মিয়ানমারে সামরিক নির্যাতনের মুখে প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশের কক্সবাজারে আশ্রয় নিয়েছে কয়েক লাখ রোহিঙ্গা। ধারণা করা হচ্ছে চলতি বছর বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সংখ্যা ১২ থেকে ১৩ লাখ পর্যন্ত হতে পারে, যাদের অন্তত ৫২ শতাংশ নারী ও শিশু।
সমস্যা সমাধানে রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে প্রত্যাবাসনই একমাত্র সমাধান বলে মনে করে বাংলাদেশ। এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, বাংলাদেশের নীতি হলো, তাদের (রোহিঙ্গাদের) ক্যাম্পের বাইরে স্থায়ী হতে না দেওয়া। আমাদের নিজেদেরই অনেক সমস্যা আছে। আমরা নতুন আরেকটা জনগোষ্ঠীর বোঝা বইতে পারবো না।
সম্প্রতি যুক্তরাজ্য সফরের সময় বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশের দোরগোড়ায় থাকা একটি সংকট- আপনি তাদের সাহায্যের জন্য কেন আরও বেশি কিছু করছেন না?- এমন প্রশ্নে ড. ইউনূস বলেন, আমরা? আমরা নিজেদের অভ্যন্তরীণ সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছি। এটা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দায়িত্ব।
তিনি বলেন, আমি আমার সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। আমি জাতিসংঘের মহাসচিবের সঙ্গে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করে এক লাখের বেশি রোহিঙ্গার সঙ্গে দেখা করেছি। কী করা উচিত সে বিষয়ে আলোচনা করেছি এবং এদের ফেরার জন্যে সহায়তা চেয়ে বিশ্বের প্রতি আহ্বান জানিয়েছি। সেক্ষেত্রে প্রত্যাবাসনই একমাত্র সমাধান। সবাই এখন শুধু খাবার ও অন্যান্য সহায়তা নিয়েই ব্যস্ত, কিন্তু এদের নিজ দেশে কীভাবে ফেরত পাঠানো যাবে, সে বিষয়ে কেউ আলাপ করছে না।
মিয়ানমারের সামরিক সরকারের কারণে তারা ফিরে যেতে ভয় পাচ্ছে। তাহলে আপনারা কেন রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে একীভূত করার চেষ্টা করছেন না?- এমন প্রশ্নে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সেটা কোনো সমাধান হবে না। ক্যাম্পের আশপাশে থাকা মানুষ রোহিঙ্গাদের প্রতি বিরূপ। কারণ, তারা দেখছে আন্তর্জাতিক সাহায্য কেবল রোহিঙ্গাদের জন্য আসছে, আর রোহিঙ্গারা যেন সহজেই বেঁচে আছে। যেখানে বাইরের লোকদের কঠোর পরিশ্রম করতে হচ্ছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের নীতিই হলো, তাদের ক্যাম্পের বাইরে স্থায়ী হতে না দেওয়া। আমাদের নিজেদেরই অনেক সমস্যা আছে। আমরা নতুন আরেকটা জনগোষ্ঠীর বোঝা বইতে পারবো না।
ড. ইউনূস আরও বলেন, আমরা তাদের জায়গা দিয়েছি। আমরা তো বলিনি যে তোমরা আসতে পারবে না। আমরা তো সীমান্ত আটকে দেইনি। আমরা তাদের গ্রহণ করেছি। তখন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় আশ্বাস দিয়েছিল, তারা দেখভাল করবে, তারা তাদের নিজেদের দেশে নেবে। এমনকি কোন দেশ কতজন নেবে, সেই সংখ্যাও ভাগ করা হয়েছিল।
বাংলা৭১নিউজ/এসএস