বাংলা৭১নিউজ, মেহেরপুর: জেলার কৃষকরা এবার সবজি চাষের পাশাপাশি অর্থকরী সবজি হিসেবে পেঁপে চাষ করে সফলতা পেয়েছে। বেশ কয়েক বছর ধরে ধান, পাট, গম ভূট্টাসহ বিভিন্ন ধরনের ফসল চাষ করে মেহেরপুরের কৃষকরা একইভাবে লোকসান গুনেছে।
গত কয়েক বছরে মেহেরপুরে পেঁপে চাষ করে বেশ কয়েকজন পেঁপে চাষি লাভবান হয়েছে। তাদের লাভবান হওয়াতে উদ্বুদ্ধ হচ্ছে অনেকে পেঁপে চাষে। জাতিধর্ম নির্বিশেষে সবশ্রেণী পেশার মানুষের খাদ্য তালিকায সবজি হিসেবে পেঁপে প্রিয় তরকারি।
হোমিওপ্যাথিতে পেঁপে ক্যারিকা নামে পরিচিত। পেঁপে শাখাবিহীন সোজা গাছ। এটি ২০ থেকে ২৫ ফুট পর্যন্ত উচু হয়। চারা রোপনের পর ৪০ দিন বয়স হলেই গাছে ফুল আসে। দুইমাস বয়স থেকে ফল পাওয়া যায়। পানি জমে এমন স্থান বাদে সব ধরনের জমিতেই পেঁপে গাছ হয়। এই পেঁপে বর্তমানে মেহেরপুর জেলায় অর্থকরী ফল। বাণিজ্যিক ভিত্তিতে এখন পেঁপে চাষ হচ্ছে।
বড় ধরনের ঝড় হলে গাছ ভেঙ্গে পড়ে। একবিঘা জমিতে পেঁপে চাষ করে ৬০ হাজার টাকা পর্যন্ত লাভ করা যায়। মেহেরপুর জেলায় ২৬০ বিঘা জমিতে পেঁপে চাষ করা হয়েছে।
সদর উপজেলার আমঝুপিতে বেশ কয়েকজন পেঁপে চাষ করে লাভবান হয়েছে। এদের মধ্যে জিল্লুর রহমান অন্যতম। তিনি ১১ বছর ধরে তিনবিঘা জমিতে পেঁপে চাষ করে আসছেন। চলতি বছর তিনবিঘা জমিতে পেঁপে চাষে তার খরচ হয়েছে ২০ হাজার টাকা। এ পর্যন্ত একলাখ টাকার পেঁপে বিক্রি হয়েছে। এখনও দেড় লাখ টাকার পেঁপে বিক্রির আশা করছেন তিনি। ওই গ্রামের হোসেন আলী, বাবর আলী, রহমত হোসেন সহ অনেকেই পেঁপে চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন।
জিল্লুর রহমান জানান, গত ১০ বছর ধরে পেঁপে চাষে এ পর্যন্ত কোনবছর লোকসান হয়নি। এখন প্রতিদিনই জমি থেকে এক হাজার থেকে ১২শ টাকার পেঁপে বিক্রি করেন। বেশ কয়েকবছর ধান, পাট, তামাক, আলু ও অন্যান্য আবাদে লোকসানের মুখে পড়াতে পেঁপেচাষে ঝুঁকছে কৃষকরা।
মেহেরপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা চায়না পারভীন জানান, কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে এই পেঁপেচাষে। বড় ধরণের দুর্যোগে পেঁপেগাছ ভেঙ্গে না পড়লে লাভবান হওয়া যায় এই পেঁপে চাষে।
পুষ্টিগুণে ভরা পাকা পেঁপে রোগিদের জন্য উপকারী। কৃষকদের উৎপাদিত পেঁপে সরকারি পর্যায়ে ক্রয়ের ব্যাবস্থা করা হলে কৃষকরা আরও বেশী উৎসাহিত হবে পেঁপে চাষে।
বাংলা৭১নিউজ/এম