মঙ্গলবার, ২২ জুলাই ২০২৫, ০২:৫৬ পূর্বাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ
চীনা বিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে কোনো পানি প্রত্যাহার হবে না : চীনা রাষ্ট্রদূত বিমান বিধ্বস্তের ঘটনা খতিয়ে দেখা হবে: আইন উপদেষ্টা প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত এক দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা বিমান দুর্ঘটনায় নিহত বেড়ে ১৯, আহত অন্তত ৫০ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় প্রধান উপদেষ্টার শোক ইশরাকের বক্তব্য নাসীরুদ্দীনের চেয়ে কয়েকগুণ নিচু লেভেলের: সারজিস প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্তে নিহত ১, হেলিকপ্টারে সিএমএইচে নেওয়া হয়েছে ৪ জনকে ইলিশের দাম বেশি হওয়ার কারণ সরবরাহ কম ও চাঁদাবাজি : উপদেষ্টা জুলাই যোদ্ধাদের জন্য সরকারি চাকরিতে কোটা থাকছে না: মুক্তিযুদ্ধ উপদেষ্টা সারের লাইসেন্স দেয়ার ক্ষেত্রে যোগ্যদের বিবেচনায় নেয়া হবে : কৃষি উপদেষ্টা

মুজিববর্ষ পালন ও ১০ হাজার ম্যুর‍াল নির্মাণে দুর্নীতি : ৬৪ জেলার নথি তলব

বাংলা৭১নিউজ ঢাকা:
  • আপডেট সময় সোমবার, ২১ জুলাই, ২০২৫
  • ১৭ বার পড়া হয়েছে

সারা দেশে মুজিব শতবর্ষ পালন ও শেখ মুজিবুর রহমানের ১০ হাজার ম্যুর‍াল নির্মাণের আর্থিক হিসাব চেয়ে ৬৪ জেলায় চিঠি দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে অনুসন্ধান টিম ওই নথিপত্র চেয়ে চিঠি দিয়েছে। রোববার (২০ জুলাই) দুদকের ঊর্ধ্বতন সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। অভিযোগ অনুসন্ধানে উপপরিচালকের নেতৃত্বে সাত সদস্যের একটি টিম অনুসন্ধানের দায়িত্ব পালন করছে।

৬৪ জেলা পরিষদ বরাবর পাঠানো চিঠিতে মুজিববর্ষ পালনে কত টাকা ব্যয় হয়েছে, ব্যয় করা মন্ত্রণালয়ের নাম, ব্যয়িত অর্থের পরিমাণ, ব্যয়ের সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তার নাম-পরিচয় জানতে চাওয়া হয়েছে।

একইসঙ্গে জেলায় কতগুলো ও কোথায় ম্যুরাল তৈরি হয়েছে, ম্যুরাল নির্মাণে কত টাকা খরচ হয়েছে ও ব্যয়ের সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তার পরিচয় জানতে চাওয়া হয়েছে। পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট বেশকিছু কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করেছে বলে জানা গেছে।

নথি তলবের চিঠিতে বলা হয়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার বোন শেখ রেহানাসহ অন্যদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে প্রায় চার হাজার কোটি টাকা ব্যয় করে শেখ মুজিবের জন্ম শত বার্ষিকী ‘মুজিববর্ষ’ পালন ও শেখ মুজিবের ১০ হাজারেরও বেশি ম্যুরাল ও ভাস্কর্য নির্মাণ করে ওই অর্থ অপচয় ও ক্ষতিসাধন করার অভিযোগ রয়েছে। এসব অভিযোগের সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে রেকর্ডপত্র পর্যালোচনা করা একান্ত প্রয়োজন। তাই রেকর্ডপত্র দ্রুত দেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।

গত ২ জানুয়ারি অনুসন্ধানের সিদ্ধান্তের বিষয়টি জানিয়েছিলেন দুদক মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন। ওই সময় তিনি বলেন, দেশজুড়ে শেখ মুজিবের অপ্রয়োজনীয় ভাস্কর্য নির্মাণের মাধ্যমে কয়েক হাজার কোটি টাকা অপচয় ও তছরুপ করার অভিযোগটি কমিশন থেকে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।

অন্যদিকে দেশজুড়ে মুজিব কিল্লা নির্মাণ, সংস্কার ও উন্নয়ন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক, সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার ও অন্যদের বিরুদ্ধে হাজার হাজার কোটি টাকা তছরুপ, অতিরিক্ত বিল দেওয়া, গভীর নলকূপের দুই-তৃতীয়াংশ বিকল ও বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগও অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতা হারানোর আগে দেশে শেখ মুজিবুর রহমানের ১০ হাজারের বেশি ম্যুরাল, ভাস্কর্য ও প্রতিকৃতি স্থাপন করে আওয়ামী লীগ সরকার। টানা ১৫ বছর ধরেই ভাস্কর্য, ম্যুরাল ও প্রতিকৃতি তৈরির মহোৎসবে মেতে উঠেছিল দলটি।

গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বড় আকারের ভাস্কর্য ও ম্যুরালগুলো ভেঙে ফেলা হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, অপ্রয়োজনীয় ম্যুরাল ও ভাস্কর্য তৈরিতে চার হাজার কোটি টাকা পর্যন্ত ব্যয় হয়ে থাকতে পারে। দেশে শেখ মুজিবের মোট এক হাজার ২২০টি ভাস্কর্য ও ম্যুরাল আছে।

বিভিন্ন দপ্তর থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, উল্লেখযোগ্য ভাস্কর্য ও ম্যুরালের মধ্যে খুলনা বিভাগে ২১টি, চট্টগ্রাম বিভাগে ১২টি, ঢাকা বিভাগে ৪১টি, বরিশাল বিভাগে তিনটি, ময়মনসিংহ বিভাগে পাঁচটি, রংপুর বিভাগে চারটি, রাজশাহী বিভাগে ৯টি এবং সিলেট বিভাগে একটি স্থাপন করা হয়।

এর বাইরেও কয়েক হাজার ভাস্কর্য-ম্যুরাল নির্মাণ ও স্থাপন করা হয়েছে। অন্যদিকে প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে মানুষ ও গবাদি পশু রক্ষায় সারা দেশে স্থাপন করা হয় আশ্রয়কেন্দ্র। প্রকল্প প্রস্তাবনায় বলা হয়েছিল দুর্যোগ-পরবর্তী সময়ে এসব ভবন সামাজিক অনুষ্ঠান, কমিউনিটি উন্নয়নের জন্য ব্যবহার করা হবে। পাশাপাশি ভবনের সামনের খোলা জায়গা ব্যবহার করা হবে খেলাধুলায়। সরকার এই প্রকল্পের নাম দিয়েছিল ‘মুজিব কিল্লা নির্মাণ, সংস্কার ও উন্নয়ন’ প্রকল্প।

২০১৮ সালের জুলাইয়ে দেশের ১৬ জেলায় ৫৫০টি মুজিব কিল্লা নির্মাণের সিদ্ধান্ত হয়। এর জন্য ব্যয় ধরা হয় প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা। মানহীন সামগ্রী দিয়ে নির্মিত এসব কিল্লা এরই মধ্যে ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।

অনেক স্থানে ভেঙে গেছে। কিছু কিছু জায়গায় লোকালয় থেকে অনেক দূরে নির্মাণের কারণে পরিত্যক্ত ভবনে পরিণত হয়েছে। অনেকগুলোর ক্ষেত্রে লাইট-ফ্যান কিংবা অন্য প্রয়োজনীয় জিনিস দেওয়া হয়নি। এমনকি কিল্লা নদীতে ভেঙে যাওয়ার মতো ঘটনাও ঘটেছে। সবমিলিয়ে পুরো প্রকল্পই প্রশ্নবিদ্ধ ছিল।

বাংলা৭১নিউজ/এসএন

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
© All rights reserved © 2018-2025
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com