বাংলা৭১নিউজ, ডেস্ক: আইপিএলের মহাগুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে মুস্তাফিজুর রহমানের সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদকে হারিয়ে প্লে-অফে জায়গা করে নিয়েছে সাকিব আল হাসানের কলকাতা নাইট রাইডার্স (কেকেআর)। রোববার সানরাইজার্সকে ২২ রানে হারিয়েছে কেকেআর। অবশ্য মুস্তাফিজের দল আগেই প্লে-অফে জায়গা করে নেয়।
টস হেরে আগে ব্যাট করে নির্ধারিত ওভার শেষে ৬ উইকেটে ১৭১ রানের চ্যালেঞ্জিং স্কোর করে কলকাতা। জবাবে ২০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৪৯ রান করে সানরাইজার্স।
জয়ের জন্য ১৭২ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে সানরাইজার্সের দুই ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার ও শিথর ধাওয়ান দেখে-শুনে শুরু করেন। কলকাতার হয়ে ইনিংসের তৃতীয় ওভারে বোলিংয়ে আসেন সাকিব। কিন্তু ১ ছয় আর ১ চারে নিজের প্রথম ওভারে ১১ রান দেন এই বাঁহাতি।
২১ বলে ওয়ার্নার-ধাওয়ান জুটি থেকে আসে ২৮ রান। এরপরেই ১৬ বলে ১ ছয়ে আর ১ চারে ১৮ রান করে সুনিল নারিনের ঘূর্নিতে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফেরেন ওয়ার্নার। তবে এক প্রান্তে নমন ওঝাকে নিয়ে নিজের স্বভাবসুলভ আক্রমণাত্মক খেলতে থাকেন ধাওয়ান। এ সময় ৯ ওভারে ১ ইউকেটে স্কোর বোর্ডে ৭০ রান তোলে সানরাইজার্স। জয়ের জন্য শেষ ১১ ওভারে ১০২ রান প্রয়োজন ছিল ওয়ার্নার বাহিনীর।
এরপর দ্বিতীয়বারের মতো বোলিং আক্রমণে আসেন সাকিব। কিন্তু নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি তিনি। নিজের দ্বিতীয় ওভারে টাইগার অলরাউন্ডার দিলেন ১১ রান। এই ওভারের চতুর্থ বলে চার হাঁকিয়ে ২৮ বলে অর্ধ শতক পূর্ন করেন ধাওয়ান।
এর কিছুক্ষণ পরেই ধাওয়ানকে ৫১ রানে কুলদীপ যাদব ও নমন ওঝাকে (১৫) সাজঘরে ফেরান নারিন। যে কারণে ম্যাচে বেশ ভালোমতোই ফিরে আসে কলকাতা।
তবে ১৪তম ওভারে কুলদীপের বলে ২ ছয় ও ১ চারে ১৪ রান নিয়ে খেলায় ফেরার ইঙ্গিত দেয় যুবরাজ। কিন্তু নিজের তৃতীয় ওভারে ফিরে এসেই অতিরিক্ত খেলোয়াড় সতীশের হাতে যুবি (১৯) ক্যাচ আউটের শিকার বানিয়ে সাজঘরে ফেরান সাকিব। এরপরই দারুণ এক থ্রোতে দীপক হুদাকে (২) রান আউটের ফাঁদে ফেলেন এই বাঁহাতি।
এরপর ১৭তম ওভারে আবারো আক্রমণে সাকিব। মাত্র ৮ রান দিয়ে সানরাইজার্স ব্যাটসম্যানদের ক্রিজে বেঁধে রাখেন তিনি। এসময় জিততে দলটির আরো ১৮ বলে ৪৪ রানের দরকার পড়ে। শেষ দিনে নারিন ও জেসন হোল্ডারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের সুবাদে ১৪৯ রানেই আটকে যায় সানরাইজার্সের ইনিংস।
কলকাতার হয়ে নারিন তিনটি ও কুলদীপ নিয়েছেন দুটি উইকেট। সাকিব ৪ ওভারের স্পেলে ৩৪ রান দিয়ে ১টি উইকেট নিয়েছেন।
এর আগে রোববার ইডেন গার্ডেন্সে টসে হেরে আগে ব্যাটে নেমে ৩.৪ ওভারে স্কোর বোর্ডে ৩৩ রান জমা করেন কলকাতার দুই ওপেনার গৌতম গম্ভীর ও রবিন উথাপ্পা। এরপর ১৭ বলে ৪টি চারে ২৫ রান করা উথাপ্পা বারিন্দার স্রানের বলে উইলিয়ামসনের হাতে ধরা পড়েন।
কলকাতার দ্বিতীয় উইকেট পড়ে দলীয় ৪৮ রানের মাথায়। কলিন মুনরোকে (১০) ফেরান দীপক হুদা। কিন্তু একপান্ত আগলে রাখেন অধিনায়ক গম্ভীর। যদিও তিনিও কিছুক্ষণ পরেই (১৬) সেই হুদার বলে হেনরিকসের হাতে ধরা পড়ে সাজঘরে ফেরেন।
এরপর কিছুটা চাপে পড়ে কলকাতা। তবে চতুর্থ উইকেটে মনীষ পান্ডে ও ইউসুফ পাঠান দলকে টেনে তোলেন। এই দুই ব্যাটসম্যান উইকেটের সঙ্গে মানিয়ে নিয়ে দ্রুত স্কোর বোর্ডে রান তুলতে থাকেন। এই জুটিতে ৫.১ ওভারে ৫১ রান করেন তারা।
ইউসুফ-মনীষের বিধ্বংসী জুটি ভাঙতে সানরাইজার্স অধিনায়ক ওয়ার্নার ১১তম ওভারে বোলিংয় আক্রমণে আনেন মুস্তাফিজকে। নিজের প্রথম ওভারে মাত্র ৬ রান দেন তিনি। এরপর মুস্তাফিজের দ্বিতীয় ওভার থেকে দুটি চারে ১৪ রান নেন কলকাতার এই দুই ব্যাটসম্যান।
এসময় উইকেট পতনের জন্য সানরাইজার্স অধিনায়ক ওয়ার্নার ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে বোলারদের আক্রমণে আনেন। কিন্তু ১৪তম ওভারে করুণ শর্মার বলে ২ ছয় ও ১ চারে ১৯ রান নেন ইউসুফ পাঠান ও মনীষ পান্ডে।
অবশেষে ১৬তম ওভারে ইউসুফ ও পান্ডের মধ্যকার ৪৯ বলে ৮৭ রানের জুটি ভাঙেন ভুবনেশ্বর কুমার । এরপর কলকাতার ইনিংসে আঘাত হানেন মুস্তাফিজুর রহমান। জেসন হোল্ডারকে (৩) ফুল টস বলে হেনরিকসের হাতে ক্যাচ বানিয়ে সাজঘরে পাঠান এই বাঁহাতি।
এরপরই ব্যাট হাতে নামেন সাকিব। দেশের বাইরে তখনই দেখা মেলে বিরল এক দৃশ্যের। এক প্রান্তে বল করছেন মুস্তাফিজ আর অন্য প্রান্তে ব্যাট হাতে সাকিব। মুস্তাফিজের প্রথম বলে লেগ সাইটে ঠেলে দিয়ে সাকিব দুই রান নেন। যদিও পরের বলে আউট হওয়ার শঙ্কা থেকে মুক্তি পান টাইগার অলরাউন্ডার।
ম্যাচের শেষ দিকে ১৯তম ওভারে আবারো আক্রমণে আসেন মুস্তাফিজ। এসময় পরপর দুই বলে দ্য ফিজকে ডট দেন সাকিব। অবশ্য তৃতীয় বলে ১ রান নেন এই বাঁহাতি। নিজের শেষ ওভারে স্লোয়ার আর কাটারে মাত্র ৩ রান দেন ফিজ।
বাংলা৭১নিউজ/আরকে