পানি সরবরাহ প্রক্রিয়া আরও উন্নত করার লক্ষ্যে ফের সীমান্তে বাঁধ নির্মাণ করছে চীন। উপগ্রহ চিত্রে দেখা গেল এমনটাই। ভারত-নেপাল-তিব্বত, এই ত্রিদেশীয় সীমান্তের কাছে তৈরি হচ্ছে বাঁধ। বৃহস্পতিবার এমনই এক স্যাটেলাইট ইমেজ প্রকাশ্যে আসার পর ছড়িয়েছে চাঞ্চল্য। ছবিটি বিশ্লেষণ করে দেখা দিয়েছে, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার কাছেই তা তৈরি হচ্ছে। তাতে অন্যান্য নদীর গতিপথ রুদ্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। পাশাপাশি ভারতের উপর চিনের নজরদারির বিষয়টিও ভাবাচ্ছে। খবর প্রতিদিনের সংবাদ অনলাইন।
বৃহস্পতিবার চীন সীমান্তে বাঁধ নির্মাণের একটি উপগ্রহ চিত্র টুইটারের মাধ্যমে প্রকাশ্যে এসেছে। তা বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে, ইয়ারলুং জাংবো নদী, যা নিম্ন অববাহিকায় অরুণাচলের মধ্যে দিয়ে সিয়াং ও অসমে ব্রহ্মপুত্র হয়ে নেমে এসেছে, তার দু’ধারে বাঁধ নির্মাণ করছে চীন। যদিও প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার পূর্ব ও পশ্চিম পাড়ের গ্রাম বরাবর এই নির্মাণ পরিকল্পনা ছিলই চীনের। তিব্বত সীমান্তে মাবজা জাংবো নদীর ধার দিয়ে তৈরি হচ্ছে বাঁধ। উপগ্রহ চিত্রের ভৌগলিক বিশ্লেষণ করে বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, ত্রিদেশীয় সীমান্তের মাত্র কয়েক কিলোমিটার দূরে উত্তর তীর বরাবর ৩৫০ থেকে ৪০০ মিটার দীর্ঘ তৈরি হওয়া বাঁধের উদ্দেশ্য এখনও অজ্ঞাত। তবে অনুমান, তার আশেপাশে বিমানবন্দর তৈরি হতে পারে।
শুধু বাঁধ নির্মাণই নয়, এই এলাকায় চীনা ফৌজের আনাগোনাও বাড়ছে। সেনা ঘাঁটি তৈরি হচ্ছে। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞদের অনুমান, ত্রিদেশীয় সীমান্ত চীনের ঘোষিত ‘সুপার ড্যাম’ নির্মাণ হলে মাবজা জাংবো নদীর গতিপথ এমনভাবেই রুদ্ধ হয়ে যাবে, যা নিম্ন অববাহিকায় এসে বন্যার আকার নেবে। অসমে ব্রহ্মপুত্র যেমন ভয়ংকর হয়ে ওঠে, তেমনই পরিস্থিতি হতে পারে চীন নির্মিত এই বাঁধে জল সংরক্ষণ করা হলে।
অবজার্ভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের বর্ষীয়ান গবেষক সমীর পাতিলের কথায়, এই বাঁধ নির্মাণের পিছনে চীনের দুটি উদ্দেশ্য রয়েছে। প্রথমত নিজেদের পানি সংরক্ষণের জন্য ভারতের পানি সুরক্ষাকে বিঘ্নিত করা। দ্বিতীয়ত দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরও নড়বড়ে করে সীমান্তে কর্তৃত্ব কায়েম।
প্রসঙ্গত, সাম্প্রতিক সময়ে ভারত-চীনের মধ্যে সম্পর্ক চড়াই-উতরাই বেয়ে চলছে। কখনও গালওয়ানে দু দেশের সেনার মধ্যে সংঘর্ষ, কখনও আবার অরুণাচলে একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি – এসবের জেরে প্রতিবেশী দেশকে নজরে রাখছে ভারত। তারই মাঝে উপগ্রহ চিত্রে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার কাছে বাঁধ নির্মাণের বিষয়টি নতুন করে চিন্তা বাড়াল।
বাংলা৭১নিউজ/এসএইচ