রবিবার, ০৫ মে ২০২৪, ০১:৩৫ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম
তুরস্ক বাণিজ্য বন্ধ করায় ‘বড় বিপদে’ পড়তে যাচ্ছে ইসরায়েল উপজেলা নির্বাচন কুলাউড়ায় সংঘর্ষে দুই ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীসহ আহত ২০ বাবা ছিলেন বাসচালক মা দরজি, ছেলে লন্ডনের মেয়র ম্যাচিং না হলে প্রিজাইডিং অফিসারের আঙুলের ছাপে দেওয়া যাবে ভোট জম্মু-কাশ্মীরে বন্দুক হামলায় ভারতীয় বিমান সেনা নিহত, আহত ৫ তাপপ্রবাহ না বৃষ্টি, কেমন থাকবে আজকের আবহাওয়া সুন্দরবনে অল্প অল্প আগুন জ্বলছে, জোয়ারের অপেক্ষায় ফায়ার সার্ভিস ভেঙে গেল অনন্যা-আদিত্যর প্রেম! শাহজাহানপুরে স্বামীর সঙ্গে অভিমান করে নববধূর আত্মহত্যা খাগড়াছড়িতে বজ্রপাতে বসতঘরে আগুন লেগে মা-ছেলের মৃত্যু ঢাকায় আসছেন আইওএম মহাপরিচালক অ্যামি পোপ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে ডিসিও মহাসচিবের বৈঠক দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি আজ উজ্জীবিত বাংলাদেশের সামনে ভঙ্গুর জিম্বাবুয়ে এ জে মোহাম্মদ আলীর সম্মানে বন্ধ থাকবে সুপ্রিম কোর্টের বিচারকাজ টানা ৮ দফা কমার পর ফের বাড়লো সোনার দাম উপজেলা পরিষদ নির্বাচন সরকারের পাতানো ফাঁদ: আব্বাস আশুগঞ্জ বিদ্যুৎকেন্দ্রের ২ ইউনিটের উৎপাদন বন্ধ এবি ব্যাংকের লভ্যাংশ ঘোষণা রূপালী ব্যাংকের ঢাকা উত্তর বিভাগীয় ব্যবসায়িক সম্মেলন অনুষ্ঠিত রোববার দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা

৪৮ বছরেও মেলেনি স্বীকৃতি

বাংলা ৭১ নিউজ
  • আপলোড সময় বৃহস্পতিবার, ২৫ জানুয়ারী, ২০১৮
  • ৪৯৯ বার পড়া হয়েছে

বাংলা৭১নিউজ, জয়নাল আবেদীন জয়, উল্লাপাড়া (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি: তৎকালীন ইপিআর ( বর্তমান বিজিবি) চাকুরী ছেড়ে দেশ রক্ষায় সেকশন কমান্ডার হিসাবে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়ে গত ৪৮ বছরেও মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি মেলেনি এক বীর যোদ্ধার। বার বার যাচাই বাছাই আর প্রশাসনিক তদন্তে তার মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়ার স্বাক্ষ প্রমান পাওয়ার দীর্ঘদিনেও মিলছে না মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি আর সনদ। জীবনের শেষ বয়সে এসে মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি দাবী করে তিনি দিনের পর দিন ঘুরছেন মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রনালয় সহ সংশ্লিষ্টদের কাছে। কিন্তু তাতে কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। দিনের পর দিন অতিবাহিত হলেও আজো স্বীকৃতি মেলেনি মো.সেকেন্দার আলী (৭০) এর। তিনি সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার সড়াতলা গ্রামের মৃত আব্দুল আজিজের ছেলে। তার মুক্তিবার্তার নং ০৩১২০২০০৪১,ইপিআর নং ১৭৯৩৩। এই মুক্তিযোদ্ধার আকুতি বেঁচে থাকতে তার মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি নিয়েই মরতে চান।

 

জানা যায়,বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে তৎকালীন সময় ইপিআর (বর্তমান বিজিবি) চাকুরী ছেড়ে  সেকেন্দার আলী  মুক্তিযুদ্ধে পলাশডাঙ্গা যুব শিবিরের সেকশন কমান্ডার হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। এসময় তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের বিভিন্ন ট্রেনিংয়ের দায়িত্ব পালন করেন। যুদ্ধ পরর্বতী সময়ে তিনি মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে ১৯৭২ সালে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকের চাকুরী করে ২০০৯ সালে অবসর নিয়েছেন। পরর্বতী সময়ে মুক্তিযোদ্ধাদের লাল মুক্তিবার্তায় তার নামটি অজ্ঞাত কারনে বাদ পড়ে যায়। এর পর সেকেন্দার আলী লালমুক্তিবার্তায় তার নাম অর্ন্তভূক্তির জন্য বার বার আবেদন ও নানা চেষ্টা করে আসছেন। তিনি গেজেট এবং সনদের আবেদনের প্রেক্ষিতে স্বারক নং জামুকা /প্রশাসন/ডিও/০১ তাং ২০/০৩/২০১৪ইং তারিখে তিন সদস্য বিশিষ্ট যাচাই বাছাই তদন্ত কমিটি গঠন করে দেয়া হয়।  উল্লাপাড়ার সহকারী কমিশনার (ভূমি) কে আহবায়ক এবং উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা,উপজেলা একাডেমি সুপার ভাইজার কে তদন্ত কমিটির সদস্য করা হয়। তদন্ত কমিটি সরেজমিনে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সহ সে সময়ের মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে কথা বলে এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্রাদি পর্যালোচনা করে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে ১২-০৬-২০১৪ইং তারিখে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে। উল্লাপাড়ার তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ শামীম আলম তদন্ত কমিটির তদন্ত প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে গত ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৪ইং তারিখে স্বারক

নং০৫,৪৩,৮৮৯৪,০০৫,০৪,০০১,১৩৮৯৩,স্বারক নং ৩১,৫০,৮৮৯৪,০০২,০৫,০০১,১৪-১৫৩৯ তারিখ ১৫/০৯/২০১৪ইং স্মারকে সরেজমিনে প্রাপ্ত তদন্তে মো.সেকেন্দার আলীকে লাল মুক্তিবার্তায় এবং গেজেটে নাম উত্তোলনের জন্য মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের অতিরিক্ত সচিব এবং মাহাপরিচালক জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের কাছে সুপারিশ করেন। একই সাথে মুক্তিযোদ্ধা থানা কমান্ডার এবং ডেপুটি কমান্ডার সহ অন্যান্য মুক্তিযোদ্ধা গন, এই মুক্তিযোদ্ধার পক্ষে সুপারিশ করেন। গেজেটে নাম অর্ন্তভূক্তি প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মো.সেকেন্দার আলী বলেন,অস্ত্র হাতে যুদ্ধ করেছি। মুক্তিযোদ্ধাদের ট্রেনিং দিয়েছি। অথচ গেজেটে আমার নাম ওঠেনি। আমি চাকুরী শেষ করে অবসর নিয়েছি। ছেলে মেয়ে সব চাকুরী করে। মুক্তিযোদ্ধা সনদ আমার ছেলে মেয়েদের চাকুরীতে লাগবে না। জীবনের শেষ বেলায় এসে আমার মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি নিয়ে মরতে চাই। এই স্বীকৃতির জন্য মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রনালয় সহ বিভিন্ন দফতরে ঘুরে ঘুরে আমি এখন ক্লান্ত। একাধিক তদন্ত এবং স্বাক্ষী প্রমান,কাগজপত্র দাখিলের পরও আমার মুক্তিযোদ্ধা সনদ প্রাপ্তি আটকে আছে। তিনি দ্রুত তার সনদ প্রাপ্তির জন্য মানণীয় প্রধানমন্ত্রী সহ মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রনালয়ের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।

 

এদিকে সরকার সারা দেশে নতুন করে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই প্রক্রিয়া শুরু করলে ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ইং তারিখে উল্লাপাড়ায়জামুকার প্রেরিত তালিকায় ক্রঃ নং ডিজি  নং ১২৪৩৮৮ তে ৭ সদস্য বিশিষ্ট যাচাই বাছাই কমিটি কতৃকস্বাক্ষী প্রমান সাপেক্ষে সরাসরি মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে তাকে তালিকায় ভুক্তির অনুমোদন করা হয়।

এছাড়াও সেকেন্দার আলীর কাছে মহম্মদ আতাউল গণী ওসমানী এবং ৭নং সেক্টর কমান্ডার গিয়াস উদ্দিন চৌধুরীর স্বাক্ষর করা মুক্তিযোদ্ধা সনদ রয়েছে। উল্লাপাড়া মুক্তিযোদ্ধা সংসদরে খোদাই করা ভাস্কর্যে মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে তার ছবি সহ পরিচিতি রয়েছে। মুক্তিযোদ্ধা সংসদরে ফিরে দেখা একাত্তর গ্রন্থে তার ছবি সহ পরিচিতি সহ একাধিক তালিকায় তার নাম রয়েছে। মুক্তিযোদ্ধা সংসদ থেকে যে কোন অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে তাকে দাওয়াতও করা হয়।

 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উল্লাপাড়া মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার এবং পলাশডাঙ্গা যুব শিবিরের কোম্পানী কমান্ডার আলহাজ গাজী মো.খোরশেদ আলম বলেন, সেকেন্দার আলী একজন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা। তিনি তার সাথে যুদ্ধে অংশ নিয়ে পলাশডাঙ্গা যুব শিবিরের সেকশন কামান্ডার হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। মুক্তিবার্তা সহ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের বিভিন্ন ডকুমেন্টে তার নাম থাকলেও লাল মুক্তিবার্তায় এবং গেজেটে তার নামটি ওঠেনি। বিভিন্ন তদন্তে স্বাক্ষ প্রমান পাওয়ার পরও তিনি সনদ পাচ্ছে না। তিনি দ্রুত এই মুক্তিযোদ্ধার সনদ প্রাপ্তির দাবী  জানান।

 

সিরাজগঞ্জ জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সহকারী কমান্ডার যুদ্ধাহত বীরমুক্তিযোদ্ধা গাজী মো.সামছুল আলম জানান,সেকেন্দার আলী তার পাশের গ্রামের মানুষ। তিনি পলাশ ডাঙ্গা যুব শিবিরের সেকশন কমান্ডার হিসাবে সক্রিয় ভাবে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন।

 

বাংলা৭১নিউজ/জেএস

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরও সংবাদ
২০১৫-২০২৩ © বাংলা৭১নিউজ.কম কর্তৃক সকল অধিকার সংরক্ষিত।
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com