বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫, ১২:৫৭ পূর্বাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ
আওয়ামী লীগ নিয়ে খবর প্রকাশ বা সোশাল মিডিয়ায় লেখাও কি নিষেধ? প্রধান উপদেষ্টাকে সম্মানসূচক ডি. লিট ডিগ্রি দিলো চবি প্রকৃতি ধ্বংস করে উন্নয়ন টেকসই হবে না : রিজওয়ানা হাসান চট্টগ্রামে জলাবদ্ধতা শূন্যে নামিয়ে আনার নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার ‘আমরা দুঃখিত সাম্য, তোমাকে নিরাপত্তা দিতে পারিনি’ শি জিনপিংয়ের সঙ্গে সরাসরি আলোচনা করতে চান ট্রাম্প পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে যমুনা অভিমুখে জবি শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা এ মুহূর্তে বাংলাদেশে পর্যাপ্ত খাদ্যশস্য মজুত আছে : খাদ্য উপদেষ্টা চট্টগ্রাম বন্দর দেশের অর্থনীতির হৃৎস্পন্দন: প্রধান উপদেষ্টা গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় নিহত আরও ৫১

বিলুপ্তির অধ্যাদেশ বাতিলে চলছে কর্মবিরতি, স্থবির এনবিআর

বাংলা৭১নিউজ ঢাকা:
  • আপডেট সময় বুধবার, ১৪ মে, ২০২৫
  • ২৭ বার পড়া হয়েছে

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বিলুপ্ত করে দুটি পৃথক বিভাগে ভাগ করে জারি করা অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে তিন দিনের কর্মবিরতি চলছে ঢাকাসহ দেশের সব কাস্টম হাউস, শুল্ক স্টেশন, কর অঞ্চল ও ভ্যাট কমিশনারেট অফিসে।

তিনদিনের কর্মবিরতি প্রথম দিনে বুধবার (১৪ মে) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে এনবিআরের প্রধান কার্যালয় অনেকটাই ফাঁকা দেখা গেছে। কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অফিসে এলেও তারা কার্যক্রমে অংশ নিচ্ছেন না। রুমের সামনে কর্মবিরতি সাইনবোর্ড ঝুলছে। ফলে এনবিআরে কার্যত স্থবিরতা বিরাজ করছে।

এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের ব্যানারে তিন দিনের কর্মসূচি লেখা থাকার পাশাপাশি করদাতাদের উদ্দেশে বলা হয়েছে, সাময়িক অসুবিধার জন্য আমরা আন্তরিকভাবে দুঃখিত। সকাল থেকে বিভিন্ন সেবা গ্রহীতা এলেও তারা কোনো সেবা পাচ্ছেন না।

এ বিষয়ে আন্দোলনে থাকা একাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী বলেন, পরামর্শক কমিটির সুপারিশ এড়িয়ে ও স্টেকহোল্ডারসহ আমাদের মতামতকে উপেক্ষা করে সোমবার (১২ মে) রাতে গোপনীয়ভাবে অধ্যাদেশটি জারি করা হয়েছে।

খসড়া অধ্যাদেশ জারির পর থেকেই আমরা তার প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আমরা চাই, অধ্যাদেশটি বাতিল করে পরামর্শক কমিটি যে প্রতিবেদন দিয়েছে, সেই প্রতিবেদনের আলোকে সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা করে দেশের ভালোর জন্য নতুন অধ্যাদেশ জারি হোক। অবিলম্বে অধ্যাদেশ বাতিলের দাবি জানাচ্ছি। তা না হলে আমাদের কলমবিরতি চলবে এবং ভবিষ্যতে আরও কঠোর আন্দোলনে যাব।

তারা আরও বলেন, ইতোমধ্যে আমরা দেখেছি বিসিএস ট্যাক্সেস অ্যাসোসিয়েশনের বর্তমান সভাপতিসহ কিছু ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছেন। তারা ভিন্ন ক্যাডারের পক্ষে কাজ করছেন। তাদের বিরুদ্ধেও প্রতিবাদ চলছে। এরই মধ্যে ট্যাক্সেস অ্যাসোসিয়েশনের অন্তত ২০ জন নেতা পদত্যাগ করেছেন। আমাদের ন্যায্য দাবির বিপক্ষে যারাই কথা বলবেন, কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।

এর আগে মঙ্গলবার (১৩ মে) আগারগাঁও এনবিআরের সামনে ‘এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের’ ব্যানারে অবস্থান কর্মসূচি থেকে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এই কর্মবিরতি ঘোষণা দেন। দাবি আদায় না হলে ১৭ মে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলেও অবস্থান কর্মসূচিতে জানানো হয়।

সংগঠনের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত কমিশনার (কাস্টমস ও ভ্যাট) সাধন কুমার কুন্ডু বলেন, বর্তমান সরকারের সংস্কার কার্যক্রমের অংশ হিসেবে সোমবার অধ্যাদেশটি জারি হয়েছে। এই সংস্কারে সরকার যে কমিটি করেছে, সেখানে দেশের যোগ্য ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত করেছিলেন। কিন্তু সেই কমিটি যে প্রতিবেদন দিয়েছে তা প্রকাশ করা হয়নি। প্রত্যাশী সংস্থা হিসেবে আমরাও জানতে পারিনি। ভালো-মন্দ কিছুই জানতে পারিনি।

স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা হয়নি। তাদের সঙ্গে আলোচনা না করে, আমাদের মতামতকে উপেক্ষা করে সোমবার রাতে অনেকটা গোপনীয়ভাবে অধ্যাদেশটি জারি করা হয়েছে, যা অন্যান্য অধ্যাদেশের মতো নয়।

আমরা এর প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আমরা চাই, অধ্যাদেশটি বাতিল করে পরামর্শক কমিটি যে প্রতিবেদন দিয়েছে, সেই প্রতিবেদনের আলোকে সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা করে দেশের ভালোর জন্য, দেশের রাজস্ব ও মানুষের ভালোর জন্য নতুন অধ্যাদেশ জারি হবে। অধ্যাদেশ বাতিলের জন্য আমরা তিনদিনের কলমবিরতি দিয়েছি।

তাদের কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে— ১৪ মে বুধবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা, ১৫ মে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৩টা ও ১৭ মে শনিবার সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত সর্বস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কর্মবিরতি পালন করবেন। তবে কাস্টম হাউস ও শুল্ক স্টেশন দিয়ে আন্তর্জাতিক যাত্রীসেবা, আমদানি-রপ্তানি ও বাজেট– এই তিনটি কার্যক্রম চালু থাকবে। বাকি সব কার্যক্রম কলমবিরতির আওতায় বন্ধ থাকবে। আগামী ১৭ মে বিকেল ৩টায় পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

আন্দোলনে থাকা কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বলছেন, আমরা সরকারের সংস্কার কর্মসূচির ওপর আস্থা রাখি। সরকার খুবই সুন্দরভাবে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য একটি সংস্কার কার্যক্রমের প্রক্রিয়া হিসেবে সংস্কার কমিশন করেছে।

তেমনিভাবে রাজস্ব বোর্ড সংস্কারের জন্য একটি পরামর্শক কমিটিও করা হয়েছিল। তারা অন্যান্য কমিশনের মতো প্রতিবেদন দাখিল করেছে। আমরা সবাই পরামর্শক কমিটির প্রতিবেদন দেখতে পাইনি।

কারণ এটি প্রকাশ করা হয়নি। রাজস্ব সংস্কার কমিশনের সঙ্গে যারা ছিলেন, তাদের মতামতের প্রতিফলনও এই অধ্যাদেশে হয়নি বলে জানতে পেরেছি। কোনো ক্যাডারের বিরুদ্ধে বা বিপক্ষে প্রশ্নে আমাদের অবস্থান নয়। কারণ আমরা সবাই রাষ্ট্রযন্ত্রের অংশ হিসেবে কাজ করি।

আমাদের যে অধ্যাদেশটি হয়েছে, সেই অধ্যাদেশের ফরমেট অনুযায়ী ট্যাক্স এবং কাস্টমস ক্যাডারকে আমাদের সর্বোচ্চ পর্যায়ে পলিসি কন্ট্রিবিউশনে কন্ট্রিবিউট করার মতো অবস্থা নেই। সেখানে আমাদের কোনো ফাংশনাল অবস্থান দেখতে পাচ্ছি না। এই জায়গাতে আমাদের অবস্থানগত জায়গা।

নতুন অধ্যাদেশ জারির ফলে দীর্ঘদিনের রাজস্ব সংস্থা এনবিআরের অস্তিত্ব এখন আর থাকলো না। রাজস্ব খাত এখন থেকে ‘রাজস্ব নীতি বিভাগ’ ও ‘রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগ’— এই দুই ভাগে পরিচালিত হবে। এনবিআরের আওতায় থাকা কাস্টমস ও আয়কর ক্যাডারের কর্মকর্তারা এতে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।

অধ্যাদেশের খসড়া পর্যায় থেকেই কাস্টমস ও আয়কর ক্যাডারের কর্মকর্তারা প্রতিবাদ জানিয়ে আসছিলেন। কিন্তু সরকার তাদের মতামত উপেক্ষা করে প্রায় অপরিবর্তিত খসড়ার ভিত্তিতে চূড়ান্ত অধ্যাদেশ জারি করেছে। কেবল রাজস্ব নীতি বিভাগের কার্যপরিধিতে সামান্য পরিবর্তন আনা হয়েছে বলে জানা গেছে।

বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2018-2025
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com