রাজধানীর উত্তরায় র্যাব পরিচয়ে মোবাইল আর্থিক সেবা প্রতিষ্ঠান ‘নগদ’ এর এক প্রতিনিধির কাছ থেকে এক কোটি আট লাখ টাকা ডাকাতির ঘটনায় জড়িত চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি), উত্তরা বিভাগ ও উত্তরা পশ্চিম থানা পুলিশ।
পুলিশ জানায়, গ্রেফতারদের মধ্যে মূল পরিকল্পনাকারী গোলাম মোস্তফা বাংলাদেশ পুলিশের বহিষ্কৃত কনস্টেবল। গ্রেফতার শেখ মো. জালাল উদ্দিন ওরফে রবিউল বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বহিষ্কৃত সার্জেন্ট।
বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান উত্তরা বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মো. মুহিদুল ইসলাম।
গ্রেপ্তাররা হলেন- মো. হাসান (৩৫), গোলাম মোস্তফা ওরফে শাহিন (৫০), শেখ মো. জালাল উদ্দিন ওরফে রবিউল (৪৩), মো. ইমদাদুল শরীফ (২৮) ও মো. সাইফুল ইসলাম ওরফে শিপন (২৭)। এ সময় তাদের কাছ থেকে ৩৪ লাখ টাকা এবং ছিনতাইয়ের কাজে ব্যবহৃত একটি হাইয়েস মাইক্রোবাস জব্দ করা হয়েছে।
মো. মুহিদুল ইসলাম বলেন, ১৪ জুন সকাল সাড়ে ৮টার দিকে নগদের এক ডিস্ট্রিবিউটর প্রতিষ্ঠানটির চার কর্মচারীসহ উত্তরার ১২ নম্বর রোডের বাসা থেকে নগদের অফিসের উদ্দেশ্যে ১ কোটি ৮ লাখ ১১ হাজার টাকা নিয়ে রওয়ানা হন।
পথে ১২ ও ১৩ নম্বর রোডের সংযোগস্থলে একটি কালো হাইয়েস মাইক্রোবাসে করে আসা পোশাকে ‘র্যাব’ লেখা এবং মুখে কালো কাপড় বাঁধা সশস্ত্র ৬-৭ জন তাদের গতিরোধ করেন। তারা চারটি ব্যাগে থাকা সব টাকা ছিনিয়ে নেন এবং তিন কর্মচারীকে জিম্মি করে মারধর শেষে তুরাগ থানার ১৭ নম্বর সেক্টরে ফেলে রেখে পালিয়ে যান। উত্তরা পশ্চিম থানায় এ ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়।
তিনি বলেন, ডিবি ও থানা পুলিশ প্রযুক্তির সহায়তায় প্রথমে মাইক্রোবাসের চালক মো. হাসানকে খিলগাঁও থেকে গ্রেফতার করে। পরে তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী গাড়িটি জব্দ করা হয় ও মূলহোতা চাকরিচ্যুত পুলিশ সদস্য শাহিনকে উত্তরা এলাকা থেকে গ্রেফতার করে তার কাছ থেকে ১৩ লাখ ৩৪ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়। পরবর্তীতে আরও তিন সদস্য- ইমদাদুল শরীফ (৮ লাখ ৪ হাজার টাকা সহ), সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সার্জেন্ট জালাল উদ্দিন (৬৩ হাজার টাকা সহ) এবং সাইফুল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়।
মুহিদুল ইসলাম জানান, জালালের নিজের নামে ব্যাংকে জমা রাখা ১২ লাখ টাকা জব্দের আইনি প্রক্রিয়া চলছে। পুলিশ আরও জানায়, তাদের কাছ থেকে র্যাব ও পুলিশের নকল আইডি কার্ড, লাঠি, সিগন্যাল লাইট, সেনাবাহিনীর লোগোসহ মানিব্যাগ, বিভিন্ন ব্যাংকের চেকবই ও মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তাররা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বিভিন্ন সময়ে র্যাব ও পুলিশের পরিচয়ে দেশজুড়ে ডাকাতির কথা স্বীকার করেছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। গ্রেফতারদের বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। মামলার তদন্ত অব্যাহত আছে এবং বাকি আসামিদের ধরতে অভিযান চলছে।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ