রফিকুল ইসলাম জানান, হালতি বিলে ভারী বর্ষণে বোরো ধানের জমিতে পানি জমলেও খরা হলে দুএকদিনের মধ্যে সেই পানি নেমে যাবে। এতে হালতি বিলের ধানের তেমন কোন ক্ষতি হবে না বলে তিনি দাবী করেন।

বাংলা৭১নিউজ/জেএস

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৩ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com