বাংলা৭১নিউজ, ঢাকা: এসএসসির বাংলা প্রথম পত্র পরীক্ষার সৃজনশীলের একটি প্রশ্ন একজন ‘লোভী চিকিৎসককে’ ঘিরে হওয়ায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া এসেছে এই পেশাজীবীদের কাছ থেকে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অধ্যাপক মো. টিটো মিঞা বৃহস্পতিবার সকালের ওই পরীক্ষার প্রশ্নপত্র নিয়ে মিডিয়ার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
ঢাকা বোর্ডের প্রশ্নপত্রের সৃজনশীলের ২ নম্বর প্রশ্নে বলা হয়, “জাহেদ সাহেব একজন লোভী ডাক্তার। অভাব ও দারিদ্র্য বিমোচন করতে গিয়ে তিনি সব সময় অর্থের পেছনে ছুটতেন। এক সময় গাড়ি-বাড়ি, ধন-সম্পদ সব কিছুর মালিক হন। তবুও তার চাওয়া পাওয়ার শেষ নেই। অর্থ উপাজনই তার একমাত্র নেশা। অন্যদিকে তাঁর বন্ধু সগীর সাহেব তাঁর ধন-সম্পদ থেকে বিভিন্ন সামাজিক জনকল্যাণমূলক কাজে ব্যয় করেন। তিনি মনে করেন, সুন্দরভাবে জীবনযাপনের জন্য বেশি সম্পদের প্রয়োজন নেই।”
এর আলোকে শিক্ষার উদ্দেশ্য এবং ‘শিক্ষা ও মনুষ্যত্ব’ নিয়ে কয়েকটি প্রশ্নের উত্তর করতে বলা হয় শিক্ষার্থীদের।
এই প্রশ্নের মধ্য দিয়ে সরাসরি একটি পেশার বিরুদ্ধে বলা হয়েছে বলে মনে করছেন বাংলাদেশ সোসাইটি অব মেডিসিনের সাধারণ সম্পাদক টিটো মিয়া।
এই অধ্যাপক বলেন, “পেশা উল্লেখ না করেও প্রশ্নটি করা যেত। যাদের জন্য প্রশ্নটি করা তাদের এই পেশা সম্পর্কে ধারণা নেই। এতে তারা এই পেশা সম্পর্কে বিরূপ ধারণা পাবে।”
বিষয়টি চিকিৎসকদের জন্য ‘অসম্মানজনক’ মন্তব্য করে ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের প্রশ্ন না হয় সে বিষয়ে কর্তৃপক্ষকে সতর্ক হওয়ার আহ্বান জানান টিটো মিয়া।
প্রশ্নকর্তার বিচার দাবি করেছেন রেজা আহমেদ নামে একজন চিকিৎসক।
ঢাকা মেডিকেল কলেজের সাবেক এই ছাত্র ফেইসবুকে লিখেছেন, “ডাক্তারদের নামে প্রশ্ন করে অপমান করে লেখার পিছনে ভারতে রোগী পাচারই মূল লক্ষ্য।”
চিকিৎসকদের বাইরে থেকেও প্রশ্নটি নিয়ে সমালোচনা হয়েছে।
নিজেকে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা অধিকার আন্দোলনের সংগঠক পরিচয় দিয়ে মো. এস কে তাহরাত লিওন ফেইসবুকে লিখেছেন,“ডাক্তার লোভী আর সব ভালো।
“কি অদ্ভুত ও মানসিক রোগাক্রান্ত চিন্তা প্রশ্নকর্তা ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের? সিস্টেমের পরিবর্তনের কোনো কিছু না করে উল্টা সিস্টেমে আরও প্যাঁচ লাগানোর ব্যবস্থা করতেছে।”
এই প্রশ্নপত্র প্রণয়নে জড়িতদের আগামী তিন দিনের মধ্যে খুঁজে বের করে উপযুক্ত শাস্তি প্রদান এবং চিকিৎসকদের কাছে প্রকাশ্য ক্ষমাপ্রার্থনায় বাধ্য করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশন (বিএমএ)।
তা না হলে চিকিৎসক ও চিকিৎসা পেশার ‘মান-মর্যাদা রক্ষায়’ যে কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে তাদের এক বিবৃতিতে।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ