বিশ্ব রক্তদাতা দিবস আজ। প্রতিবছর ১৪ জুন এ দিবসটি পালিত হয়। দিবসটির মূল উদ্দেশ্য হলো গোটা বিশ্বের মানুষকে রক্তদানের বিষয়ে সচেতন করে তোলা, উদ্বুদ্ধ করা, মানুষের মধ্যে সংহতি ও সামাজিক সম্প্রীতি বৃদ্ধিতে রক্তদানের গুরুত্ব প্রচার, রক্তদানের ক্ষেত্রে অমূলক ভয় দূর করা, নতুন রক্তদাতা তৈরি করা এবং নিরাপদ রক্ত ব্যবহারে উৎসাহিত করা।
দিবসটি পালনের আরও একটি তাৎপর্য হলো ১৮৬৮ সালের এই দিনে জন্ম হয়েছিল নোবেলজয়ী জীববিজ্ঞানী কার্ল ল্যান্ডস্টিনারের। তিনি ১৯৩০ সালে এবিও ব্লাড গ্রুপ আবিষ্কারের জন্য নোবেল পুরস্কার পান।
জন্মদিনে তাকে স্মরণ ও শ্রদ্ধা জানাতে ১৪ জুন পালন করা হয় বিশ্ব রক্তদাতা দিবস। ২০০৪ সালে দিবসটি প্রথম পালিত হয়। সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও প্রতিবছর বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিবসটি পালিত হয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাবমতে, প্রতিবছর বিশ্বের ৯ কোটি ২০ লাখ মানুষ রক্ত দিয়ে থাকেন। তবে উন্নত বিশ্বে স্বেচ্ছায় রক্তদানের হার হাজারে ৪০ জন হলেও উন্নয়নশীল বিশ্বে হাজারে ৪ জনেরও কম।
একটি দেশের মাত্র ১ থেকে ৩ শতাংশ মানুষ নিয়মিত রক্তদাতা হলে সে দেশের রক্তের চাহিদা পুরোপুরি পূরণ করা সম্ভব। আমাদের দেশে তরুণের সংখ্যা ৫ কোটিরও বেশি। তার ১ শতাংশ যদি নিয়মিত রক্ত দেন, তাহলে বাংলাদেশ হয়ে উঠতে পারে বিশ্বের সেরা নিরাপদ রক্ত সরবরাহকারী একটি দেশ।
আর এই রক্তদান কেবল অন্যের জন্যে নয়, নিজের জন্যেও উপকারী। গবেষণা বলছে, নিয়মিত রক্তদানে শরীর নতুন রক্তকণিকা তৈরির সক্ষমতা বাড়ে, অস্থিমজ্জা সক্রিয় হয়, রক্তের প্রবাহ ভালো থাকে। এতে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে, শরীর থাকে চনমনে, এমনকি রক্তদানে মানসিক প্রশান্তিও বাড়ে। কারণ আপনি জানেন— রক্তদানের মতো মহৎ একটি ছোট্ট সিদ্ধান্তই হয়ে উঠতে পারে মুমূর্ষ কোনো রোগীর জীবনরক্ষাকারী সৎকর্ম।
তবে রক্তদানের এই পুরো প্রক্রিয়াটি নিরাপদ হওয়া জরুরি। মানসম্পন্ন ব্লাড ব্যাংকে গিয়ে রক্ত দিলে সেখানে WHO নির্ধারিত পাঁচটি জরুরি স্ক্রিনিং টেস্ট হয়—হেপাটাইটিস বি ও সি, সিফিলিস, ম্যালেরিয়া এবং এইচআইভি। এসব পরীক্ষায় উত্তীর্ণ রক্তই রোগীর জন্যে নিরাপদ।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ